Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সংবিধান অনুযায়ী আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাই প্রধান বিচারপতি : আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সংবিধান অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাই এখন প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক। গতকাল শনিবার বিকালে গুলশানে তার নিজ বাসায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
প্রধান বিচারপতির পদত্যাগে কোনো শুন্যতা সৃষ্টি হয়নি বলেও মন্তব্য করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাই দায়িত্ব পালন করে যাবেন। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত দায়িত্বে আছেন অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা। প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার পরও যতক্ষণ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নতুন একজনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ না দিচ্ছেন, ৯৭ অনুচ্ছেদ বলে ততক্ষণ পর্যন্ত অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি থাকবেন মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা।
আইনমন্ত্রী বলেন, পদ যদি শুন্যও হয়ে থাকে, প্রেসিডেন্ট সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষমতা যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রয়োগ করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কাজ হবে, কোনো শুন্যতার সৃষ্টি হয়নি।
পদত্যাগী প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
এর আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে পৌঁছে। শনিবার দুপুরে প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগ চেয়ে এসকে সিনহার আবেদনটি প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে পৌঁছেছে। সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে এ আবেদনপত্রটি এসেছে।
প্রধান বিচারপতির পদত্যাগে গোটা জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতিকে ছুটি নিতে সরকার বাধ্য করেছে। এতে করে বিচারবিভাগের যেটুকু স্বাধীনতা ছিল সেটাও এ সরকার নস্যাৎ করেছে।
এরই জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধান বিচারপতির পদত্যাগে কোনো শুন্যতা সৃষ্টি হয়নি। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান, তারা হয়ত এসব কথা বলেন। আমি তাদেরকে শুধু বলব- পানি অত্যন্ত স্বচ্ছ। সেখানে মাছ শিকার করার কোনো উপায় নেই।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পূর্ণাঙ্গ রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে গত ৩ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসের ছুটি নেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির দাবি, প্রধান বিচারপতিকে জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
এস কে সিনহা ছুটি নেয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পান আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। পরে প্রধান বিচারপতি সিনহা ১৩ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বিদেশে অবস্থান করতে চান- বিষয়টি উল্লেখ করে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১০ অক্টোবর প্রেসিডেন্টের কাছে একটি চিঠি পাঠান।
১২ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ২ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ে বা তার কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহহাব মিঞা।
বিদেশে যাওয়ার সময় এক বিবৃতিতে এসকে সিনহা নিজেকে সম্পূর্ণ সুস্থ দাবি করে বলেন, প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করলে এটি সহজেই অনুমেয় যে, সরকার উচ্চ আদালতে হস্তক্ষেপ করছে এবং এর দ্বারা বিচার বিভাগ ও সরকারের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হবে। এটি রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইনমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ