Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শাহজালালে ১১ ঘণ্টা ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ

| প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

উমর ফারুক আলহাদী : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১১ ঞন্টা ফ্লাইট অবতরন ও উড্ডয়ন বন্ধ ছিল। গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে কমপক্ষে ৩০ ফ্লাইট চলাচলে বিলম্ব হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে শাহজালাল বিমাবন্দরসহ দেশের সব কয়টি বিমানবন্দরে এ বিঘœ সৃষ্টি হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, শাহ আমানত ও সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও বিমান চলাচলে মারাত্মক বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল সিভিল এভিয়েশন সদর দপ্তর এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সুত্রে এ তথ্য জান গেছে।
গতকাল এয়ার ট্রাফিক অফিসার ওয়াহিদুর রহমান জানান,ঘন কুয়াশার কারণে মধ্য রাত থেকে সকাল ১০ টা পডর্ন্ত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ধরনের বিমান ওঠা-নামা বন্ধ ছিল।
গতকাল সকাল ১০ টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে চীন, সিঙ্গাপুর,কুয়েতসহ ৬টি আন্তর্জাতিক রুটে চীন-সাউদার্ন, কুয়েত এয়ারওয়েজ, এয়ার এশিয়া,মালিন্দো, এমিরেটস ও বিজি রিয়াদের ৬টি ফ্লাইট উড্ডয়নের অপেক্ষায় ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া, একই কারণে অবতরণ করতে পারেনি একটি কার্গো ফ্লাইটসহ ব্যাংকক এয়ারওয়েজ, সৌদি এয়ারওয়েজ, গালফ এয়ারের ৪টি বিমান। বিমানগুলো ঢাকায় অবতরন করতে না পেরে সিঙ্গাপুর কলকাতা এবং ইয়াঙ্গুনে অবতরন করেছে। তিনি বলেন,কুয়াশা কেটে গেলেই বিমান চলাচল স্বাভাবিক হবে ।
বিমানবন্দর সুত্র জানায়,বিামানের ফ্লাইট বিপর্যয়ের কারণে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌছঁতে না পেরে অনেকেই উদ্বে উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন। বিশেষ করে যারা মধ্যপ্রাচ্যে চাকুরী করেন তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
মঙ্গলবার দিকাগত রাত সোয়া ১১টা থেকে বুধবার দুপুর সাড়ে ১০ টা পর্য সব ধরনের বিমান ওঠানামা বন্ধ ছিল। এ সময় আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীন রুটে প্রায় ৩০টি ফ্লাইটের ওঠানামায় বিঘœ ঘটে। বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জিএম (জনসংযোগ) সাকিল মেরাজ বলেন, ঘন কুয়াশার কাররে গত তিন দিন ধরে বিমানের ফ্লাইট সিডিউলে বিঘœ ঘটছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১ টার ঢাকা- রিয়াদ রুটের ফ্লাইটটি যেতে পারেনি। পরবর্তীতে গতকাল সকাল সাড়ে ১১ টায় ওই ফ্লাইটি ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়। এছাড়া রাত কলকাতা থেকে রাত ১০ টা ৪০ মিনিটে যে ফ্লাইট আসার কখা ছিল সেটি গতকাল দুপুর ১২ টা ৪৫ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরন করে।
শাহ আমানত বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার রিয়াজুল কবির জানান, কুয়ালালামপুর ও কাঠমান্ডু থেকে আসা তিনটি ফ্লাইট ঢাকায় নামতে না পেরে রাত ১২টার পর চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
তিনি বলেন, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কুয়ালালামপুর থেকে আসা একটি ফ্লাইট রাত ১২টা ৬ মিনিটে চট্টগ্রামে অবতরণ করে। এরপর রাত ১২টা ১১ মিনিটে কাঠমান্ডু থেকে এবং ১২টা ২৯ মিনিটে কুয়ালালামপুর থেকে আসা মালিন্দ এয়ারের দুটি ফ্লাইট নামে।ফ্লাইট তিনটির ঢাকায় অবতরণের কথা থাকলেও ঘন কুয়াশার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
এদিকে শাহ আমানতের ট্রাফিক কন্ট্রোল কক্ষ থেকে জানানো হয়, শাহআমানত বন্দরে যাত্রাবিরতি করে রাতেই মালিন্দ এয়ারের একটি এবং রিজেন্টের ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
এয়ারলাইন্সটির চিফ অপারেটিং অফিসার আশিষ রায় চৌধুরী জানান, রিজেন্টের ফ্লাইটটি রাত ১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে ১৭টি ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যেতে পারেনি। আর ১০টি ফ্লাইট শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারেনি। রেজাউল করিম আরও জানান, থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট রাত ১২টা ৪১ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দরে নামার কথা ছিল। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে নামতে না পেরে সেটি আবার ব্যাংককে ফেরত চলে গেছে। এ ছাড়া সৌদি, গালফ ও একটি কার্গো বিমান চলে গেছে কলকাতায়। ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট চলে গেছে চট্টগ্রামে।
তবে বিমানবন্দরের অপর একটি সুত্র জানায়,মঙ্গলবার রাত ১২ টা থেকে বৃধবার সকাল সাড়ে ১০টা পযর্ন্ত সব ধরনের বিমান ওঠানামা বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে সকাল ১০টায় অভ্যন্তরীণ রুটের একটি ফ্লাইট কক্সবাজার যায়। সোয়া ১০টার পর থেকে আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল শুরু হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত কয়েক দিনের তুলনায় গতকাল কুয়াশার মাত্রা অনেক বেশি ছিল। গত মঙ্গলবার উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় কুয়াশা ছিল। গতকাল বুধবার দেশের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলেও ঘন কুয়াশা পড়েছে। ঢাকায় সর্বনিম্ন দৃষ্টিসীমা ছিল ২০০ মিটার। আর সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন দৃষ্টিসীমা ছিল ময়মনসিংহে ১০০ মিটার। সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দীন আহমেদ বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে এখন কুয়াশা পড়ছে। শীতের তীব্রতাও বাড়ছে। শৈত্যপ্রবাহ এখনো নেই। তবে এ মাসের শেষ বা জানুয়ারির প্রথম দিকে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা আছে। ঘন কুয়াশার এ অবস্থা আরও কয়েক দিন চলবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শাহজালালে

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ