Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভয়ঙ্কর বার্সায় বিধ্বস্ত আর্সেনাল

প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : ক্যাম্প ন্যুতে প্রায় অসম্ভব কাজটা করতে পারেনি আর্সেনাল। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দলটিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে বার্সেলোনা। গোল পেয়েছেন ‘এমএসএন’ ত্রয়ীর প্রত্যেকেই। আর্সেনালের গোলটি মিশরের মিডফিল্ডার মোহামেদ এলনেনির। প্রথম লেগে এমিরেটস স্টেডিয়ামে ২-০ গোলে জিতেছিল লুইস এনরিকের দল। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানে জিতল তারা।
গেল পরশু রাতে প্রথম লেগের ব্যবধান ঘোচানোর জন্য প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক খেলে আর্সেনাল। তবে ম্যাচর ১৮তম মিনিটে নেইমারের গোলে কাজটা আরও কঠিন হয়ে যায় আর্সেন ভেঙ্গারের শিষ্যদের জন্য। লুইস সুয়ারেজের দারুণভাবে বাড়ানো বল ডি-বক্সে ধরে গোলরক্ষককে ফাঁকি দেন ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড নেইমার। ৩০তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন নেইমার। তবে তার জোরালো শট ঠেকান গোলরক্ষক। ৪০তম মিনিটে আর্সেনালের আলেক্সিস সানচেসের হেড একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। পুরো ম্যাচেই আলো ছড়ান বার্সেলোনার সাবেক এই ফরোয়ার্ড।
বিরতির পর ষষ্ঠ মিনিটে দুর্দান্ত গোলে সমতা ফেরান এলনেনি। ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে জোরাল শটে বল জালে পাঠিয়ে দেন মিশরের এই মিডফিল্ডার। সমতা ফেরানোর পরও পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য দুই গোল দরকার ছিল আর্সেনালের। কিন্তু দলটির ক্ষীণ সম্ভাবনাটুকুও শেষ করে দেন সুয়ারেজ। ৬৫তম মিনিটে দানি আলভেসের ক্রসে সিজার কিকে গোল করেন উরুগুয়ের এই ফরোয়ার্ড। আর্সেনাল অবশ্য হাল না ছেড়ে একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকে। তবে ড্যানি ওয়েলবেকের শট পোস্টে লাগার পর সানচেসের ফ্রি-কিক টের স্টেগেন ফিরিয়ে দিলে হতাশ হতে হয় কাম্প নউতে যাওয়া ৫ হাজার আর্সেনাল সমর্থককে। বাকি ছিল কেবল মেসির গোল। নির্ধারিত সময়ের দুই মিনিট আগে ম্যাচের সবচেয়ে দর্শনীয় গোলটি। ডি-বক্সে দুই ডিফেন্ডারের মাঝে থেকেও দুর্দান্ত টোকায় আগুয়ান গোলরক্ষক দাভিদ অসপিনার মাথার উপর দিয়ে বল জালে পাঠান আর্জেন্টিনার অধিনায়ক।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে বার্সেলোনার সঙ্গে আছে বায়ার্ন মিউনিখ, রিয়াল মাদ্রিদ, অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ, পিএসজি, ম্যানচেস্টার সিটি, উল্ফসবুর্গ ও বেনফিকা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ড্র হবে আগামী শুক্রবার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা ধরে রাখার পথে অদম্যভাবে এগিয়ে চলা বার্সেলোনার কোচ কোয়ার্টার-ফাইনালে কোনো দলের মুখোমুখি হতেই ভয় পাচ্ছেন না। লুইস এনরিকের কাছে তার ক্লাবই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দল। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকা বার্সেলোনা কোচ এনরিকে মজা করে বলেন, ‘আমি যে একটি দলের মুখোমুখি হতে চাইব না, সেটা বার্সেলোনা। কিন্তু আমি তাদের মুখোমুখি হতে পারি না। তাই আমি এটা নিয়ে শান্তিতে আছি।’ বার্সেলোনার অদম্য গতিতে এগিয়ে চলার রহস্যের কথাও জানান এনরিকে, ‘স্পষ্টতই আমাদের অনন্য সব খেলোয়াড় আছে। কিন্তু সব শেষে এই দল নিয়ে দারুণ বিষয় হচ্ছে, আক্রমণ আর রক্ষণে তারা দলগতভাবে কাজ করে।’ আর্সেনালের বিপক্ষে বার্সেলোনার তিন জয়ের নায়ক ‘এমএসএন’র কথা আলাদা করেই বললেন এনরিকে, ‘আমি আনন্দিত যে মেসি, সুয়ারেস আর নেইমার আমাদের ফরোয়ার্ড।’
শুধু বার্সা কোচ কেন, দলের গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেনও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন মেসিকে। পাঁচ বারের বর্ষসেরা এই খেলোয়াড় যে কোনো গোলরক্ষকের জন্যই বিপজ্জনক বলে মনে করেন বার্সেলোনার গোলরক্ষক, ‘সে (মেসি) সব সবময়ই যে কোনো গোলরক্ষকের জন্যই বিপজ্জনক। সে অসাধারণ। কারণ, সে যেখান থেকে আর যেভাবেই চাক, সেভাবেই শট নিতে পারে।’
আর্জেন্টিনার তারকা ফরোয়ার্ডকে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় দাবি করে বার্সেলোনা গোলরক্ষক বলেন, ‘সে যা করে, তা আর কেউ করতে পারে না।’ চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার হয়ে ৩৭ গোল করেছেন মেসি।
মেসি ছাড়াও আর্সেনালের বিপক্ষে লুইস সুয়ারেজের অসাধারণ গোলেও মুগ্ধ অনেকেই। আর গোলটি নিয়ে নিজেই বিস্মিত বার্সেলোনার এই ফরোয়ার্ড। ম্যাচ শেষে বিন স্পোর্টসকে উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার বলেন, ‘কিভাবে বলটি মেরেছিলাম তা আমি জানি না। তবে গোল হয়ে গেছে।’ দলের পারফরম্যান্সে খুশি হওয়ার কথা জানান সুয়ারেস, ‘আমরা নিখুঁত একটি ম্যাচ খেলেছি। ১-১ গোলে সমতা এনে তারা ম্যাচটি জটিল করে দিয়েছিল। শেষে প্রমাণ করেছি, আমরা শক্তিশালী।’
একই রাতে উত্তেজনায় ঠাসা, নাটকীয়তায় ভরা ২১০ মিনিটের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হাসলো বায়ার্ন মিউনিখ। দুই লেগের সমানে সমান লড়াই শেষে অতিরিক্ত সময়ের গোলে জুভেন্টাসকে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে পেপ গার্দিওলার ক্লাবটি। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় অর্ধে দুই মিনিটের ব্যবধানে চিয়াগো আলকান্তারা ও কোমান লক্ষ্যভেদ করলে ৪-২ গোলের জয়ে শেষ আটের টিকিট নিশ্চিত হয়ে যায় বায়ার্নের। আলভারো মোরাতা ও পল পগবার নৈপুণ্যে গেলপরশু রাতে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় প্রায় জিতেই গিয়েছিল জুভেন্টাস। কিন্তু দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে লড়াইটাকে অতিরিক্ত সময়ে টেনে নেয় স্বাগতিকরা। আর সে পর্বেই পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের এই অসাধারণ জয়। গোল না পেলেও দলকে এগিয়ে নেয়া পগবা ও হুয়ান কুয়াদরাদোর গোলে দারুণ অবদান রাখেন মোরাতা। নির্ধারিত সময়ে বায়ার্নকে সমতায় ফেরানো গোল দুটি করেন রবের্ত লেভানদোভস্কি ও টমাস মুলার। প্রথম পর্বে ঘরের মাঠে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে কোণঠাসা হয়ে পড়া জুভেন্টস শেষ ৩০ মিনিটে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২-২ গোলে ড্র করেছিল। দারুণ এই জয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৪ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শেষ আটে উঠল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভয়ঙ্কর বার্সায় বিধ্বস্ত আর্সেনাল
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ