Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গুলিস্তানে শিক্ষার্থী ও ধানমন্ডিতে শিশু গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে এক শিশু গৃহকর্মী ও গুলিস্তানে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিকে ধানমন্ডি থেকে উদ্ধারকৃত গৃহকর্মী ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার কথা বলা হলেও নিহতের পরিবার হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছে।
জানা যায়, রাজধানীর ধানমন্ডি ১২ নম্বর রোডের একটি বাসায় মনি (১২) নামের এক শিশু গৃহকর্মী লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেছে তার নিয়োগকারী পরিবার। তবে নিহত শিশু গৃহকর্মীর পরিবারের দাবি, তাকে ওই বাসার লোকজন হত্যা করেছে। নিহত মনি নেত্রকোনা সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের আহমেদ মিয়ার মেয়ে। সে ধানমন্ডি ১২ নম্বর রোডের ১০/১ নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলায় গৃহকর্তা জসিম উদ্দিনের বাসায় কাজ করতো। ওই বাড়ির কেয়ারটেকার আরিফ হোসেন জানায়, মনি উক্ত ভবনের ৪ তলায় গৃহকর্তা জসিম উদ্দিনের বাসায় ১ বছর ধরে কাজ করতো। গত রোববার বিকেল ৫টার দিকে মনি গলায় ফাঁস দেয়। পরে তাকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। খবর পেয়ে পুলিশ গত রোববার রাতেই হাসপাতাল থেকে মনির লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল সোমবার দুপুরে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে মেয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় ছুটে আসে মৃত শিশু মনির পরিবার। ঢামেক হাসপাতালের মর্গের সামনে মৃত মনির মা চায়না আক্তার বলেন, তার মেয়েকে ওই বাসার লোকেরা হত্যা করেছে। এতটুকু মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি জানান, ঢাকায় তাদের বেশ কয়েক জন আত্মীয় জসিম সাহেবের পরিচিতদের বাসায় কাজ করে। জসিম সাহেবের লোকজন তাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে। মনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এমন কথা শিখিয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের। তিনি তার মেয়ের হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানান। ধানমন্ডি থানার ওসি মো. আবদুল লতিফ জানান, মৃত শিশু মনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক জসিম উদ্দিনের বাসায় গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করতো। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মনির মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। ঢামেক হাসপাতালে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ মৃত শিশুর ময়নাতদন্তের ব্যাপারে সাংবাদিকদের জানান, মনির ডান হাতে আঘাতের চিহ্ন আছে। এছাড়া মাথাতেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পাশাপাশি গলায় দাগও পাওয়া গেছে। তিনি জানান মৃত মনির গলা থেকে টিস্যু, ভিসেরা ও মৃত্যুর পূর্বে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এই সংগ্রহকৃত নমুনাগুলো পরীক্ষায় জন্য পাঠানো হবে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
অপরদিকে, রাজধানীর গুলিস্তানের একটি মাদ্রাসা থেকে আব্দুর রহমান জিদান (১১) নামে এক ছাত্রের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার ভোরে ওই এলাকার মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া নামে একটি মাদ্রাসা থেকে ওই ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়। জিদান ওই মাদ্রাসার হাফিজি বিভাগের ছাত্র এবং ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার হাফিজ উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার পর মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গেছে নিহতের সহপাঠী আবু বকর (১৬)। পল্টন থানার এসআই রেজাউল আলম জানান, ভোরে মাদ্র্রাসার শিক্ষকদের খবরের ভিত্তিতে ওই ছাত্রের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে মাদ্রাসার ভেতরেই তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় আঘাত করে রেখে গেছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রæত শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। পল্টন থানার ওসি মো. মাহামুদুল হক ছাত্র-শিক্ষকদের বরাত দিয়ে জানান, আবু বক্কর ও জিদান মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে দ্বন্ধ চলছিলো। শিক্ষকরা সেটার মীমাংসা করে দেন। কিন্তু মীমাংসায় আবু বক্কর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর ঘুমন্ত অবস্থায় জিদানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। পলাতক ছাত্র আবু বক্করকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের পরে হত্যাকান্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান ওসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ