Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে শোকসভায় বক্তারা

| প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করে গেছেন
চট্টগ্রাম ব্যুরো : এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী আমৃত্যু চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। চট্টগ্রামের সব দল মতের মানুষের কাছে অভিভাবকের মতো ছিলেন তিনি। নিজ দলের সরকারের সময়েও সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে তিনি রাজপথে নেমেছেন। তিনি কর্মজীবী মানুষের পক্ষে সবসময় সোচ্চার ছিলেন। দাবি আদায়ে ছিলেন আপোষহীন। তিনি জনবান্ধব কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামবাসীর মনে চির ঠাঁই করে নিয়েছেন। গতকাল (সোমবার) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের পিএইচপি ভিআইপি লাউঞ্জে ক্লাবের সম্মানপ্রদ আজীবন সদস্য, সাবেক সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর শোকসভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শোকসভায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ভবন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে বলেন, সাংবাদিকদের রুটিরুজির আন্দোলনে তিনি সমবসময় পাশে ছিলেন।
শোকসভায় মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের আন্তরিক সহযোগিতায় আমার বাবা কাজ করেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে বাবার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে ভবিষ্যতেও আপনাদের সহযোগিতা চাই। জীবনে বিলাসিতা ও সুখকে বিসর্জন দিয়ে সারাজীবন শোষিত মানুষের কাতারে থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ব্যারিস্টার নওফেল বলেন, দেশের বাইরে নিয়ে বাবার চিকিৎসা প্রদানসহ সার্বিক বিষয়ে তিনি সহায়তা ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। ব্যারিস্টার নওফেল বলেন, আমার বাবা দৃঢ়চেতা মানুষ ছিলেন। তিনি বীর মহিউদ্দিন হিসেবে ইমেজ সৃষ্টি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বাসায় এসে আমাদের পরিবারকে শক্তি যুগিয়েছেন। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করে যাব।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, চট্টগ্রামে যত আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে, প্রত্যেকটার পেছনে মহিউদ্দিন ভাইয়ের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছিল। দাবি আদায়ে তিনি সবসময় ছিলেন আপোষহীন। চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি জাতীয় নেতায় পরিণত হয়েছেন। তিনি নগরবাসীকে গৃহকর থেকে মুক্তি দিয়ে বিদায় নিয়েছেন।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, একজন সফল নেতার যে গুণসমূহ থাকা প্রয়োজন তার সবগুলোই মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর অনেকেই মুজিবকোট পড়তে সাহস না পেলেও চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধুরীর বেলায় ছিল ভিন্ন। চট্টগ্রামের সামগ্রিক স্বার্থে তিনি প্রয়োজনে দলীয় সিদ্ধান্তের উর্ধ্বে ওঠে কাজ করেছেন।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছোট ছেলে বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীন বলেন, আমাদের বাবা আজ আমাদের মাঝে নেই। তিনি চট্টগ্রামের সবাইকে নিজের পরিবারের সদস্য মনে করতেন। তার ধ্যান-ধারণা ছিল শুধু চট্টগ্রামের উন্নয়ন। তিনি কয়েকবছর অসুস্থ থাকলেও কাউকে অসুস্থতা বুঝতে দিতেন না। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি শহীদ উল আলম বলেন, চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের রুটি রুজির বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি সবসময় আমাদের পাশে থেকেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার বলেন, চট্টগ্রামের একমাত্র অভিভাবক মহিউদ্দিন চৌধুরী আরেকজন কখনো আসবেন না। চট্টগ্রাম তথা দেশের রাজনৈতিক সম্পদ মহিউদ্দিন চৌধুরীর কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তার পরবর্তী প্রজন্মকে। তিনি প্রেস ক্লাবের কর্মকান্ডে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অবদানের কথা স্মরণ করেন। শোকসভায় বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের কার্যকরী সদস্য হেলাল উদ্দিন চৌধুরী ও মোয়াজ্জেমুল হক, বিএফইউজে’র যুগ্মমহাসচিব তপন চক্রবর্তী, সিইউজের সিনিয়র সহ-সভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, প্রেস ক্লাবের আজীবন দাতা সদস্য এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, সমীর কান্তি বড়–য়া, মঈনুদ্দিন কাদেরী শওকত, এম নাসিরুল হক, জাহিদুল করিম কচি প্রমুখ। সভায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে করার প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দাবির প্রতি সমর্থন রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ