Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মার্চে চালু হচ্ছে ‘এমভি কির্তনখোলা-১০’

| প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বরিশালে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা নৌনির্মাণ কারখানাগুলো আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক অবদান রাখছে
নাছিম উল আলম : বরিশালে বেসরকারী নৌ নির্মান কারখানায় একের পর এক যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযানের নির্মান কাজ অব্যাহত রয়েছে। গত দেড় দশকে বরিশালের বেলতলা ও দপদপিয়া এলাকায় গড়ে ওঠা এসব নৌ নির্মান কারখানায় অর্ধ শতাধিক বিভিন্ন ধরনের যাত্রী ও পন্যবাহী নৌযান ছাড়াও জ্বালানীবাহী নৌযানও নির্মিত হয়েছে। বরিশালের এসব নৌ কারনখানায় লাইটারেজ জাহাজও নির্মিত হয়েছে ইতোমধ্যে। এসব নৌ কারাখানায় ইতোমধ্যে দেশের বৃহৎ মাপের ও বিলাসবহুল যাত্রীবাহী নৌযানও নির্মিত হয়েছে। এসব নৌকারখানা আর্থ-সামাজিক খাতে ইতিবাচক অবদান রাখছে। তবে নিয়মিত বিদ্যুৎ সংকট ও গ্যাসের অভাবে এসব কারখানায় উৎপাদন ব্যহত হওয়াসহ ব্যয় বৃদ্ধিরও অভিযোগ রয়েছে।
স¤া¢বনাময় এ খাতে সরকারি ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ যথেষ্ঠ হতাশাব্যঞ্জক। বেসরকারি ঢাকা ব্যাংক ও ইসলমী ব্যাংক কয়েকটি নৌযান নির্মানে বিনিয়োগ করলেও তা এখনো অশাব্যঞ্জক নয়। জনতা ব্যাংক কয়েকটি নৌযান নির্মানে বিনিয়োগ করলেও পরবর্তিতে সেসব ঋন গ্রহীতা অন্য বেসরকারি ব্যাংকে চলে যায়। তবে নির্মানাধীন ‘এমভি কির্তনখোলা-১০’ নৌযানটিতে জনতা ব্যাংক কিছু ঋন সহায়তা প্রদান করেছে বলে জানা গেছে।
সর্বশেষ বরিশালের বেসরকারি একটি নৌ কারখানায় ‘এমভি কির্তনখোলা-১০’ নামের একটি বিলাসবহুল যাত্রীবাহী নৌযানের নির্মানকাজ প্রায় সমাপ্তির পর্যায়ে। আগামী মার্চের শুরুতেই ৩শ ফুট দৈর্ঘ্যরে এ নৌযানটি বরিশাল-ঢাকা নৌপথে যাত্রী পরিবহন শুরু করবে বলে জানিয়েছে সালমা শিপিং লাইন্স লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। আশির দশকে বরিশাল মহানগরীর বেলতলা এলাকায় প্রথমবারের মত নৌযান নির্মান শুরুর মধ্য দিয়ে বেসরকারি উদ্যোগে নৌকারখানার গোড়াপত্তন হয়। বর্তমানে বেলতলা এলাকায় ৫টি ও দপদপিয়ায় আরো ১টি বেসরকারি নৌ নির্মান কারখানায় একাধিক নৌযান নির্মান কাজ চলছে।
সমাপ্তপ্রায় ‘এমভি কির্তনখোলা-১০’ নৌযানটিতে মোট যাত্রী বহন ক্ষমতা প্রায় ১ হাজার ২শ। নৌযানটিতে সাচ্ছন্দ্যে ভ্রমনের জন্য বিলাসবহুল ১৭টি ভিআইপি কক্ষ ছাড়াও প্রথম শ্রেণীর একক শয্যার ১০২টি ও দ্বৈত শয্যার ৬৯টি কক্ষ থাকছে। প্রতিটি ভিআইপি কক্ষই সংযূক্ত শৌচাগারসহ। এ ছাড়াও প্রথম শ্রেণীর কক্ষগুলোর জন্য থাকছে পর্যাপ্ত শৌচাগার। কির্তনখোলা কর্তৃপক্ষের মতে তাদের নৌযানটির ভিআইপি কক্ষগুলো যেকোন তিন তারকা মানের হোটেলের কক্ষগুলোর সমতুল্য। নৌযানটিতে ৩ শয্যার চিকিৎসা কেন্দ্র ছাড়াও কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট স্থাপন করা হচ্ছে। অত্যাধুনিক রাডার, জিপিএস ও ইকোসাউন্ডার সরঞ্জামসমৃদ্ধ এ নৌযানটি ঘন কুয়াশাসহ যে কোন দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার আগাম সতর্কবার্তা লাভ করে সে অনুযায়ী পরিচালন সম্ভব হবে। নৌযানটির সুকান হাইড্রোলিক ও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে পরিচালন সম্ভব। ৩ হাজার ১৫০ অশ্ব শক্তির ২টি মূল ইঞ্জিন ছাড়াও ৫শ কিলোওয়াটের ৩ টি জেরনারেটর থাকছে। ফলে ভিআইপি ও সমুদয় প্রথম শ্রেণীর কক্ষগুলো বাতানুকল ব্যবস্থায় যাত্রীদের সাচ্ছন্দ্য প্রদান করবে।
একই প্রতিষ্ঠানের তত্ত¡াবধানে ঢাকা ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ইতোপূর্বে বরিশালের নৌ নির্মান কারখানায় ‘এমভি কির্তনখোলা-২’ নামের অপর একটি বিলাসবহুল নৌযান নির্মিত হয়। নৌযানটি বর্তমানে বরিশাল-ঢাকা নৌপথে সুনামের সাথে যাত্রী পরিবহন করছে।
বরিশালের এসব বেসরকারি নৌ-নির্মান কারখানাগুলো ধরে রাখতে এখানে নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবারহের দাবি জানিয়েছেন চেম্বার সভাপতি সাঈদুর রহমান রিন্টু। নৌযান ব্যবসায়ী রিন্টু এক্ষেত্রে বরিশালে ভোলার গ্যাস সরবারহের মাধ্যমে নৌ কারখানা সহ অন্যসব শিল্পের উন্নয়নও দাবি করেন। ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ