Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে নিত্যদিনের যানজট

সেলিম আহমেদ, সাভার থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের গোড়াই পর্যন্ত যনজটের কারণে ঢাকামুখী গাড়ি বাইপাইলে ধীরগতিতে চলছে। মহাসড়কে পণ্যবাহী এবং যাত্রীবাহী গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় এই যানজট সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাছাড়া আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের পোশাক কারখানা ছুটি হলে গাড়ির চাপ আরো বেড়ে যায়। তখন যানজট নিরসনে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। ফলে এ সড়কে যানজট এখন নিত্যদিনের ব্যাপার।
মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় যানবাহন বিকল হওয়ায় যানবাহনের চাপ বৃদ্ধির পাশাপাশি সড়কের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনার কারণে বিভিন্ন স্থানে সড়ক সরু হয়ে যাওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজটের কারণে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় এই সড়কপথে চলাচলকারী যাত্রীদের। তবে ঢাকা জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) আবুল হোসেন বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বর্তমানে মহাসড়কে কোনো যানজট নেই।
কিন্তু মাঝেমধ্যে সড়কে কোনো দুর্ঘটনা বা কোনো গাড়ি বিকল হয়ে পড়লে সামান্য যানজটের সৃষ্টি হয়ে। তাৎক্ষণিক আবার ঠিক হয়েও যায়। এ ছাড়া শিল্প কারখানা ছুটির পর গাড়ির যে চাপ তা সামাল দিতে কিছুটা বেগ পেতে হয় আমাদের। ঢাকাগামী কাভার্ড ভ্যানের চালক বাবুল হোসেন বলেন, টাঙ্গাইলে যানজটের কারণে যানবাহন ধীরগতিতে চলছে। ফলে মাত্র ৩০ মিনিটের রাস্তা পার হতে সময় লাগল প্রায় দুই ঘণ্টা। টাঙ্গাইল শহর বাইপাস, করটিয়া, দেলদুয়ার উপজেলার নাটিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে চার লেনের কাজ চলার কারণে এ যানজটের সৃষ্টি হয়।
সরেজমিন রোববার রাতে ও গতকাল সোমবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, যানজটের কারণে থেমে থেমে চলছে যানবাহন। ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের যাত্রী আকবর হোসেন বলেন, ভোরে ঘন কুয়াশা ও রাস্তার বেহাল দশার কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে। পুলিশ সূত্র জানায়, মহাসড়কের যানজটের অন্যতম কারণ হচ্ছে, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চার লেন প্রকল্প ও বেশির ভাগ রাস্তায় খানাখন্দক ও ছোট-বড় গর্ত।
পরিবহন শ্রমিকরা ও যাত্রীদের অভিযোগ, ছোটখাটো গর্ত, সড়ক ভাঙাচুড়া ও ঘন কুয়াশার কারণে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রামনা বাইপাস, করটিয়া, জামুর্কি, নাটিয়াপাড়া, ধেরুয়া, ইচাইল, হাঁটুভাঙ্গা ও কালিয়াকৈর এলাকায় মালবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস আটকে গিয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে সেই থাক্কা বাইপাইল পর্যন্ত এসে পড়ে।’
বগুড়াগামী বাসের চালক হামিদুল্লাহ বলেন, যানজট থেকে মুক্ত হতে হলে আগে আমাদের চালকদের ঠিক হতে হবে। কারণ আমরা যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করাই। রাস্তার মাঝখানে গাড়ি থামিয়ে শ্রমিক নেতাদের চাঁদাবাজি, পুলিশের চাঁদাবাজি যার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে পেছনে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। তা ছাড়া পুলিশ এসব বিষয় ভালোভাবে নজরদারি করলেও সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আশুলিয়ার অংশে যানজট নিরসনে থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও শিল্পপুলিশ একযোগে চেষ্টা করলে যানজট নিরসন সম্ভব বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা। তাদের দাবি, শিল্প পুলিশ শিল্প কারখানার পাশাপাশি এ সড়কে যানজটের বিষয়টি একটু নজর দিলেই মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।
এ বিষয়ে শিল্প পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বাইপাইলে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, টাঙ্গাইল অংশে মহাসড়কের প্রশস্তকরণ কাজ চলমান থাকায় এবং ভোরে ঘন কুয়াশার কারণে মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় ও আশপাশের এলাকায় এই যানজট দেখা দেয়। ধিরে ধিরে এ যানজট টাঙ্গাইলের গোড়াই পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়ে। যার কারণে আশুলিয়ার অংশে যানজট মনে হয়। ফলে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন তখন ধীরগতিতে চলতে থাকে। তবে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল আউয়াল বলেন, মহাসড়কে যানজট বেশি হলে আমাদের থানার ফোর্সরাও দায়িত্ব পালন করে যানজট নিরসনে। তবে বর্তমানে সড়কে যানজট নেই বললেই চলে।



 

Show all comments
  • নাঈম ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৪:১১ এএম says : 0
    এগুলো এখন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গেছে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যানজট

১৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ