Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রত্যাশার বইমেলা

| প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

এহসান আব্দুল্লাহ : বইমেলা কি শুধুই সাড়ি সাড়ি বইয়ের একটি মেলা? নাকি এটি এর বাহিরেও আরো অনেককিছু। বইমেলা নিয়ে কি ভাবছে তরুণরা? কেমন বইয়ের সংগ্রহ তারা দেখতে চাচ্ছেন বা কেমন বই পড়তে চাচ্ছেন তারা? ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অরুণিমা শিকদার বলেন, বইমেলা আসলে শুধু বইমেলা না। এটি আসলে একটি সাহিত্য খনি। বলা যায় চিন্তাশীল পাঠক থেকে শুরু করে সাধারণ পাঠক সকলের মনের খোরাক আর চিন্তার উপাদান এখান থেকেই যোগান দেয়া হয়।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রায়হান উজ জামান বলেন, বইমেলায় প্রত্যাশা আসলে অনেক। আমি মনে করি বইমেলায় লেখকরা বাণিজ্যিক উপন্যাস না লিখে তথ্য সমৃদ্ধ ও যুক্তির ধার দিয়ে সাজিয়ে নতুন কিছু খোরাক পাঠকদের জন্য উপহার দিতে পারেন। যাতে আগামী প্রজন্ম কিছু সম্পদ সংগ্রহ করতে পারে। এরকমই জানাচ্ছিলের অধিকাংশ তরুণ পাঠকরা। তাদের প্রত্যাশা বইমেলায় শুধু মাত্র বাণিজ্যিক লেখনী নয় সেই সাথে তথ্যবহুল ও গবেষণাধর্মী বই ও সমান তালে প্রচুর পরিমাণে আনতে হবে।
তরুণদের মতে উপন্যাস লেখার ক্ষেত্রে নতুন লেখকরা যাতে সচরাচর তরুণ তরুণীদের প্রেম বিরহ এইগুলোকে প্রাধান্য না দিয়ে সামাজিক নানা সমস্যা, সম্ভাবনা ও বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন যাতে আমরা ভবিষ্যতে এইসব লেখনীর মাধ্যমে বর্তমানের সময়কে বিচার করতে পারবো এবং সেই সাথে এইসব লেখনী তরুণদের মাঝে সচেতনতা জাগাতেও ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
কথা বলে জানা যায় আহমদ ছফা, মুজতবা আলী, সৈয়দ শামসুল হক, শামসুর রহমানের মতো লেখকদের অনুপস্থিতিতে বর্তমানে ভালো মানের লেখক খুব কম। তাই সে ক্ষেত্রে প্রকাশকদের ও বেছে বেছে ভাল লেখনী বের করে এনে নতুনদের প্রচারে সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এটি লেখদের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি প্রকাশকদের জন্যও। ভালো লেখকরা উঠে আসলেই প্রকাশকরা পাঠকদের কাছে আরো ভালো বই উপহার দিতে পারবেন।
প্রকাশকরাও জানালেন তাদের কথা। অনেক প্রকাশকই মনে করেন, লেখকরা বাজারের চাহিদা অনুযায়ী বই লিখে থাকেন। ফলে চিন্তাশীল পাঠকরা তাদের চাহিদা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে তাদের মুখে আশার বাণী হলো বর্তমানে অনেক লেখকই উঠে আসছেন খুব মানসম্মত লেখা নিয়ে। ফলে তারা আশা করেন প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদ, সৈয়দ শামসুল হক, শামসুর রহমান ও বর্তমানে আল মাহমুদ, মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর যুগের পর তারাই বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনের হাল ধরবেন।
অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক মিলক কান্তি নাথ বলেন, আসলে সাহিত্য তো পর্যালোচনা করবেন পাঠকরা যে লেখক কেমন লিখেন। সেক্ষেত্রে লেখকদের মাথায় রাখতে হবে শুধু বাজারে কাটলেই চলবেনা বরং সেই লেখা যাতে একটি প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে বয়ে যেতে পারে সেই দিকে নজর দেয়া। কোন বই লিখা হলো যা এক বছর বা দুই বছর খুব ভালো চললো পরে সেই বইয়ের কথা মানুষ ভুলেই গেল তাহলে তা দিয়ে আমি মনে করিনা বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশা পূরণ হবে।
মেলায় গতকাল নতুন বই এসেছে ১৪১টি।
গতকাল বিকেল ৪:০০টায় মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের অর্থনীতি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, সেলিম জাহান এবং ফাহমিদা খাতুন। সভাপতিত্ব করেন হাসনাত আবদুল হাই।
প্রাবন্ধিক বলেন, বাংলাদেশ আজ আর্থসামাজিক উন্নয়নের দোরগোড়ায়। পদ্মাসেতু দৃশ্যমান, রেলের ব্রডগেজিকরণ ও ডাবল লাইনিং অচিরেই হবে, ২০১৮ সালেই ২০০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের হাতছানি। বাংলাদেশ পাঁচ উন্নয়ন সহযোগী চীন, জাপান, ভারত, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও বিশ্বব্যাংক চার হাজার কোটি মার্কিন ডলারের সমতুল্য আর্থিক ঋণ সুবিধার প্রতিশ্রæতি দিয়ে বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় তাদের আস্থা প্রকাশ করেছে। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে কল্যাণ রাষ্ট্র সোনার বাংলা গড়ার সম্ভাবনা বাংলার দিগন্তে উঁকি দিচ্ছে। আলোচকবৃন্দ বলেন, জনমানুষের উন্নয়নই অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল বিষয়। টেকসই উন্নয়নের জন্য আমাদের শ্রমজীবী মানুষদের গুরুত্ব হবে, মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এজন্য শিক্ষার মান উন্নয়নেরও কোন বিকল্প নেই। এছাড়া কর্মসংস্থানভিত্তিক উন্নয়নই পারে বেকারত্ব সমস্যার অবসান ঘটিয়ে উন্নয়নকে টেকসই ও সুষম করতে। তারা বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন যে গতিতে এগিয়ে চলেছে তাতে আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত দ্রæততম সময়ের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসা।
আজ বিকেল ৪:০০টায় মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাস : বহুত্ববাদ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের চার রাষ্ট্রনীতি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আকসাদুল আলম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন সৈয়দ আনোয়ার হোসেন ও মাহবুবুল হক। সভাপতিত্ব করবেন শামসুজ্জামান খান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বইমেলা

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ