Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পানির নিচে লোহাগড়া সরকারি কলেজ মাঠ : শিক্ষার্থীদের খেলাধোলা বন্ধ

| প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

লোহাগড়া (নড়াইল) থেকে আবদুস ছালাম খান : নড়াইলের লোহাগড়া সরকারি আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের খেলার মাঠে বর্ষাকালে জমে থাকা পানি এখনও শুকায়নি। অথচ আগামী জানুয়ারি মাসে কলেজের সুবর্ণ জযন্তী উৎসব এ মাঠেই অনুষ্ঠিত হবার পরিকল্পনা রয়েছে। আটকে যাওয়া বর্ষার বৃষ্টির পানিতে এভাবে বছরের প্রায় আট মাস মাঠটি পানির নিচে থাকে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে এটা কোন ডোবা বা জলাশয়। কলেজের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী ছাড়াও উপজেলা সদরের অন্তত ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত মাঠটি জলাবদ্ধ থাকায় এখানে খেলাধুলার চর্চা করতে পারছে না ক্রীড়া অনুরাগীরা। খেলাধুলার চর্চা ছাড়াও বন্ধ রয়েছে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আয়োজন।
ক্রীড়া প্রশিক্ষক দিলীপ চক্রবর্তী জানানÑ কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও লোহাগড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, লোহাগড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, মিতালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলা সদরের অন্তত ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই মাঠে নিয়মিত খেলাধুলার প্রশিক্ষণ গ্রহন করতো। এই মাঠে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকে জাতীয় পর্যায়ে কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। কিন্তু মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় এখন তা বন্ধ রয়েছে। খেলাধুলার নিয়মিত প্রশিক্ষণ ছাড়াও এই মাঠে স্থানীয় নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তিনি আরো জানান, জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিতে শিক্ষা বিভাগের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের বাছাই পর্বের ক্রীড়া প্রতিযোগিতাও এ মাঠেই হতো। বিকেল-সন্ধ্যায় উন্মুক্ত বাতাসে বসে শিশু, কিশোর, যুব-বৃদ্ধদের গল্প-আড্ডার আসর বসতো এখানে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ মাঠে একবার বিশাল জনসভা করে গেছেন। গত তিন বছর ধরে মাঠটি বছরের প্রায় আট মাস জলাবদ্ধ থাকায় সব মহল পড়েছে বিপাকে।
কলেজের দক্ষিণ পাশে বিশাল এ মাঠ। মাঠের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে চলাচলের রাস্তা এবং পূর্ব ও পশ্চিম পাশে বাড়িঘর। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের সুযোগ না থাকায় মাঠে এখনও পানি রয়েছে। মাঠজুড়ে কচুরিপনা ও ঘাসের ঝোপ। দেখে মনে হচ্ছে ডোবা পুকুর অথবা বড় কোন জলাশয়।
স্থানীয়রা জানান, এ মাঠের পানি নিষ্কাশনের চারটি কালভার্ট ছিল। মাঠের পাশে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপনা গড়ে ওঠায় পানি নিষ্কাশনের কালভার্টগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে এ জলাবদ্ধতা দূর করা যেতে পারে। মাঠের পাশের বাসিন্দারা জানান, গত জুলাই মাস থেকে এ পর্যন্ত ছয় মাস পানির নিচে রয়েছে মাঠটি। আরো অন্তত দুই মাস মাঠে পানি থাকবে। পানি পচে দুর্গন্ধ হওয়ায় আমরা মশা ও পানি বাহিত নানান সমস্যায় ভুগছি।
লোহাগড়া পাইলট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এস এম হায়াতুজ্জামান বলেন, আমাদের বিদ্যালয় জাতীয় শীতকালীন অ্যাথ্্লেটিকস প্রতিযোগিতায় টানা নয়বার দেশসেরা হয়েছে। আমাদের স্কুলের মাঠটি প্রশিক্ষণের জন্য সুবিধাজনক না হওয়ায় এদের প্রশিক্ষণ সকাল-বিকাল এ মাঠেই হতো। এখন আগের মত প্রশিক্ষণ দিতে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। মাঠের গুরুত্ব বিবেচনা করে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার গত ৯ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে এসেছিলেন। তিনি মন্ত্রণালয়ে দরখাস্ত করতে বলেছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শরীফ এনামুল কবীর বলেন, পানি নিস্কাসন ও মাটি ভরাটের জন্য মন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছি। এছাড়া গত তিন বছর ধরে সংশ্লিষ্ট নানা মহলে ধরনা দিয়েছি। কিন্তু কোন ফলাফল নেই। লোহাগড়া পৌর মেয়র আশরাফুল আলম জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য প্রকল্প করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি তাড়াতাড়ি বরাদ্দ পেয়ে কাজ করা যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পানি

২৫ অক্টোবর, ২০২২
২১ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ