Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ক্ষমতায় টিকে থাকতেই গুম খুন করছে -মির্জা ফখরুল

রাজধানীতে বিএনপির মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার জোর তরে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই গুম-খুনের রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শুধু মানুষই নয়, এই সরকার গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকেও গুম করে ফেলছে। সরকারের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করলেই হত্যা, না হলে গুম হতে হচ্ছে। একটি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কাছে আজ দেশের অসংখ্য পরিবার এখন অসহায় হয়ে পড়েছে। যারাই সে দলটির বিরুদ্ধে ভিন্নমত প্রকাশ করছে বা করতে চাচ্ছে তাদেরকে সরকার শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকতে এবং ক্ষমতায় যেতে হয় হত্যা করছে, না হয় গুম করছে। গতকাল (রোববার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের গুম ও খুন হওয়া নেতা-কর্মীদের আত্মীয়স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা সহ সারাদেশেই এই মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি
মির্জা ফখরুল বলেন, মানবাধিকার যে গুম হচ্ছে, তারই শিকার পরিবারগুলো আজ এখানে উপস্থিত হয়েছে। এখানে আসা পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের ফিরে পাওয়ার জন্য পাঁচ বছর ধরে অপেক্ষা করছে। পাঁচ বছর ধরে তারা আহাজারি করছে। সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে জলাঞ্জলি দিয়ে শক্তির জোরে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ কারাগারে পরিণত হয়েছে। মামলা, হত্যা, গুম-খুনে জর্জরিত। কারণ একটাই জোর করে রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে রাখা। শুধু তাই নয়, আজকে বিচারবিভাগকে কব্জা করে ফেলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতিকে বাধ্য করা হয়েছে প্রথমে ছুটি পরবর্তীতে পদত্যাগে। প্রশাসনকে করা হয়েছে সম্পূর্ণ দলীয়করণ।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের সামনে একটি মাত্র পথ, সেটি হলো গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতাসীন সরকারকে পরাজিত করার মাধ্যমে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। সেজন্য সবাইকে উঠে দাঁড়াতে হবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে এবং দেশের মানুষ যাতে স্বস্তি নিতে পারে, মানুষকে যাতে সুশাসন দিতে পারি ঐক্যবদ্ধভাবে সেই আন্দোলন করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, পার্টির হিসাব, মতে শুধু বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার সংখ্যা ৭৮ হাজার ৩২৩টি, আসামির সংখ্যা ৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৩৮ জন, সরাসরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মোট খুন ৫২০ জন, অপহরণের সংখ্যা ৭৪৭ জন, এখন পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন ১৫৭ জন, নির্যাতনের শিকার ৩৭ লাখ।
মানববন্ধনে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ থেকে মানবাধিকার গুম করেছে বর্তমান সরকার। অথচ তারা কথায় কথায় বলে থাকেন বাংলাদেশ নাকি এখন বিশ্বের কাছে রোল মডেল। এটাই কী তাহলে বাংলাদেশের রোল মডেলের চিত্র? যেখানে ভিন্নমত প্রকাশ করলে একমাত্র অপরাধ হচ্ছে গুম হয়ে যায়।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে জনপ্রিয়তা হারিয়ে এখন মিথ্যার ফ্যাক্টরি তৈরি করেছে। মিথ্যাচার করতে করতে তারা এখন মানবাধিকার নিয়েও মিথ্যাচার করেছে।
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে দেশে মানবাধিকার নেই। কথা বলা ও সমাবেশের অধিকার নেই। শুধু দলীয় নেতাকর্মীই নন অসংখ্য মানুষ গুম ও হত্যার শিকার। এই সরকার জোর করে ক্ষমতায় থাকার জন্যই গুম খুনের রাজনীতিকে বেছে নিয়েছে। প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধনে ঢাকা মহানগর বিএনপি, মহিলা দল, ওলামা দল, কৃষক দল, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তৃতা দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, মীর সরফত আলী সপু, এমরান সালেহ প্রিন্স, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আনোয়ার হোসাইন, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, আফরোজা আব্বাস, ঢাকা মহানগরীর কাজী আবুল বাশার, মীর হোসেন মীরু, আ ন ম সাইফুল, হাজি শফিকুল ইসলাম রাসেল, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ