Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কলাপাড়ায় জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত

| প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে এ এম মিজানুর রহমান বুলেট : নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার দুই মাসের মাথায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় লালুয়া ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাবনাবাধ নদীর আস্বাভাবিক জোয়ারের তান্ডবে ৪৭/৫ নং পেল্ডারের বেড়ি বাঁধের ৮ টি পয়েন্ট ভেঙ্গে যায়। এর ফলে ওই ইউনিয়নের তিন হাজার একর ফসলী জমিসহ ঘর-বাড়ি পনির নিচে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুর ও ঘেরের মাছ। পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে ১১ টি গ্রামে দুই হাজার মানুষ। স্থানীয় লোকজনদের আভিযোগ ঠিকাদার বেড়িবাঁধটি নি¤œমানের কাজ করায় এমন দুর্ভোগ হয়েছে।এদিকে উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের চর ধুলাসরের বেড়িবাঁধের একটি পয়েন্টে ভেঙ্গে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গ্রামবাসীসহ জনপ্রতিনিধির আশংকা করেছেন রাতের জোয়ারে বাকি অংশটুকু বিলীন হতে পরে। এছাড়া মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জেয়ায়ারের পানি প্রবেশ করে পাঁচটি গ্রামে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসারের রামনাদ মোহনা কোলঘেষে অবস্থিত লালুয়া ইউনিয়নটি। এলাকার লোকজনের দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য পনি উন্নয়ন বের্ড চলতি অর্থ বছরে জরুরী ভাবে ৭৫ লাখ টাকা ব্যায়ে এ বাঁধটি নির্মাণ করে। কিন্তু দুই মাসের মাথায় রাবনাবাধ নদীর আস্বাভাবিক জোয়ারের তান্ডবে এ বাঁধটি ফের বিধ্বস্ত হয়। এতে ওই ইউনিয়নের পশুরবুনিয়া, চারিপাড়া, নাওয়াপাড়া, গাজীরখাল, মুন্সিপাড়া, বানাতিপাড়া, ১১নং হাওলা, ধঞ্জুপাড়া, ছোট পাচ নং, বড় পাঁচ নং, চৌধুরীপাড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্ধী ওইসব গ্রামের মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। রাস্তাঘাট,বসত বাড়ি ও আবাদি জমি পানিতে একাকার হওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পরেছে। একমাত্র ফসল ধান নির্ভরশীল কৃষকরা ফসল হারানোর ভয়ে এখন শংকিত হয়ে পরেছেন।
বানাতী পাড়া গ্রামে ষাটউর্ধে সশিলা বেগম বলেন, বাবারে রাইতে ঘুমাইতে পারি নাই। নাতি ডারে কোলে লইয়া চকিতে বইয়া রইছি। ঘরের মধ্যে পানি উইড্যা তলাইয়া রইছে। ওই গ্রামের গৃহবধূ রুমা জানায়, সকালে জোয়ারের পানিতে রান্নার চুলা ভাইস্যা গেছে। দুপুরে রান্না হয় নায়। ছেলে মেয়েরা না খেয়ে আছে। বাড়ি থেকে বেড় হওযার কোন উপায় নেই। জোয়ারের পানিতে রাস্তা ঘাট তলিয়ে রয়েছে।
কৃষক বসির গাজী জানান, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে তার ক্ষেতের সকল ফসল এখন পানির নিচে। এমন কি বাড়িও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে রয়েছে। অপর এক কৃষক আবুল বসার জানান, তার ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এমন কথা জানিয়েছেন ওই গ্রামের আরো অনেক বাসিন্দারা।
লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চোয়ারম্যান মীর তারেকুজ্জামান তারা জানান, রাতে রাবনাবাধ নদীর আস্বাভাবিক জোয়ারের তান্ডবে ৪৭/৫ নং পেল্ডারের বেড়িবাঁধের ৮ টি পয়েন্ট ভাঙন দেখা দেয়। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানোর জন্য বারবার ফোন করেছি। কিন্তু তারা ফোন রিসিব করেনি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। তবে এ বাঁধটি ঠিকাদারের নি¤œমানের কাজ করায় এমন দশা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। রাণীশংকৈলে মালদহ-বাঙ্গালির দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত ৫০ আটক ৪
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) উপজেলা সংবাদদাতা : ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে পূর্বের জের ধরে মালদহ এবং বাঙ্গালীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৫০ জন। সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৪কি উত্তর পশ্চিম দিকে ভরনিয়া বাজার নামক স্থানে গতকাল শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহম্মেদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোহাঃ নাহিদ হাসান, অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মান্নান সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
পুলিশ ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, পূর্বের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বাঙ্গালীর লোকজন মালদহ গ্রুপের মধ্যে বেলাল নামক এক যুবককে বেধর মারপিট করে। পরে বাঙ্গালী গ্রুপের লোকজন ভরনিয়া গ্রামে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লোকমান আলী জানান, ভরনিয়া গ্রামে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে শরিফুল এবং ইয়াসিন আলীর ৬টি গরু ও ৬টি ছাগল নিয়ে যায়। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান ও (ওসি) আঃ মান্নান জানান, লুটপাটের ঘটনা শুনেছেন । এসব উদ্ধারের কাজ চলছে এবং আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
সরেজমিনে তদন্ত করে জানা যায়, কুরবানী ঈদের পরের দিন ভরনিয়া বাজারে ডাক্তারের হোটেলের কর্মচারী এবং কাস্টমারের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এনিয়ে ২ মাস পর জেলা পরিষদের সদস্য আবুল কাসেম’র নিকট বিচার প্রার্থী হয়। আবুল কাসেম ঘটনাটি নিরসনের লক্ষ্যে ১৯ অক্টোবর দুপুরে ভরনিয়া হাইস্কুল মাঠে এক শালিশী বৈঠকের আয়োজন করে। বাদী বিবাদীর লোকজন শালিশী বৈঠকে অংশগ্রহণ করে। এসময় বিচারকগণের উপস্থিতিত্বে উভয় পক্ষের কথাবার্তা শুনা হয়। বাদী-বিবাদীর উভয়ের মধ্যে একপর্যায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়, পরে রনক্ষেত্রে পরিনত হয়। খবর পেয়ে আইন শৃংখলা বাহিনী ঘটনা স্থলে গিয়ে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এতে আহত হয় প্রায় ৫০ জন। তাদের মধ্যে মন্টু(৫০), কামাল (২৫), ইউসুফ (৪০) সহ ৭ জন গরুতর আহত অবস্থায় রাণীশংকৈল হাসপাতালে ভর্তি হয়। এনিয়ে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে বলে জানা যায়।
পুলিশ ও বিচারক জেলা পরিষদের সদস্য আবুল কাসেম জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শালিসী বৈঠকে উভয়ের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং সংঘর্ষে আহত হয় প্রায় ৫০জন। তবে এপর্যন্ত থানায় কেউ মামলা রুজু করেনি । থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আঃ মান্নান জানান, ২দিন যাবৎ উভয়’র মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। পরের দিন শুক্রবার সংঘর্ষ হলে ঘটনা স্থলে অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ