Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আদালতের আদেশে মুক্তিযোদ্ধা বানানো হবে না মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

মো: শামসুল আলম খান | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আদালতের নির্দেশে কোন মুক্তিযোদ্ধা বানানো হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম.মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, স্বাধীন দেশের আদালত ক্ষমতার অপব্যবহার করলে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। যারা বিচারক তাদের পান্ডিত্য আছে। তারা লেখাপড়া জানেন এবং আইন-কানুন বুঝেন।
মুক্তিযুদ্ধ কোন মৌলিক অধিকার নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মৌলিক অধিকার খর্ব হলে কেবলমাত্র তার বিষয়ে রিট চলে। যারা যুদ্ধ করেছে কেবল তারাই মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধা হবার জন্য রিট হতে পারে না। কাউকে বাদ দেয়া হলে আদালতে মামলা করতে পারে। কিন্তু রিট পিটিশন চলবে না। ৭১ এ যাদের জন্ম হয়নি তাদের মুক্তিযোদ্ধা বানানোর জন্য আদালত আদেশ দিয়েছে। আমরা সেই আদেশ মানবো না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মদদদাতাদের বিচারের জন্য ট্রুথ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম.মোজাম্মেল হক বলেন, জাতিকে পূর্ণ কলঙ্কমুক্ত করতে এটি করতে হবে। জামায়াতকে নিষিদ্ধ ও তাদের নেতাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করারও দাবি তোলেন মন্ত্রী। রোববার রাতে নগরীর ছোট বাজার মুক্ত মঞ্চে ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রথম দিনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জেলা প্রশাসনের যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক (ডিসি) খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ডা: এম.আমান উল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা।
আলোচনায় অংশ নেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আনোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিন আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান খোকন।
আলোচনা সভা শুরুর আগে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ নেতা তানভীর জোবায়ের ইসলাম তারিনের নেতৃত্বে একটি বিশাল বিজয় মিছিল মুক্ত মঞ্চে এসে পৌছে। এ সময় অতিথিরা করতালি দিয়ে তাদের স্বাগত জানান।
মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) মতো স্থায়ীভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সার্টিফিকেট ও আধুনিক প্রযুক্তির পরিচয়পত্র দেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী আ.ক.ম.মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, সার্টিফিকেট বা পরিচয়পত্র মেশিনে ধরলে জাতীয় সঙ্গীতের প্রথম লাইন ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’ বেজে উঠবে। দেখা যাবে আমাদের লাল-সবুজের পতাকা। বেজে উঠবে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের সেই অমর ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। আমরা দ্রæত সময়ের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সার্টিফিকেট ও পরিচয়পত্র দিয়ে দিবো। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম.মোজাম্মেল হক এমপি বলেন, আগামী জানুয়ারি মাস থেকে দেশের অস্বচ্ছল সব মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। মুক্তিযোদ্ধারা এখন ঈদ উল ফিতর ও ঈদ উল আযহায় দু’টি বোনাস পান। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের স্বীকৃতি স্বরূপ এবং পহেলা বৈশাখ এ তিন দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের বোনাস দেয়ার বিষয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করেছি। আগামী অর্থ বছরে পহেলা জুলাই থেকে যে বাজেট চালু হবে তাতে মুক্তিযোদ্ধাদের এ সুযোগ সুবিধাগুলো থাকবে। সারা দেশে একই ডিজাইনে মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কবর নির্মাণ করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যেসব জায়গায় পাক হানাদার বাহিনীর সাথে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়েছে সেখানে একই ডিজাইনের স্মৃতিসৌধ হবে। একই ডিজাইনে সব বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা হবে। বিসিএস পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ১শ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। সারা দেশে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের পাকা বাড়ি করে দেয়া হবে। আলোচনা সভায় ময়মনসিংহ জেলা আ’লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ গোটা জাতিকে আনন্দে উদ্বেলিত করেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের হৃদয়ে-মনে। এ চেতনাকে শাণিত করতে হবে।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:১৪ পিএম says : 0
    মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক সাহেবের সাথে আমি একমত পোষন করছি এখানে আদালতের কোন একতিয়ার নেই। বলতে গেলে আজ এই দেশে আদলতও এই মুক্তিযুদ্ধের অবদান। ১৯৭১ সালে আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি আমরাই মুক্তযোদ্ধা এর বাইরে আর কেহ মুক্তিযুদ্ধা নয় কাজেই মুক্তিযুদ্ধা যারা তারাই মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে দাবীদার এটা কোন সাধারন মৌলিক অধিকার নয়। সাধারন মানুষেরা এর দাবীদার নয় তাই এটাকে মৌলিক অধিকার বলে রীট মামলায় আনা যায়না এটাই মহা সত্য়। ১৯৭৫ সালে ক্ষমতার পট পরিবর্তন হলে প্রথমেই মুক্তিযোদ্ধাদের উপর নেমে আসে বিপদ তাই সেসময়ে অনেকেই বিপদ সামাল দিতে না পেরে দেশান্তরি হয়েছিলেন আবার অনেকে আওয়ামী রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে দেশে থেকে গেছেন আবার অনেকে সেই সময়ের শাসকের সাথে হাত মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করেছেন। তারই ফল স্বরূপ ১৯৭৮ সালে নতুন করে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রনয়ন করা হয়। এই তালিকায় হাজার হাজার নতুন নাম যুক্ত হয় এটাই মহা সত্য। আমার মতে যখনই পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের দেখবেন তখনই তাদেরকে সেলুয়েট করবেন এটাই হওয়া উচিৎ কিন্তু না আমি দেখি পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদেরকে তোয়াক্কা করে না কারন ঐ আমি যা বলে গেলাম এটা পুলিশ জানে তাই তাদের শ্রদ্ধা নেই। আল্লাহ্‌ আমাদের সৃষ্টি দেশ বাংলাদেশকে শয়তানের হাত থেকে মুক্ত রাখেন এই কামনা। আমীন
    Total Reply(0) Reply
  • Sajib Dewry ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৩:২৩ পিএম says : 0
    ১৯৭১ এ যদি কোন লোক ভারতে গিয়ে ট্রেনিং করে দেশে এসে যুদ্ধ করেছে.....এবং দেশ স্বাধীন হবার পরে সে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায় ও পরে দু তিনবার তার ভাতাও গ্রহন করে.... পরে তার মুক্তিযোদ্ধা কার্ডটা হারিয়ে ফেলে এর পরে আর এ বিষয়ে কোন খোজ খবর নেয় নি।।।। বর্তমান তালিকায় তার নাম কোথাও নেই.....মৃত্যুর আগে সে তার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে চান........সে কিভাবে এটা পেতে পারেন..... PLEASE বলবেন.....
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুক্তিযোদ্ধা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ