Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মাদারীপুরে টাকার বিনিময়ে সিম নিবন্ধন

প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা ঃ ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের নির্দেশ উপেক্ষা করে টাকার বিনিময়ে মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিমকার্ড নিবন্ধন করা হচ্ছে। টাকা না দিলে সিমকার্ড নিবন্ধন না করে গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে রিটেইলারদের দোকান থেকে। ফলে বিপাকে পড়েছেন মোবাইল ব্যবহারকারীরা। অথচ, প্রতিমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিমকার্ড নিবন্ধন-পুনঃনিবন্ধনে কেউ অর্থ নিলে কালো তালিকা করে তাদের রিটেইলারশিপ বাতিল করা হবে।
মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও গ্রাম, বাসষ্ট্যান্ডের রিটেইলারদের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, সিমকার্ড নিবন্ধন করতে ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। সরকারী আদেশ না মেনেই বিভিন্ন ভাবে টাকা আদায় করে নিচ্ছে, সাথে নানা রকম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিভিন্ন অপারেটরের গ্রাহকরা। কিছু কিছু রিটেইলার (দোকানদার) টাকা-পয়সা না নিলেও ঝামেলা এড়াতে সময়ের অজুহাত দেখিয়ে সিমকার্ড নিবন্ধনে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। গ্রামগঞ্জের বেশীর ভাগ গ্রাহক সিমকার্ড নিবন্ধন করতে টাকা লাগে কি লাগে না তাও জানে না তারা। তাই এ সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে রিটেইলাররা।
ডাসার থানার পশ্চিম মাইজপাড়া রুবেল টেলিকমের রিটেইলার জলিল বলেন, ‘আমি বায়োমেট্রিক পদ্ধত্বিতে সিমকার্ড নিবন্ধন করতে কোন টাকা নেই না। তবে আমার বন্ধুরা আমাকে জানিয়েছে অনেক স্থানে নিবন্ধন করতে টাকা দিতে হয়। তা না হলে নিবন্ধন করে দেয় না। তবে আমার একটা দাবি রিটেইলারদের কমিশনটা যদি একটু বাড়ানো হয়, তাহলে আমার মনে হয় এই সমস্যা থাকবে না’।
মাদারীপুর সদর উপজেলার তালতলা এলাকায় ইব্রাহিম টেলিকমের মালিক সিমকার্ড নিবন্ধন করতে ২০ টাকা করে নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, “যে আমিতো কারো কাছ থেকে চেয়ে নেই না। তারা খুশি হয়ে দেয়। গ্রামীণফোন কোন কমিশন দেয় না। আমি জানি টাকা নেওয়া অপরাধ। তারপরও আমার সব কাজ ফেলে রেখে গ্রাহকের কাজ করে দেই তাই আমি টাকা নেই”। তালতলা বাজারে বাংলালিংকের অস্থায়ী ভাবে দোকান বসিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধত্বিতে সিমকার্ড নিবন্ধন করতে টাকা নিতে দেখা গেছে। তবে সাংবাদিক দেখেই টাকা নেওয়া বন্ধ করে দেয়। এদিকে কুনিয়া বাজারে ও কুনিয়া হাটে সাংবাদিকদের যাওয়ার খবর পেয়ে দোকান বন্ধ করে চলে যায়। সেখানে নিবন্ধন করতে আসা গ্রামীণ ফোনের এক গ্রাহক বলেন, ‘আমি কুনিয়া হাটে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে এসেছি। আমার কাছে ৩০ টাকা চাইছে। আমি দিতে না চাওয়ায় আমারটা করে দেয় নাই’। তবে দ‘ুদিন পর আবার হাতে নাতে ধরা পরে তারা সিমকার্ড নিবন্ধন করতে টাকা নিচ্ছে। গ্রামীণ ফোনের এক সেলস এক্সিকিউটিভ মিরাজুল কালকিনির এলাকায় কাজ করে। তার ভাইকে দিয়ে ২০/৩০ টাকার বিনিময় কুনিয়া বাজারে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিমকার্ড নিবন্ধন করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ঘটকচর বাজারে কাজী টেলিকম যেখানে বাংলালিংক সার্ভিস পয়েন্ট রয়েছে সেখানে টাকার বিনিময় সিমকার্ড নিবন্ধন করা হচ্ছে। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে এবং গ্রাহকদের সাথে দুর্ব্যবহার ব্যবহার শুরু করে। গ্রামীণফোনের মাদারীপুরের টেরিটর ম্যানেজার (টিএম) রাজিব হাজরা মোবাইলে ফোনে বলেন, ‘টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। যারা নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। বাংলালিংকের মাদারীপুরের জোনাল সার্ভিস ম্যানেজার (জেডএসএম) সাংবাদিকদের সামনে কথা বলতে চাননি। বাংলালিংকের সিনিয়র সেলস সুপারভাইজার মো. আরিফুর রহমান জানান, সিমকার্ড নিবন্ধন করতে কোন টাকা লাগে না। কেউ নিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, প্রয়োজনে তার রিটেইলার বাদ করা হবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাদারীপুরে টাকার বিনিময়ে সিম নিবন্ধন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ