Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মিয়ানমারে ‘রোহিঙ্গা’ না বলার ব্যাখ্যা দিলেন পোপ ফ্রান্সিস

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিয়ানমার সফরকালে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ না করার কারণ জানিয়েছেন রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। শনিবার বাংলাদেশ সফর শেষে দেশে ফেরার পথে বিমানে সংবাদকর্মীদের নিজের অবস্থানের ব্যাখ্যা দেন তিনি। জানান, আত্মতুষ্টি নয়, সংলাপের মাধ্যমে সঙ্কট নিরসন চান বলেই রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করেননি। ভ্যাটিকান মুখপত্র ক্রাস্ক নাউ-এর এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের দেওয়া পোপের সাক্ষাৎকারকে উদ্ধৃত করে এসব কথা বলা হয়েছে।
মিয়ানমার সফর শেষে ২ ডিসেম্বর পোপ ঢাকায় আসেন। এখানে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেন। শনিবার তিন দিনের সফর শেষে ঢাকা থেকে দেশে ফেরার পথে পোপ ফ্রান্সিস বিমানে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। রোহিঙ্গা শব্দটির ব্যবহার সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে বারবার আমি রোহিঙ্গাদের জাতিগত পরিচয়েই তাদের কথা বলেছি। এমন নয় যে, বাংলাদেশে গিয়ে আমি প্রথম রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করলাম।
একজন সাংবাদিক পোপের কাছে জানতে চান, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহারে তাকে বাধা দেওয়া হয়েছে কিনা। জবাবে পোপ বলেন, তিনি মিয়ানমার সফরে বেশ কিছু একান্ত বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকগুলোর মূল্য রয়েছে।
পোপ যদি আগেই রোহিঙ্গা শব্দ উচ্চারণ করতেন তাহলে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এসব বৈঠকের পথ বন্ধ করে দিত। পোপের ভাষায়, ‘আমার উদ্দেশ্য ছিল যথার্থ বার্তাটি পৌঁছে দেওয়া। হুম, মুখের ওপর আলোচনার দরজা বন্ধ করে দেওয়ার আত্মতুষ্টি আমার নেই। তবে আমি সন্তুষ্ট যে সংলাপের পথে যেতে পেরেছি। যোগাযোগে বার্তা পৌঁছানোই গুরুত্বপূর্ণ।’
সফরে পোপ যেন ‘রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা’র খাতিরে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার না করেন, সেজন্য তাকে আগে থেকেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে দেশটির খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পক্ষ থেকে। সেই পরামর্শ মেনেই তিনি মিয়ানমারে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ করেননি। যদিও এর বিরোধিতা করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, যারা এরই মধ্যে ‘বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত এই দেশহীন জনগোষ্ঠীকে’ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ‘রোহিঙ্গা’ বলেই অভিহিত করে আসছে। এর আগে পোপও ‘রোহিঙ্গা ভাইবোন’ ব্যবহার করে তাদের প্রতি সহমর্মিতার কথা উল্লেখ করেছিলেন। উল্লেখ্য, খ্রিস্টানরাও মিয়ানমারে সংখ্যালঘু।
ভ্যাটিকান মুখপত্র ক্রাক্স নিউজের মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাংয়ের সঙ্গে দেখা করতে বাধ্য করা হয়েছে পোপ ফ্রান্সিসকে। ভ্যাটিকান মুখপাত্রের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমারের কার্ডিনাল চার্লস মং বো’র নির্দেশনা মেনেই তিনি শীর্ষ সামরিক নেত্বত্বের সঙ্গে সোমবারের আকস্মিক সেই ১৫ মিনিটের অনির্ধারিত বৈঠকে মিলিত হন। মিয়ানমারের কার্ডিনাল নিজেও এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার নেপিদোতে পোপ তার মিয়ানমার সফরের মূল ভাষণ দেন। সেই ভাষণে সরাসরি রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি তিনি। বিবিসির এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে প্রতিবেদক জোনাথন ফিশার বলেন, মঙ্গলবারের ভাষণে রোহিঙ্গা শব্দটি বর্জন করে কট্টরপন্থী বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এবং অং সান সু চি’র অস্বস্তি ঠেকাতে পেরেছেন পোপ। সূত্র : ক্রাস্ক নাউ।

 



 

Show all comments
  • বশির ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ২:১৮ এএম says : 0
    ব্যাখ্যাটি আমার পছন্দ হলো না
    Total Reply(1) Reply
    • Num ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৬:০৮ এএম says : 4
      Shubida badi kotha
  • কামরুজ্জামান ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ২:১৯ এএম says : 0
    আলোচনার কোন ফল তো আমরা দেখতে পারছি না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ