Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অনিরাপদ চবির শাটল ট্রেন! পাথর নিক্ষেপে প্রতিনিয়িত দুর্ঘটনা

| প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চবি সংবাদদাতা : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনে প্রতিনিয়িত এলোপাতাড়ি ইট পাথর নিক্ষেপ করা হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো শিক্ষার্থী চোখ-মুখে, মাথায়, কিংবা শরীরে ইট পাথর লেগে আহত হওয়ার মত ঘটনা ঘটছে। গত বৃহস্পতিবার রাতের শাটল ট্রেনেও ইমরান নামের এক শিক্ষার্থী আহত হন পাথরের আঘাতে। এতে তার মাথা ফেটে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীর যাতায়াতে অন্যতম বাহন এই শাটল ট্রেন। চবি শিক্ষার্থীদের প্রাণ ভোমরা এই শাটলে বগি সংকট, ছিনতাই, ইট পাথর নিক্ষেপ থেকে শুরু করে বহিরাগতদের উৎপাতসহ আছে আরো নানা সমস্যা। তবে আসা যাওয়ার পথে শাটলে ইট পাথর নিক্ষেপের ঘটনা এখন শিক্ষার্থীদের শঙ্কিত করে তুলেছে। কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না এই ইট পাথর নিক্ষেপ। আর এসব কারণে শাটল ট্রেন চবি শিক্ষার্থীদের জন্য অনিরাপদ হয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম বটতলী রেল স্টেশন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করা শাটল ট্রেনে একাধিক স্থান থেকে ইট পাথর নিক্ষেপ করা হয়। তার মধ্যে বিবির হাট, ক্যান্টনমেন্ট এলাকা, ষোল শহর, ঝাউতলা এলাকা অন্যতম। সকালে ক্লাস করার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে রওনা হয়ে শাটলে ছোড়া পথরের আঘাতে গুরুতর জখম হওয়া। বিকালে ক্যাম্পাস থেকে শহরে টিউশনি করার জন্য যাওয়ার সময় পাথর লেগে জখম হচ্ছে অনেকে। আবার ষোল শহর এলাকার টং দোকান থেকে শাটলে থাকা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে পানি মারারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, রেল লাইন এলাকার বিভিন্ন বস্তি ও আশপাশের এলাকায় বসবাসকারী টোকাই ও বখাটেরাই মূলত এসব পাথর নিক্ষেপের সাথে জড়িত। হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী সায়মন ভূঁইয়া ক্ষোভের সাথে জানান, নতুন ভর্তি হয়ে স্বপ্নের ক্লাসে বসার আগেই চলতি ট্রেনে ঢিলে আহত হয়েছি । ক্যাম্পাসের পথে ২টা ৫০ মিনিটে ট্রেন বস্তি এলাকায় আসলে শুধু দেখলাম আবছায়ার মতো হাতে ইট ১ সেকেন্ড না যেতেই মাথার উপর ইট আর কাচের টুকরা পরে আর আমি কিছু জানিনা। চবি মেডিকেল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বেঁচে আছি। তবে এতটুকু বলব আর কোন মা বাবার চেখে পানি ঝড়ার আগে পদক্ষেপ নিন।
ইট পাথর নিক্ষেপের বিষয়ে ফিজিক্যাল এডুকেশান এন্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী তুষার ইব্রাহিম জানান, কয়েকদিন আগে আমি আর আমার বন্ধু শহর থেকে বিকাল ৩.৫০ মিনিটের ট্রেনে ক্যাম্পাসে ফিরছিলাম। আমাদের ট্রেন ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় পৌঁছলে হঠাৎ কোন দিক থেকে যেন একটা পাথর এসে আমার পাশে বসে থাকা বন্ধুর চোখের ঠিক উপরে লাগে সাথে সাথে রক্ত বের হয়ে আসল। ওর চোখ এখনও ভালো হয়নি কালও ওর জন্য ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি যত দ্রæত সম্ভব এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হোক। প্রশাসনিকভাবে এ সমস্যাগুলার সমাধান করা যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী বলেন, শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তাতো পাহারা দেয়া সম্ভব নয়। এসব বন্ধ করার জন্য রেল লাইনের আশপাশের মানুষগুলার সচেতনতা প্রয়োজন। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে। শাটল ট্রেনে বহিরাগতদের উৎপাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, রেলে নিরাপত্তার জন্য রেলওয়ের বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে। এছাড়া আমরা নিয়মিত চেক করে থাকি। যেকোনো সময় তথ্য পেলে আমরা অভিযান চালাতে প্রস্তুত। চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি এস এম শহিদুল ইসলাম জানান, রেল লাইনের দুই ধারে দশ ফিট করে জায়গা আমাদের আওতায় সে ক্ষেত্রে আমাদের বেশি কিছু করার থাকে না । তবে যে যে এলাকা থেকে ইট পাথর নিক্ষেপ করা হয় সে সব এলাকার থানার ওসিকে আমরা ইনফর্ম করে থাকি। এছাড়া আমরা মাঝে মাঝে শাটলে ইট পাথর না ছোড়ার জন্য বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান, লিফলেট বিতরণ করে থাকি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ