Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জয়ে উত্তর খুঁজবেন দুই অধিনায়ক

| প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইমরান মাহমুদ : চট্টগ্রামে কি কঠিন ৫টি দিনই না পার করেছেন বোলাররা! রানবন্যার ম্যাচে সেঞ্চুরি হয়েছে ৫টি। যাদের মাঝে দুজ’ন গিয়েছিলেন দ্বি-শতকের দিকেও। আর ৪ তিন অঙ্কের খুব কাছ থেকে ফিরেছের আরো ৪ ব্যাটসম্যান। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বাংলাদেশের হয়ে ইতিহাস গড়েছেন মুমিনুল হক লঙ্কানদের ইতিহাসের নায়ক কুশল মেন্ডিস। তবে দুঃস্বপ্নের এই টেস্টে ব্যাটসম্যানদের ভীড়ে ‘না চাওয়া’ ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন বোলাররাও। এই যেমন অভিষেকে ১ উইকেট পেতে স্বাগতিক বোলার সানজামুল খরচ করেছেন ১৭৭ রান। ৪ উইকেট নেয়া তাইজুল ইসলামের ঝুলিতেও উঠেছে ‘প্রাপ্তির’ স্মারক।
এক ইনিংসে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক ওভার বোলিং করেছেন তাইজুল। শ্রীলঙ্কার ইনিংসে তিনি সবমিলিয়ে ৬৭.৩ ওভার বোলিং করেন। ২১৯ রান খরচা করে এক লজ্জার রেকর্ডের মালিক হয়েছেন এ বাঁহাতি স্পিনার। টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ওভার বোলিং করে সবচেয়ে খরুচে বোলারের লজ্জা সঙ্গী হয়েছে তার। বিনিময়ে তিনি যেন সান্ত¡না পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন ৪ উইকেট। এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১০ সালে ৬৬ ওভার বোলিং করে রেকর্ডটা দখলে রেখেছিলেন সাকিব আল হাসান। শুধু বাংলাদেশই নয়, শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে সফল বোলার রঙ্গণা হেরাথকেও ভুগিয়েছেন মুমিনুল, তথা চট্টগ্রামের উইকেট। ৫ উইকেট নিতে এই ঘূর্ণির জাদুকর খরচা করেছেন ২৩০ রান!
শুধু ক্রিকেটাররাই নয়, লজ্জার রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে চট্টগ্রাম টেস্টের ভেন্যুও। আইসিসির ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুনের কাছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার চট্টগ্রাম টেস্টের উইকেট, ‘গড়পড়তা মানের নিচে’। তাই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম পেয়েছে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট।
ইতিহাসে ভাঙা গড়ার খেলা চলেই। তাই বলে এত ‘ইতিহাসের’ চাপে পিষ্ট হয়ে আকড়ে ধরে পড়ে থাকলে তো আর চলে না! তাই সামনে এগিয়ে যাবার পাথেয় হিসেবে ভুলগুলোকে শুধরে এগিয়ে যাওয়ার নামই লড়াই। আর সেই লড়াই এবার হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে। তাই বলে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে কি চট্টগ্রাম জুজু থাকবে না, এমনটা হতেই পারে না।
এই যেমন গতকাল ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনেও এলো চট্টগ্রাম টেস্টের স্মৃতি। দু’দলের অধিনায়ককেই দিতে হয়েছে আগের ম্যাচের অভিজ্ঞতার বর্ণনা। সেই সঙ্গে উত্তর দিতে হয়েছে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়েও প্রশ্নের উত্তর। তবে এসব ছাপিয়ে দু’দলের অধিনায়কের কণ্ঠেই উঠে এলো জয়ের ভাবনা। দু’জনেই নিশ্চিত, ফল হবে এখানে। চট্টগ্রামের মতো ব্যাটিং সহায়ক উইকেট হবে না মিরপুরে। উইকেটে স্পিনারদের জন্য থাকবে সুবিধা।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টেস্ট শুরুর আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে উইকেট নিয়ে দিনেশ চান্দিমাল নিয়ে বলেছিলেন কেবল দুটি শব্দ, ‘টার্নিং উইকেট’। উইকেট নিয়ে সরাসরি উত্তর না দিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেছিলেন, স্কোয়াডে ছয় স্পিনার দেখেই তো বোঝার কথা। স্বাগতিক হওয়ায় আগে এলেন মাহমুদউল্লাহ। জানালেন, পিচ থেকে শুষ্ক মনে হয়েছে তার কাছে, ‘আমার মনে হয়, এই উইকেটে ফল আশা করতে পারি। এই পিচ স্পিনারদের জন্য সহায়ক হবে। ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। ঢাকায় আমরা যে ধরনের উইকেট দেখতে পাই, তেমনই উইকেট মনে হল। ত্রিদেশীয় সিরিজেও দেখবেন বোলারদের জন্য মোটামুটি সহায়তা ছিল। ঢাকার উইকেটে বোলারদের জন্য কিছু না কিছু সহায়তা থাকে।’
মিরপুরে শেষ দুটি টেস্টের কোনোটিই পঞ্চম দিন পর্যন্ত খেলা যায়নি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট শেষ হয়েছিল তৃতীয় দিনে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চতুর্থ দিনে। এবার কতদিন যাবে? এর উত্তরে মাহমুদউল্লাহর ‘ডিপ্লোমেটিক’ উত্তর, ‘আমার পক্ষে এটা বলাটা কঠিন। উত্তর দিতে পারবেন পিচ কিউরেটর। ঢাকা টেস্টে সব সময় ফল দেখতে পারি, এটা ভালো। আপনি যদি চ্যালেঞ্জ নিতে পারেন, স্কিল কাজে লাগান আপনার দিকে ফল যাবে। অনেকগুলো ভুল করেন, প্রতিপক্ষ দল এগিয়ে থাকবে।’
আর দীনেশ চান্দিমালের অভিযোগ, বাংলাদেশ সফরে এখন পর্যন্ত স্পোর্টিং উইকেট পাননি তারা। লঙ্কান অধিনায়কের কাছে মিরপুরের উইকেট বাজে। চট্টগ্রামের উইকেট বোলারদের জন্য দুঃস্বপ্ন, ‘আমরা ত্রিদেশীয় সিরিজে দেখেছি মিরপুরের পিচ খুব বাজে ছিল। সেটা স্পিনারদের জন্য ভালো ছিল কিন্তু ব্যাটসম্যানদের জন্য নয়। এখানে খেলা ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। উইকেট দেখে শুষ্ক মনে হয়েছে। এই উইকেটে ফল হবে। এটা চট্টগ্রামের মতো হবে না। চট্টগ্রামের উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য ছিল খুব ভালো। বোলারদের জন্য ছিল দুঃস্বপ্ন।’

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টেস্ট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ