Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাতক্ষীরায় পাঁচটি হিমাগারে দেড় লাখ টন আলু মজুত : ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

| প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাতক্ষীরা থেকে আক্তারুজ্জামান বাচ্চু : বাজারে আলুর মূল্য কম থাকায় চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন সাতক্ষীরার আলু মজুতকারী ব্যবসায়ীরা। হিমাগার ভাড়া দিয়ে প্রতি কেজি আলু ক্রয় মূল্য পড়েছে সাড়ে ১৭ থেকে ১৮ টাকা। আর বাজারে আলু পাইকারি দর যাচ্ছে ১২ থেকে ১৩ টাকা। ফলে প্রতি বস্তায় কমপক্ষে ৪০০ টাকার অধিক লোকসান গুনতে হচ্ছে মৌসুমী আলু ব্যবসায়ীদের। প্রতি ট্রাকে কমপক্ষে এক লাখ ১০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। ফলে মাথায় হাত উঠেছে আলু মজুত ব্যবসায়ীদের। এদিকে, গত বছরের তুলনায় এবার আলুর দাম কম থাকায় ক্রেতারা রয়েছেন খুশিতে।
সাতক্ষীরার অন্যতম মজুত আলু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাতক্ষীরা আইস অ্যান্ড কোল্ড-স্টোরেজের মালিক শেখ মহসিন আলী জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৫০ হাজার বস্তা কাঠিলাল ও ডায়মন্ড জাতের গোল আলু ক্রয় করে তার নিজস্ব হিমাগারে মজুত রেখেছিলেন। তিনি বলেন, হিমাগারের খরচ দিয়ে প্রতি বস্তা আলুতে তার ক্রয় মুল্য পড়েছে এক হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু বাজারে এখন আলুর দাম পাওয়া যাচ্ছে পাইকারি প্রতি বস্তা এক হাজার ৫০ টাকা থেকে হাজার ৯০ টাকা। ফলে প্রতি বস্তায় ৪০০ টাকার উপরে লোকসান যাচ্ছে বলে জানান তিনি। তার আশঙ্কা এই দাম যদি বাজারে অব্যাহত থাকে তাহলে ৫০ হাজার বস্তা আলুতে তার কমপক্ষে দুই কোটি টাকা লোকসান যাবে। এই লোকসানের কারণ হিসেবে তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরাতে চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণ আলু মজুত করার পাশাপাশি দেশের বাইরে রফতানি না হওয়া। তিনি বলেন, সাতক্ষীরা জেলাতে বছরে সর্বোচ্চ এক লাখ টন আলুর চাহিদা রয়েছে। সেখানে জেলার পাঁচটি হিমাগারে দুই লাখ টনের উপরে আলু মজুত রয়েছে।
মজুতকৃত আলুর এ পর্যন্ত মাত্র ২৫ শতাংশ বাজারে বিক্রি হয়েছে। সাতক্ষীরা শহরের আরো এক আলু ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম জানান, প্রতি বছরের ন্যায় চলতি মৌসুমে ১২ ট্রাক ডায়মন্ড জাতের গোল আলু ক্রয় করে স্থানীয় সংগ্রাম কোল্ড-স্টোরেজে মজুত রাখেন তিনি। হিমাগার ভাড়া দিয়ে প্রতি কেজি আলুর ক্রয় মূল্য পড়েছে প্রায় ১৮ টাকা। তিনি আরো বলেন, টানা সাত মাস হিমাগারে সংরক্ষণ করার পর বাজারে তুলে দাম পাওয়া যাচ্ছে ১২ থেকে ১৩ টাকা প্রতি কেজি। ফলে গেলো সপ্তাহে এক ট্রাক আলু বিক্রি করে এক লাখ টাকা লোকসান হয়েছে তার। যে কারণে বাকি আলু হিমাগারেই রেখে দিয়েছেন বাজারে বেশি দাম পাওয়ার আশায়। আলু ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম আরো জানান, আগামীতে বাজারে যদি ভালো বা বেশি দাম না পাওয়া যায়, তাহলে ১২ ট্রাক আলুতে তার অন্তত ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকা লোকসান হবে।
সাতক্ষীরার মেসার্স আল্লার দান এর প্রোপাইটর জবেদ আলী জানান, গত বছর এ সময় বাজারে আলুর পাইকারি দর ছিল ১৮ থেকে ১৯ টাকা। খুচরা মূল্য ছিল ২০ টাকার উপরে। তিনি বলেন, এ বছর আলুর ব্যবসা ভালো নয়। বহু মজুতদার ব্যবসায়ী লোকসান গুনছেন। তবে, কম দামে আলু কিনতে পারায় ক্রেতারা খুশি রয়েছেন।
অপরদিকে, গতকাল মঙ্গলবার সাতক্ষীরা জেলা শহরের সুলতানপুর বড়বাজার, কাটিয়া টাউন বাজার, ইটাগাছা বাজার, কাটিয়া মিলবাজার ও পুরোনো সাতক্ষীরার বাজারে গোল আলু খুচরা বিক্রি হয়েছে কাঠিলাল ১৩ এবং ডায়মন্ড ১৪ টাকা দরে। সুলতানপুর বড়বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রওশন আলী জানান, বাজারে প্রতিদিন প্রচুর গোল আলু আসছে। কিন্তু সে অনুপাতে চাহিদা নেই। ফলে অবিক্রি রয়ে যাচ্ছে শত শত মন আলু। এতে পাইকার ও মজুতদার উভয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যবসায়ী


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ