Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কোচিংবাজ ৭২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তির নির্দেশ

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ছাড় দিলে পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়
কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকায় ৭২জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। ঢাকা মহানগরীর স্কুল/কলেজের কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান টিমের সুপারিশের ভিত্তিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা লঙ্ঘন করায় তাদের এমপিও বাতিল, বরখাস্তসহ অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক দূর্গা রানী শিকদার স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনাপত্র জারি করা হয়েছে। গতকাল (রোববার) এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, ভিকারুন নেছা নুন স্কুল এন্ড কলেজ, রাজউক উত্তর মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতির কাছেও পাঠানো হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মহানগরীর স্কুল/কলেজের কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক অনুসন্ধানের পর ঢাকা মহানগরীর ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭২জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পায়। এরপরই দুদক এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের কাছে সুপারিশ করে। দুদকের সুপারিশের ভিত্তিতেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক/শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি।
কোচিংবাজ ৭২ শিক্ষকের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের ৩৬জন, মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ২৪জন, ভিকারুন নেছা নুন স্কুল এন্ড কলেজের ৭জন এবং রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ৫জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে-ইংরেজি বিভাগের মোঃ নিজাম উদ্দিন কামাল, উম্মে সালমা-২, মতিনুর, উম্মে সালমা, মনিরা জাহান, তৌহিদুল ইসলাম, সুরাইয়া জান্নাত, মোঃ শফিকুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিভাগের উম্মে ফাতিমা, বাংলা বিভাগের মোঃ আজমল হোসেন, অহিদুজ্জামান, গণিতের আব্দুল হালিম, ফাহমিদা খানম পরী, লৎফুন নাহার, হামিদা বেগম, নাজনীন আক্তার, নুরুল আমিন-২, মনিরুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, গণিত ও বিজ্ঞান বিভাগের গোলাম মোস্তফা, মোঃ সফিকুর রহমান-৩, মোঃ শফিকুর রহমান সোহাগ, রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের আশরাফুল আলম, বাবু সুবাস চন্দ্র পোদ্দার, মোহাম্মদ ফখরুদ্দীন, সহকারী শিক্ষিকা লাভলী আখতার, তাসমিন নাহার, ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের মোঃ আব্দুল জলিল, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের রফিকুল ইসলাম, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মোঃ মাহবুবুর রহমান, সহকারী শিক্ষিকা মাকসুদা বেগম মালা, সহকারী শিক্ষক আলী নেওয়াজ আলম করিম, মোঃ আবুল কালাম আজাদ, মোঃ আব্দুর রব।
মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন- বাসাবো মাধ্যমিক শাখার (প্রভাতী) দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান মোঃ কবীর আহমেদ, দিবা শাখার প্রধান মোঃ দেলোয়ার হোসেন, ইংরেজি বিভাগের মেজবাহুল ইসলাম, আবাদ হোসেন, গণিত বিভাগের সুবীর কুমার সাহা, সিনিয়র শিক্ষক বাসুদেব সমদ্দার, বকুল বেগম, প্রদীপ কুমার বসাক, আবুল খায়ের, শারমীন খানম, খ ম কবীর আহমেদ, শেখ শহীদুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোহনলাল ঢালী, মাওলানা কামরুল হাসান, মোঃ রুহুল আমিন-২, মোঃ কামরুজ্জামান, শুকদেব ঢালী, হাসান মঞ্জুর হিলালী, আমান উল্লাহ আমান, হামিদুল হক খান, রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস, চন্দন রায়।
ভিকারুন নেছা নুন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ড. ফারহানা, ইংরেজি বিভাগের সুরাইয়া নাসরিন, কামরুন্নাহার চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক শাহনেওয়াজ পারভীন, ল²ী রাণী, ফেরদৌসী, নুশরাত জাহান।
রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে গণিত বিভাগের এ বিএম মইনুল ইসলাম, মোঃ আলী আকবর, মোঃ রেজাউর রহমান, ইংরেজি বিভাগের মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের মোঃ কামরুজ্জামান।
কোচিং বাণিজ্যে জড়িত হয়ে এসব শিক্ষক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২ এর ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে বলে মাউশির নির্দেশনায় বলা হয়। এজন্য নীতিমালা অনুযায়ি এসব শিক্ষকের শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। মাউশি’র চিঠিতে বলা হয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত কোন শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার এমপিও স্থাগিত, বাতিল, বেতন ভাতা স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন এক ধাপ নিচে অবনমিত করা, সাময়িক বরখাস্ত, চূড়ান্ত বরখাস্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিওবিহীন কোন শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া বেতন ভাতা স্থগিত, বেতন এক ধাপ নিচে অবনমিত করা, সাময়িক বরখাস্ত, চূড়ান্ত বরখাস্ত ইত্যাদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমপিওবিহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া বেতন-ভাতা স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন এক ধাপ অবনমিত করা, সাময়িক বরখাস্ত, চূড়ান্ত বরখাস্ত করা হবে। কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত শিক্ষক এর বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সরকার পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়াসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান অনুমতি, স্বীকৃতি, অধিভূক্তি বাতিল করতে পারবে। ###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোচিং

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
১২ জানুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ