Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিশিষ্টজনের নামে ডিএসসিসি’র বিভিন্ন স্থাপনার নতুন নামকরণের উদ্যোগ

| প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার আওতাধিন কিছু সড়ক ও স্থাপনার নামে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে ডিএসসিসি। এ সড়ক ও স্থাপনাগুলো বর্তমান নাম পরিবর্তন করে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য স্বীকৃতিশরূপ বিশিষ্টজনদের নামে এ পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রথম অবস্থায় কর্পোরেশনের একটি সড়ক, একটি কমিউনিটি সেন্টার, একটি মার্কেট ও একটি পার্কের নাম পরিবর্তনের করা হবে বলে জানা গেছে। এই সম্পত্তিগুলো আওয়ামী লীগের এক মরহুম নেতা, সংস্থার সাবেক ও বর্তমান দুজন কাউন্সিলর এবং সাবেক একজন মরহুম মেয়রের নামে নামকরণ করা হবে বলেও জানা গেছে। পর্যায়ক্রমে স্থানীয়ভাবে পরিচিত সব সড়ক ও স্থাপনার নাম বদলে জাতীয়ভাবে অবদান রাখা বিশিষ্টজনদের নামে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডিএসসিসির সংশিষ্ট বিভাগ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিএসসিসি সূত্র জানিয়েছে, ২০১১ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন বিভক্ত হওয়ার পর নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনার নামকরণ বন্ধ রয়েছে। এই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ বিশিষ্টজনদের নামে নামকরণের অসংখ্য আবেদন জমা পড়েছে সিটি কর্পোরেশনে। খোদ কর্পোরেশনের কাউন্সিলদের পক্ষ থেকেও এ দাবি জোরালোভাবে উঠে আসে।
নগরবাসীর পাশাপাশি কর্পোরেশনের বোর্ড সভায় সংস্থার কাউন্সিলরাও একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। এ নিয়ে আরও নানাভাবে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। কয়েক দফা আলোচনাও চলে সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে। এতেকরে সড়ক, স্থাপনা, কমিউনিটি সেন্টার, খেলার মাঠ ও পার্ক বিশিষ্টজনদের নামে নামকরণের দাবি আরও জোরালো হয়।
ডিএসসিসির গত ১১তম বোর্ড সভায় মেয়র সাঈদ খোকন ডিএসসিসি’র সড়ক, স্থাপনা, খেলার মাঠ ও পার্কগুলো নামকরণের বিষয়ে আলোচনা করেন। সেসময় চারটি স্থাপনার নামকরণে তিনি নিজেই প্রস্তাব রাখেন। এগুলো হচ্ছে ডিএসসিসির চাঁনখারপুল মার্কেটটি মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মরহুম এম এ আজিজের নামে, মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য নবাবগঞ্জ কমিউনিটি সেন্টারটি ২৪ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেনের নামে, আগা সাদেক সড়কটি মেয়র সাঈদ খোকনের মামা ও সাবেক কাউন্সিলর মরহুম হাজী নাজির হোসেনের নামে ও সিক্কাটুলী পার্কটি মরহুম শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মেয়র খোকনের নানা খালেদ সরদারের নামে নামকরণের প্রস্তাব রাখা হয়।
এছাড়া মরহুম মেয়র মোহাম্মদ হানিফের আজিমপুর কবরস্থানের দাফনকৃত কবরটি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের প্রস্তাব করা হয়। বোর্ডসভায় প্রস্তাবগুলো সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হয়। আগামী বোর্ডসভায় এগুলো অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। সভায় অনুমোদন পেলে এগুলোর নামকরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডিএসসিসির ১১তম বোর্ডসভায় কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে একটি সড়ক, একটি কমিউনিটি সেন্টার, একটি পার্ক ও একটি মার্কেট মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিশিষ্টজনদের নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী বোর্ডসভায় অনুমোদন পেলে আমরা তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করব। তাছাড়া এটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময়ে এটি বন্ধ ছিল। উদ্যোগটি আমরা আবার সচল করছি।
এদিকে স্থানীয় এলাকার বিভিন্ন নামে পরিচিত সড়ক-স্থাপনাগুলো দীর্ঘদিন ধরে বিশিষ্টজনদের নামে নামকরণের দাবি উঠছে। এ সংক্রান্ত বহু আবেদন ডিএসসিসির সড়ক নামকরণ উপ-কমিটি’র কাছে জমা রয়েছে। সে আবেদনগুলোর বিষয়েও নগরভবন পর্যালোচনা করছে। সাধারণত, দেশের বিশিষ্টজনদের অবদানকে স্মরণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে তাদের কৃতিত্বকে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনার নামকরণ তাদের নামে করা হয়। বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে সিটি কর্পোরেশনের একটি উপ-কমিটিও রয়েছে। কারও নামে নামকরণের জন্য কোনও আবেদন বা প্রস্তাব পেলে ওই উপ-কমিটি তা যাচাই করে সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকে। পরে কর্পোরেশন তা বাস্তবায়ন করে।
কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা জানা গেছে, ঢাকা মহানগরী দুই সিটি কর্পোরেশনে বিভক্ত হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রশাসক করে প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করা হতো। প্রশাসকদের শুধু রুটিন কাজ করা ছাড়া বড় ধরনের কোনও উদ্যোগ গ্রহণ বা বাস্তবায়নের ক্ষমতা ছিল না। পরে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নগরবাসীর পক্ষ থেকে আবেদন আসতে শুরু করে। নির্বাচিত মেয়র এখন এ বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
নাগরিকদের আবেদনের পর সংস্থার মেয়র সাঈদ খোকন স¤প্রতি যেসব সড়ক, স্থাপনা, কমিউনিটি সেন্টার, মাঠ ও পার্কের নতুন নামকরণ করা যায় তার একটি তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই তালিকায় দেখা গেছে, সড়কের মধ্যে দোয়েল চত্বর থেকে ঢাকা মেডিক্যাল, শহীদ মিনার থেকে পলাশী মোড়, দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি, টিএসসি থেকে নীলক্ষেত, জুরাইন নতুন সড়ক, সাত মসজিদ রোড, বেড়িবাঁধ রোড, কলেজ রোড, জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীত থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, টিএসসি থেকে নীলক্ষেত হয়ে বিডিআর গেট, বলাকার দক্ষিণ থেকে কাঁটাবন, কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে কমলাপুর কাস্টম হাউস আইসিডি, যাত্রাবাড়ী ক্রসিং থেকে জুরাইন ডিগ্রি কলেজ (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়ক), ধোলাইখাল বক্স কালভার্ট রোড, ধোলাইখাল সড়ক, নবাবপুর রোডের দক্ষিণ মাথা থেকে বাহাদুর শাহ পার্ক (জনসন রোড), নর্থ ব্রæক হল রোড, র‌্যাঙ্কিং স্ট্রিট, ফোল্ডার স্ট্রিট, উর্দু রোড, চুরির হাট্টা, ডাল পট্টি, টালি অফিস রোড, ওয়াটার ওয়ার্কার্স রোড রয়েছে।
এ ছাড়া মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার, খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নামও রয়েছে ওই তালিকায়। এর বাহিরে আগাসাদেক রোড, চাঁনখারপুল মার্কেট, সিক্কাটুলী পার্ক, মানিকনগর এলাকার খালপাড় সংলগ্ন ৬০ ফুট প্রশস্ত সড়ক, নির্মাণাধীন যাত্রাবাড়ী পার্কের নাম বিশিষ্টজনদের নামে পরিবর্তনের চিন্তাভাবনাও করছে ডিএসসিসি।
জানতে চাইলে ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, বোর্ডসভায় কয়েকটি বিষয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী সভায় পাশ হলে তা বাস্তবায়ন করা হবে। এর বাইরে আরও বেশ কিছু আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনগুলো এ সংক্রান্ত কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডিএসসিসি

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ