Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

থার্টিফার্স্ট উদযাপন শুধু চার দেয়ালের ভেতর

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আজ ৩১ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীতে চলাচলের
ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা ডিএমপির
 ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে কোনো উন্মুক্ত স্থানে বা বাড়ির ছাদে কোনো সমাবেশ, গান-বাজনা করা, আতশবাজি বা পটকা ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ছাদে অনুষ্ঠান করে প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীকে বিরক্ত করা যাবে না। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে থার্টি ফার্স্টের নিরাপত্তা–সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন। এছাড়া থার্টি ফার্স্ট উপলক্ষে আজ ৩১ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীতে চলাচলের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নগরের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, চার দেয়ালের মধ্যে যদি কেউ নববর্ষ উদ্যাপন করতে চান, তাতে কোনো বাধা নেই। তবে অনুষ্ঠানের আগেই পুলিশকে জানাতে হবে। রাস্তায় যদি কেউ অপ্রীতিকর কাজ করে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে পরের দিন ১ জানুয়ারি সকাল পর্যন্ত ঢাকা শহরের সব বার বন্ধ থাকবে। কেউ এই নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া এদিন রাতে কেউ আগ্নেয়াস্ত্র সাথে রাখতে পারবে না। নববর্ষ উদ্যাপনে কোনো হামলার হুমকি আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। তবে বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে অনুমতি সাপেক্ষে কিছু পাঁচ তারকা হোটেল থার্টি ফার্স্ট নাইটের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে বলে জানান আসাদুজ্জামান মিয়া। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, রাত ৮টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কেউ অবস্থান করবেন না। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার খোলা রাখা যাবে না। কোথাও আতশবাজি বা পটকা ফোটানো যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় রাত ৮টার পরে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার। এছাড়া এসব এলাকায় বসবাসকারীদের সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে আসারও অনুরোধ করেন তিনি। আছাদুজ্জামান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয়পত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে নীলক্ষেত ও শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। গুলশান এলাকায় প্রবেশের জন্য কাকলি এবং আমতলি ক্রসিং উন্মুক্ত থাকবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, বেপরোয়া গতিতে চলাচলকারী যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হবে এবং মাতাল বা বেসামাল অবস্থায় কোনো চালক যেন গাড়ি চালাতে না পারে সেজন্য চালকের অ্যালকোহল টেস্ট করা হবে। এছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে পর্যাপ্ত ইউনিফর্মধারী পুলিশ, সাদা পোশাকের ডিবির টিম, কাউন্টার টেরোরিজম, সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল টিমের সদস্য ও ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হবে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার। ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান জোনের ডিসি মোস্তাক আহমেদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সাধারন মানুষের সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে থার্টি ফার্স্টকে সামনে রেখে। তবে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তবে কেউ যেন হয়রানীর শিকার না হন সে দিকে লক্ষ্য রেখে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ কমিশনার নির্দেশ দিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ট্রাফিক ড্রাইভারশন ও পরামর্শ
গুলশান, বনানী ও বারিধারায় প্রবেশের সব রাস্তা রাত আটটা থেকে বন্ধ রাখা হবে। তবে এ এলাকায় বসবাসকারীদের প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) ও আমতলী ক্রসিং (মহাখালী) খোলা রাখা হবে। সে ক্ষেত্রে গুলশান, বনানী ও বারিধারায় বসবাসরত ব্যক্তিদের রাত আটটার মধ্যে ওই এলাকায় প্রবেশের অনুরোধ করা হয়েছে। রাত আটটা থেকে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নম্বর রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিং, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং এলাকাগুলো ব্যবহার করা যাবে না। তবে এ এলাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। একইভাবে ৩১ ডিসেম্বর রাত আটটা থেকে পরের দিন ১ জানুয়ারি ভোর ছয়টা পযন্ত শুধু শাহবাগ ক্রসিং ও নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিচয় প্রদর্শন এবং শনাক্তকরণের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। এ জন্য পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার জন্য সবাইকে বিনীত অনুরোধ জানানো হচ্ছে। পলাশী ক্রসিং, ভাস্কর্য ক্রসিং, বকশি বাজার ক্রসিং, রোমানা চত্বর ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং ও শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সব গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। হাইকোর্ট পয়েন্ট থেকে আসা সব ধরনের গাড়ি দোয়েল চত্বর বাঁয়ে মোড় নিয়ে শহীদুল্লাহ হল হয়ে চানখাঁরপুল ক্রসিং দিয়ে বের হয়ে যেতে পারবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: থার্টিফার্স্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ