Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

যুক্তরাষ্ট্র-চীন ২৫ হাজার কোটি ডলারের চুক্তি

চীন চাইলে উ. কোরিয়া সমস্যার দ্রুত ও সহজ সমাধান করতে পারে : ট্রাম্প

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চীন ও যুক্তরাষ্ট্র ২৫ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দিয়েছে। চীনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় সফরকালে গতকাল বৃহস্পতিবার এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী চীন থেকে কয়েক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সয়াবিন ও আকাশযান আমদানি করবে যুক্তরাষ্ট্র। আর আলাস্কা থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস চীনে রপ্তানী করা হবে। এছাড়া উভয় দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি ছোট ছোট চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্বীকার করেছেন, দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের মধ্যে কিছুটা ‘মতপার্থক্য’ রয়েছে। তিনি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে অধিক সংখ্যক মার্কিন কোম্পানিকে যোগ দেয়ার আহŸান জানান। এটি একটি ব্যাপক বৈশ্বিক বাণিজ্যিক অবকাঠামো কর্মসূচি। শি বলেন, ‘দরোজা উন্মুক্ত রাখাই আমাদের দীর্ঘ মেয়াদী কৌশল। আমরা এই দরজা সঙ্কুচিত বা বন্ধ করব না। বরং একে আরো প্রশস্ত থেকে প্রশস্ততর করব।’ স্টেট অব আলাস্কা, আলাস্কা গ্যাসলাইন ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন, চায়না পেট্রোকেমিক্যাল কর্পোরেশন, চায়না ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন ও ব্যাংক অব চায়নার মধ্যকার এই চুক্তিতে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কর্মকর্তারা জানান, এই যৌথ উন্নয়ন চুক্তির মাধ্যমে আমেরিকায় ১২ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ার মধ্যে বার্ষিক যে ১০ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্যিক ঘাটতি রয়েছে তা কমে আসবে। বিবিসি জানিয়েছে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে হাজার কোটি ডলার বাণিজ্য ঘাটতির জন্য বেইজিংকে দায়ী করে আসলেও এশিয়া সফরে এসে সুর বদলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে প্রদত্ত এক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাণিজ্য ঘাটতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বেকার প্রশাসনগুলোকে দায়ী করেছেন; ওয়াশিংটনের কাছ থেকে সুবিধা নেয়ায় চীনকে দোষ দেয়া যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে চীনের প্রেসিডেন্টকে ‘আরও কিছু’ করারও অনুরোধ করেছেন তিনি। এশিয়া সফরের মাঝামাঝি গত বুধবার চীন পৌঁছান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বেইজিংয়ে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়; পতাকা উড়িয়ে শিশুরা ট্রাম্প ও তার স্ত্রী মেলানিয়াকে স্বাগত জানায়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে ওই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়া ও বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে কথা বলেন তিনি। বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, চীন চাইলে উত্তর কোরিয়া সমস্যার দ্রæত ও সহজ সমাধান করতে পারে। এই বিষয়ে বেইজিং সাধ্য অনুযায়ী সব করছে বলে দাবি করে আসলেও ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্টকে ‘আরও বেশি কিছু’ করার অনুরোধ জানান। আমি তাকে (শি) আরও কাজ করতে বলবো। আমি আপনাদের প্রেসিডেন্ট সম্বন্ধে একটা বিষয় জানি, তা হলো- উনি যদি কোনো কাজ ধরেন, তাহলে তা হয়ে যায়। বক্তব্যে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য কমিয়ে আনায় শি জিনপিংকে বেশ কয়েকবার ধন্যবাদ জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। প্রত্যুত্তরে শি বলেন, কোরীয় উপদ্বীপের শান্তি বজায় রাখতে জাতিসংঘের অবরোধ পূর্ণ কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একসঙ্গে কাজ করবে। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘অন্যায্য ও একপাক্ষিক’ বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প। এজন্য আগের মার্কিন প্রশাসনগুলোকেই দায় দেন তিনি। আমি চীনকে দায়ী করছি না। কেইবা একটি দেশকে তার দেশের জনগণের সুবিধার জন্য অন্য দেশের কাছ থেকে সুবিধা নেয়ায় দায়ী করবে। আমি চীনকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। অথচ নির্বাচনী প্রচারণা ও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্প বাণিজ্য ঘাটতির জন্য চীনকে দায়ী করেছেন। গত বছর ট্রাম্প এ বিষয়ে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যও করেছিলেন। চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি সহ্য করা হবেনা বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। চীনে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোয় শি জিনপিংয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এএফপি, সিএনএন, সিনহুয়া, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ