Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে রাষ্ট্র যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে না -সুলতানা কামাল

| প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের দ্বিতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রতিবেদনে বলা হয় ২০১৭ সালে সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের ৮২ জন খুন হয়েছে। প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ২২৮টি, শ্মশান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি দখলের ঘটনা ২৭টি, গণধর্ষণ ১৫টি ও ২১ জন নিখোঁজ হয়েছেন। গতকাল অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে রাষ্ট্র তার যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে না। গত তিন বছরে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের ওপর নানা ধরনের অত্যাচার করা হয়েছে। হত্যাকাÐ থেকে শুরু করে ধর্ষণ, বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, মন্দির-গির্জা-উপাসনালয় ঘিরে ফেলা, হুমকি দেওয়া, দেশ ছাড়তে বাধ্য করা, ধর্মান্তরিত করা, হয়রানিমূলক আচরণ করাসহ গরুর মাংস খাওয়ানোর মতো হীন আচরণ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এমন ঘটনা প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে পাঁচটি ঘটেছে। সব মিলিয়ে গত বছর এক হাজার চারটি ঘটনা ঘটে। ঘটনাগুলোর নৃশংসতা অত্যন্ত বর্বরোচিত।
জাতীয় প্রেসসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের এই দ্বিতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মহিলা ঐক্য পরিষদের এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, শিক্ষাবিদ প্রতিভা মুৎসুদ্দী, বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের সাবেক সভানেত্রী সাবিত্রী ভট্টাচার্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঞ্জু ধর। সম্মেলনে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের দ্বিতীয় ত্রি-বার্ষিক প্রতিবেদন পাঠ করা হয়। প্রতিবেদনে গত তিন বছরে সংখ্যালঘু (ধর্মীয় ও জাতিগত) জনগোষ্ঠীর ওপর সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরা হয়।
সুলতানা কামাল বলেন, বাংলাদেশ ক্রমেই যেন সংকুচিত হয়ে আসছে। প্রতিটি নাগরিক সমান অধিকারের ভাগীদার। এটা সংবিধানে বলা আছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, একটি বিশেষ গোষ্ঠীর দুর্বৃত্তায়নের ফলে কখনও কখনও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়, কিংবা আজকে রাজনীতির যে বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দেখা যাচ্ছে, সেটার কারণে বাংলাদেশ যেন ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে। দেশে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি নাগরিক সমান অধিকারের ভাগীদার। এটা সংবিধানে বলা আছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, একটি বিশেষ গোষ্ঠীর দুর্বৃত্তায়নের ফলে কখনও কখনও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়, কিংবা আজকে রাজনীতির যে বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দেখা যাচ্ছে, সেটার কারণে বাংলাদেশ যেন ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
সুলতানা কামাল বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, ঘটনাগুলোর কোনও রকমের কার্যকর বিচার এখনও হয়নি। যদি বিচার হতো, কোনও দীর্ঘসূত্রতা না থাকতো, যদি সত্যিকার অর্থে অপরাধীদের চিহ্নিত করে যথাসময়ে শাস্তির আওতায় আনা হতো, তাহলে এই ঘটনাগুলো এত ব্যাপকহারে ছড়িয়ে যেতে পারতো না। রাষ্ট্রের যে ভূমিকা ছিল, সেভাবে তা পালন করেনি।’ নারীদের প্রতি ঐক্যবদ্ধ থাকার আহŸান জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, নারীরা সচেতন হলে সেই সংগ্রাম, আন্দোলন অনেক বেশি বেগবান হবে। এ জন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ