একই রঙের পাঞ্জাবি পরে ‘পাঞ্জাবি’ প্রতীকে ভোট চাওয়ার অভিযোগ

টাঙ্গাইলের সখিপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া
রাজৈর(মাদারীপুর)উপজেলা সংবাদদাতা : যে হাত দিয়ে খাতা-কলম ধরে লেখাপড়া করতো প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বেলাল, একজন হাতুড়ে ডাক্তারের কথিত চিকিৎসায় তার সেই হাতটি কেটে ফেলতে হবে! অথচ বেলালের দিনমজুর বাবা আনিসুর রহমান ও চাতাল শ্রমিক মা লিলি বেগম-এর এমন আর্থিক সামর্থ্য নেই যে হাসপাতালে নিয়ে হাত কেটে ফেলার সেই খরচও জোগাড় করবেন। এই অসহায় শিশুটির বর্তমান আবাস মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দর সংলগ্ন তাঁতিকান্দা গ্রামের একটি ধানের চাতালে। এই পরিবারের স্থায়ী ঠিকানা বরগুনা জেলার বেতাগী থানার দক্ষিণ ছোপখালী গ্রামে।
এদিকে এই ঘটনায় জড়িত কথিত চিকিৎসক তপন দে’র বিরুদ্ধে গত ১২ নভেম্বর রাজৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তপন দে রাজৈর উপজেলার খালিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের জুরান দে’র ছেলে। তপন দে দীর্ঘদিন ধরে টেকেরহাট বন্দরে ‘এলএমএএফপি এবং মা ও শিশুর জটিল ও পুরাতন রোগে অভিজ্ঞ’ পরিচয় দিয়ে চেম্বার পরিচালনা করে আসছেন। হাস্যকর একটি বিষয় হলো তার চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র বা প্যাডে তার নাম লেখা রয়েছে ‘তপন ডাক্তার’! এছাড়া ‘জটিল রোগের’ স্থানে ভুল বানানে লেখা রয়েছে ‘জলিট রোগের’। রাজৈর থানার মামলা ও ভুক্তভোগী বিল্লালের পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ জুন বিকেলে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র দশ বছর বয়সী বিল্লাল চাতালের পাশের সমবয়সীদের সাথে খেলাধূলার সময় পরে গিয়ে ডান হাত ভেঙে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে টেকেরহাট জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন তপন ডাক্তার-এর চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর কথিত ডাক্তার তপন নিজেকে হাড়জোড়া বিশেষজ্ঞ দািব করে ৫ হাজার টাকা চুক্তিতে চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে ব্যাÐেজ করে দেয়। পরিবারের লোকজন এক্স-রে করার অনুরোধ করলে তিনি বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, আমার কোন এক্সরে লাগে না’। দুই দিন পর বিল্লালের ব্যাথা বেড়ে গেলে তাকে আবারও কথিত ডাক্তার তপন-এর চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তিনি বিভিন্ন ধরনের খাবার এক মাসের ওষুধ লিখে দেন। কিন্তু এক মাসেও বিল্লালের অবস্থা ভালো না হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান যে, ভুল চিকিৎসার কারণে বিল্লালের ডান হাত কেটে ফেলতে হবে। বিল্লালের বাবা সিদ্দিকুর রহমান জানান, বরিশাল ও ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে বিল্লালের হাত কেটে ফেলতে হবে এই সিদ্ধান্তই জানান চিকিৎসকরা। আমি রাজমিস্ত্রীর জোগালির কাজ করি, আমার স্ত্রী ধানের চাতালের শ্রমিক। আমাদের এমন অবস্থা নেই যে আমার ছেলের চিকিৎসা করাবো। আমি যে মামলা করেছি, তা পরিচালনারও অবস্থাও আমার নেই। সরকারি লিগাল এইডে মামলা চালানোর আবেদন করেছি। বিল্লালের কাছে জানতে চাইলে সে জানায়, হাত ভাঙ্গার পর আর ঠিক না হওয়ায় এখন আর সে স্কুলে যায় না। তার লেখাপড়া বন্ধ। মাদারীপুরের রাজৈর থানার ওসি জিয়াউল মোর্শেদ জানান, শিশু বিল্লালের হাত ভাঙ্গা চিকিৎসা সংক্রান্ত মামলায় পেনাল কোডের ৪১৯ ও ৪২০ ধারাসহ বাংলাদেশ মেডিকেল এÐ ডেন্টাল কাউন্সিল এ্যাক্ট-২০১০ এর ধারায় মামলা হয়েছে। এই মামলার পর রাজৈর থানা পুলিশ তপন দে’কে আটক করে। এরপর তাকে মাদারীপুর আদালতে পাঠানো হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে মামলাটির তদন্ত চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।