Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যু

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

৩ ঘণ্টা কার্যক্রম বন্ধ
রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বজনেরা গতকাল রোববার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন চিকিৎসকেরা। পরে তিন ঘণ্টা পর বিকেল ৫টার দিকে ওই বিভাগ খুলে দেয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল সূত্রগুলো জানায়, গত শনিবার রাতে পুরান ঢাকা থেকে নওশাদ আহমেদ নামের এক ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসেন। তাকে হাসপাতালের ভবন ২-এ নেয়া হয়। পরে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। পরে গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নওশাদ মারা যান। এরপর তার স্বজনেরা ভবনটির তৃতীয় তলায় সিসিইউতে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সদের ওপর চড়াও হন। তারা চিকিৎসকদের মারধর করেন। নার্সদেরও মারার জন্য তেড়ে যান। তারা হাসপাতালের ওষুধ ও সরঞ্জাম রাখার ট্রলি উল্টিয়ে ফেলে দেন। একপর্যায়ে আনসার সদস্যরা ছুটে গেলে মৃতের স্বজনেরা তাদের ওপরও চড়াও হন। এই হামলায় চার চিকিৎসক ও আনসারের তিনজন সদস্য আহত হন। এক চিকিৎসকের হাত ভেঙে যায়। পরে চিকিৎসকেরা ছুটে আসেন এবং হাসপাতালের সব ক’টি ভবনের ফটক বন্ধ করে দেন। পরে অন্য ফটকগুলো খুলে দেয়া হলেও জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে জরুরি বিভাগ খুলে দেয়া হয়। গতকাল বিকেলে হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, রোগীর স্বজনেরা বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা: মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের লোক বলে নিজেদের পরিচয় দেন। মৃত নওশাদের বাড়ি লালবাগের খাজে দেওয়ান এলাকায়। তার লাশ এখনো সিসিইউতে আছে। মৃত্যু সনদ এখনো কোনো চিকিৎসক লিখে দেননি। খবর পেয়ে বিএমএর সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বিকেলে হাসপাতালে যান। বিকেলে হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। পরে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনাকে কোনোভাবেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। তিন দিন আগে ওই রোগীর হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। তিন দিন অন্য হাসপাতালে থাকার পর গত শনিবার রাতে ওই রোগীকে এখানে আনা হয়। হাসপাতালের সবচেয়ে দক্ষ চিকিৎসকেরা তাকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি। এটা বুঝতে হবে যে, সবকিছু চিকিৎসকদের হাতে থাকে না। দেখার বিষয় হলো, চিকিৎসকেরা কোনো অবহেলা করেছেন কি না। হাসপাতালের পরিচালক আরো বলেন, ওই রোগীর স্বজনেরা চারজন চিকিৎসক ও তিনজন আনসার সদস্যকে আহত করেছেন। হামলায় এক চিকিৎসকের হাত ভেঙে গেছে। জরুরি বিভাগ বন্ধ রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন একটা কমিউনিটির ওপর হামলা হয়, তখন তারা ক্ষুব্ধ হতেই পারেন। সর্বোচ্চ এক-দেড় ঘণ্টা জরুরি বিভাগ বন্ধ ছিল। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা যদি দিতে না পারি, তবে তারা চিকিৎসা দেবেন কিভাবে। শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে। তারা দু’জন ওই মৃত ব্যক্তির ভাই। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ