Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন, ইভিএম চালুসহ থাকবে ১১ প্রস্তাব

ইসির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপ আজ

তারেক সালমান : | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আ’লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সদস্য ২২ জন : স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েনে আপত্তি নেই আ’লীগের
একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ, পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর ধারাবাহিকতায় আজ সকাল ১১টায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি। ইসির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেবেন আওয়ামী লীগের মোট ২২ জন নেতার একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল। এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচটি ইমাম।
গত রোববার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চলমান সংলাপে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ সুনির্দিষ্ট ১১ দফা প্রস্তাবনা দেবে। এটা গোপন কিছু নয়।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং পদ্ধতি চালুসহ বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ।
সংলাপে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, রাশিদুল আলম, এ্যাম্বাসেডর মো. জমির, ড. মসিউর রহমান, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, কার্যনির্বাহী সদস্য রিয়াজুল কবির কাওছার আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে ইসির সংলাপে অংশ নেবেন। তবে প্রতিনিধি দলের তালিকায় থাকা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে বিদেশে আছেন বলে জানা গেছে। সংলাপে তার অংশগ্রহণের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ১১টি প্রস্তাব তুলে ধরবে। সকল দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে বেশ কিছু প্রস্তাবনাও থাকবে। দলের পক্ষ থেকে যে সকল প্রস্তাব তুলে ধরা হবে তার মধ্যে অন্যতম প্রস্তাব থাকবে সংবিধানে নির্বাচনকালীন যে সরকারের কথা বলা হয়েছে; আওয়ামী লীগ চায় এ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে।
ইভিএম ছাড়াও আওয়ামী লীগের প্রস্তাবনায় সেনা মোতায়েন না করা, আরপিওতে বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন না আনা, একান্ত জরুরি না হলে সীমানা পুনর্বিন্যাস না করা, প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিসহ তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, ভোটার তালিকার ভুলগুলো দূর করার বিষয় বৈঠকে গুরুত্ব দেয়া হবে।
তবে সেনাবাহিনী নিয়ে দলটির বক্তব্য থাকবে, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন সম্পূর্ণ ইসির এখতিয়ার। ইসি প্রয়োজন মনে করলে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন করতে পারে। তবে আরপিওতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষাবাহিনীকে সংযুক্ত করার প্রয়োজন নেই।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপের বিষয়ে জানতে চাইলে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বর্তমান সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। এই সরকারই নির্বাচনকালীন সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এই সরকার রুটিন কাজগুলো করবে। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন
নাসিম বলেন, আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না। সংবিধানের বাইরে যাওয়া মানেই হচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করা। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বিএনপি এটা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করছে।
এছাড়া জোর দাবি না থাকলেও আওয়ামী লীগ ই-ভোটিংয়ের প্রস্তাবনা দিবে বলে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, এই নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সরাসরি অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নেই। তারা রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে থাকতে পারে। নির্বাচন কমিশন যাতে স্বচ্ছ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সেই জন্যও দলের পক্ষ থেকে আরও কিছু প্রস্তাবনা নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরা হবে বলেও জানান তিনি। ই-ভোটিং নিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ চাচ্ছে একটি ডিজিটাল নির্বাচনী ব্যবস্থা চালু করতে। এরই একটি অংশ হচ্ছে নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুরোপুরি ইভিএম চালু করতে না পারলেও অন্তত কিছু কিছু কেন্দ্রে এর ব্যবহার এবং স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে ইভিএমর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা সম্ভব। কমিশনের কাছে এ বিষয়টি তুলে ধরা হবে।
সূত্রে জানা গেছে, দলটির প্রস্তাবনায় আরপিও এর বাংলা সংস্করণে ইসির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এর প্রতি সমর্থন থাকবে। নির্বাচন পরিচালনায় বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মচারীদের নিয়োগ না দিয়ে প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বশীল কর্মচারীদের থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগের সুপারিশ করবে আওয়ামী লীগ।
এছাড়া দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও সতর্কতা অবলম্বনসহ কোনোভাবেই কোনো বিশেষ দল বা ব্যক্তির প্রতি আনুগত্যশীল হিসেবে পরিচিত বা চিহ্নিত ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সংস্থাকে নির্বচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব প্রদান না করা হয় তার প্রস্তাব দেবে দলটি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসি ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ৩১ জুলাই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধি সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি। এরপর ২৪ আগস্ট থেকে কমিশনে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এ পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি।



 

Show all comments
  • রহমত ১৮ অক্টোবর, ২০১৭, ৩:২৪ এএম says : 0
    তারা যা দিবে তাই হবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

১৬ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ