Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আত্মঘাতী হামলায় ব্যবহার করা হচ্ছে শিশুদের

প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : নাইজেরিয়ার জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারাম বেশ কিছু দিন ধরে শিশুদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ব্যবহার করছে। এরকম অনেক শিশুর বয়স ১২ বছরের কম। সম্প্রতি বিবিসি একজনের সাথে কথা বলার সুযোগ পায় যিনি অনেক দিন বোকো হারামের সঙ্গে ছিলেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলার নির্দেশ দেয়া হলে সে পালিয়ে আসে। নাইজেরিয়ায় দিকোয়া ক্যাম্পে ২শ জনের বেশি নারী ও শিশু পানির জন্য বসে আছে। দুইটি জেনারেটর দিয়ে কুয়া থেকে পানি তোলা হচ্ছে। আগে তারা লাইনে দাঁড়িয়ে পানি সংগ্রহ করতে পারলেও এখন তাদের পানির পাত্রগুলো সারি করে সাজিয়ে রাখা হয়। সেগুলো ভরে যাবার পর একজন করে নিয়ে আসেন। ফেব্রুয়ারি মাসে এখানে পানি সংগ্রহের জন্য একটি লাইনে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় দুটি মেয়ে। তারপর থেকেই নিরাপত্তার কথা ভেবে এই অবস্থা চালু হয়েছে।
হাওয়া নামের তৃতীয় আরেকটি মেয়েকে আত্মঘাতী বোমা হামলার জন্য নির্বাচন করা হয়েছিল কিন্তু সে পালিয়ে আসে। হাওয়া বলেন, আমি তাদের বলেছি দিকোয়ায় আমার মা বাস করে। সেখানে গিয়ে আমি মানুষ হত্যা করতে পারব না। বরং তাদের সঙ্গে আমিও মারা যাব। তাই একদিন ভোরে আমি সেখান থেকে পালিয়ে এসেছি। আমি আশা করেছিলাম ক্যাম্পে এসে হামলার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে দিব। কিন্তু আমি আসার আগেই হামলা হয়ে যায়। এই হামলার ফলে নিহত হয়েছিল ৫৮ জন। আমি সবগুলো মৃতদেহ দেখতে পারিনি। তবে কিঞ্জি নামে একজনের মৃতদেহ দেখতে পেয়েছি যে আমাদের সঙ্গে থাকত। তারা আমাদের বলত আমরা মারা গেলেও বেহেশতে যাব। কিন্তু এভাবে বোমা মেরে মানুষকে হত্যা করা কোনভাবেই ভাল নয়।
সেই হামলায় আহতদের একজন ফালমাতা। তার পেটে আর হাতে বোমার টুকরা লাগে। প্রথম শিশু হামলাকারীর কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। ফালমাতা বলেন, একজন সৈনিক আমাদের শাড়ি ঠিক করার চেষ্টা করছিল। বোরখায় ঢাঁকা একটি মেয়ে হঠাৎ করে বলল পেট ব্যাথা করছে। অনেকেই তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে গেল আর সেই সময়েই বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটল। আমাদের চারপাশে যেন আগুনের গোলা তৈরি হয়ে গেল। চারদিকে শুধু রক্ত আর মৃতদেহ দেখতে পাচ্ছিলাম। যেখানে বোমা দুটির বিস্ফোরণ হয় সেই রাস্তার উপর এখনও রক্তের দাগ লেগে আছে। যা ফেব্রুয়ারির ঘটনাটি মনে করিয়ে দেয়। তার পরেও এখনও প্রতিদিন সেই রাস্তা পেরিয়েই আহতদের এবং যারা স্বজন হারিয়েছেন তাদের পানি আনতে যেতে হয়। যদিও ক্যাম্পের বাসিন্ধাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
দিকোয়ার বাসিন্ধারা জানান ঐ হামলার পর থেকে আমরা খুবই চিন্তায় আছি। দুই সপ্তাহ আগেও এখানে গোলাগুলি হয়েছে। এখন প্রতিদিনই আমাদের ভয়ে কাটে। আমাদের উদ্বেগের আরেকটা কারণ হল এখনও অনেক শিশুদের বোকো হারাম আটকে রেখেছে। অনেক শিশুদের অপহরণ করা হয়েছে। আবার অনেকে স্বেচ্ছায় দলটিতে যোগ দিয়েছেন। হাওয়া জানান বোকো হারামের সাথে পুরো সমটাই তার খুব খারাপ কেটেছে। এখন সেই ভয়ের জীবন থেকে বেরিয়ে এসে স্বপ্ন দেখছি নতুন করে বাঁচার। এখন নতুন করে পড়াশোনা কররা কথা ভাবছি। আমার বিশ্বাস শিক্ষাই আমাকে স্বপ্নের কাছাকাছি নিয়ে যাবে। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আত্মঘাতী হামলায় ব্যবহার করা হচ্ছে শিশুদের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ