Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জিহবা যখন মানচিত্র

| প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সারা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৩ ভাগ মানুষের মাঝে জিওগ্রাফিক টাং বা জিহবা দেখতে পাওয়া যায়। জিওগ্রাফিক টাং হঠাৎ করে দেখলে মানচিত্রের মত মনে হতে পারে। জিওগ্রাফিক জিহবা ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের ক্ষেত্রে বেশি দেখতে পাওয়া যায়। জিওগ্রাফিক টাং বা জিহবাকে বিনাইন মাইগ্রেটরী গøসাইটিসও বলা হয়। শুধু তাই নয় জিওগ্রাফিক টাং বা জিহবা কন্টিনেন্টাল জিহবা নামেও পরিচিত। আকাশ সংস্কৃতির যুগে ছোট বড় সবারই জিওগ্রাফিক চ্যানেল দেখতে ভাল লাগে। কিন্তু মানুষের জিওগ্রাফিক টাং বা জিহŸা দেখতে কারোরই ভাল লাগার কথা নয়, আর রোগীর ক্ষেত্রে তা এক বিড়ম্বনাকর অনুভ‚তি। জিওগ্রাফিক টাং বা জিহŸা বলা হয় এ কারণেই যে এ অবস্থায় জিহŸাকে ম্যাপ বা মানচিত্রের মত দেখা যায়। ভেবে দেখুন আপনার জিহŸা যদি মানচিত্রের মত দেখা যায় তাহলে আপনার কেমন লাগবে? আর আপনার পাশে থাকা প্রিয়জনের মনের অবস্থা কেমন হবে?
জিওগ্রাফিক টাং এ জিহŸার উপরিভাগে লাল বর্ণের প্যাঁচ বা দাগ দেখা যায়, পাশে ধূসর সাদা বর্ডার দেখতে পাওয়া যায়। জিহŸার প্যাপিলা লাল বর্ণের স্থানে দেখা যায় না। ধূসর সাদা বর্ডার এর উপর বেশি দেখা যায়। জিওগ্রাফিক টাং এর অবস্থা স্বতস্ফ‚র্তভাবে ভাল হয়ে যায়। কিন্তু নতুন করে দেখা যায় এবং কয়েক ঘণ্টা বা দিনের মধ্যেই জিহŸায় ম্যাপ এর মত আকৃতি পরিবর্তন হয়ে যায়। এ কারণেই একে বিনাইন মাইগ্রেটরী গøসাইটিস বলা হয়।
জিওগ্রাফিক টাং বা জিহŸার কারণসমূহ: জিওগ্রাফিক টাং এর কারণ এখনও সুনির্দিষ্টভাবে নির্ণয় করা যায়নি। অনেকগুলো জিনের কারণে জিওগ্রাফিক টাং হয়ে থাকে। যাদের পরিবেশগত সংবেদনশীলতা বেশি তাদের ক্ষেত্রে জিওগ্রাফিক টাং বা জিহŸার সৃষ্টি হতে পারে। পরিবেশগত সংবেদনশীলতার মধ্যে রয়েছে (ক) এ্যাজমা (খ) এলার্জি (গ) একজিমা। যাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল তাদের জিওগ্রাফিক টাং হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভিটামিন বি এর অভাবের কারণেও জিওগ্রাফিক টাং হতে পারে। অনেকের মতে মানসিক চাপ থেকেও এমনটি হতে পারে। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের সাধারণ মানুষের চেয়ে ৪গুণ বেশি সম্ভাবনা থাকে এ রোগ হওয়ার ক্ষেত্রে। জিওগ্রাফিক টাং বা জিহŸা ধারণকারী মেয়েদের মধ্যে যারা জন্ম নিরোধক বড়ি সেবন করেন তাদের ক্ষেত্রে সেবনকালীন সময়ের ১৭তম দিনে জিওগ্রাফিক টাং সবচেয়ে খারাপ রূপ ধারণ করে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, হরমোনের পরিমাণ জিওগ্রাফিক টাং এর উপর প্রভাব বিস্তার করে। মানচিত্র জিহŸার কারণে জিহŸার ফিলিফরম প্যাপিলা দেখা নাও যেতে পারে।
মানচিত্র জিহŸার লক্ষণসমূহ: সাধারণত কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষণ থাকে না। কিছু রোগী মসলা বা ঝাল জাতীয় খাবার গ্রহণ করে জ্বালা পোড়ার অভিযোগ করে থাকেন। এলকোহল, তামাক পাতা, কিছু টুথপেস্ট এবং মাউথওয়াশ জিওগ্রাফিক টাং এর অবস্থা খারাপ করতে পারে।
মানচিত্র জিহŸার চিকিৎসা: জিওগ্রাফিক টাং বা কন্টিনেন্টাল জিহŸার সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। রোগীদের বেশি গরম বা ঠান্ডা খাবার গ্রহণ করা ঠিক নয়। অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার পরিহার করা উচিত। খাদ্য তালিকায় কিছু পরিবর্তন ও সংযোজন এনে অবস্থার অনেক উন্নতি সাধন করা সম্ভব। জিওগ্রাফিক টাং বা জিহŸার চিকিৎসা রোগের কারণ ও ধরন অনুযায়ী প্রদান করতে হয়। অনুমানের উপর কোন চিকিৎসা প্রদান করলে জিওগ্রাফিক টাং বা জিহŸার অবস্থার মারাত্মক অবনতি হয়ে থাকে। রোগের কারণে রোগীর বিড়ম্বনার অনুভ‚তির কার্যকর চিকিৎসা এখন আমাদের দেশেই সম্ভব।

ষ ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল: ০১৮১৭-৫২১৮৯৭



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জিহবা

৬ আগস্ট, ২০২১
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
১২ এপ্রিল, ২০১৯
১৯ অক্টোবর, ২০১৮
১১ মে, ২০১৮
২২ ডিসেম্বর, ২০১৭

আরও
আরও পড়ুন