Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঈশ্বরগঞ্জের শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ শিক্ষার্থী জানে না ২১ ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য ও ইতিহাস

| প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) থেকে আতাউর রহমান: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২১ ফেব্রæয়ারি ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হয় আশপাশের কোনো শহীদ মিনারে। অনেকে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করে তাতে শ্রদ্ধা জানান।
উপজেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলায় ১৪১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৩টি মাদরাসা ও কারিগরি ও নিম্নমাধ্যমিকসহ ৩৬ উচ্চ বিদ্যালয় ও চারটি কলেজ আছে। এর মধ্যে কলেজ, মাধ্যমিক ও মাদরাসাগুলোর ৫০ ভাগ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকলেও বাকি ৫০ ভাগ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এ ছাড়া ১৪১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শতাধিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই।
জানা গেছে, কিছু প্রতিষ্ঠান অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে তাতে শ্রদ্ধা জানায়। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে বাঁশ ও মাটি দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে সেখানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আবার এর বিপরীত দিকও আছে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি আরাম আয়েশে ছুটি উপভোগ করে। যারা পালন করেন তারাও গুটিকয়েক ছাত্রছাত্রী নিয়ে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে দায়িত্ব পালনে ইতি টানেন। ২১ ফেব্রুয়ারি নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোতে তেমন কোনো আলোচনার ব্যবস্থা না থাকায় প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের প্রাথমিক পর্যায়ের অনেক শিক্ষার্থী ২১ ফেব্রæয়ারির তাৎপর্য ও ইতিহাস জানে না।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে সেগুলোও অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। প্রায় প্রতিটি শহীদ মিনার স্তম্ভ ধুলায় মলিন হয়ে আছে কোনো কোনটিতে পলেস্তারাও খসে পড়ছে। এর মধ্যে বেশ ক’টা করুণ অবস্থায় রয়েছে। কোনো কোনটিতে শহীদ বেদীতে পর্যন্ত আগাছা জন্মেছে। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আবর্জনা। শহীদ মিনার থাকা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা জানান, ২১ ফেব্রুয়ারির আগে শহীদ মিনার ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হয়। এরপর কেউ আর ওই পথে পা মাড়ান না। কিন্তু সারা বছর নিয়মিত পরিষ্কার করা না হওয়ায় মাঝেমধ্যে কিছু আগাছা জন্মে। অযত্নে অবহেলায় সারা বছর পড়ে থাকায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে শহীদ মিনার। শহীদ মিনার না থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানান। সাখুয়া দক্ষিণ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আঙ্গুরা বেগম বলেন, প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারির দিন শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে যেতে হয়।ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কথা চিন্ত করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি শহীদ মিনার স্থাপন দরকার।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক বলেন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা উচিত। কারণ, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার দেখে মাতৃভাষা সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করবে। কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে বাজেট না থাকায় বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছফিউল্লাহ সরকার জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ে ৫০ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। যেগুলোতে নেই সেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের তাগিদ দেয়া হয়েছে। তবে ঠিক কতগুলো প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই তিনি তা সঠিকভাবে বলতে পারেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শহীদ মিনার

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ