Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ফুটপাথ তুমি কার

| প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ফুটপাত এখন আর ফুটপাত নেই, বেশিরভাগ চলে গেছে বিভিন্ন দখলদার ও হকারদের কব্জায়। কোনো সড়কের ফুটপাতে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। কোনো ফুটপাতের ওপর তৈরি করা হয়েছে গ্যারেজ, চায়ের দোকান, ওর্য়াকশপ, বস্তিঘর, ভাঙ্গারির দোকান। আবার কোনো ফুটপাতে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরির জন্য রাখা হয়েছে সরঞ্জাম, ইট, বালু, রড ইত্যাদি। কোনো ফুটপাত স্থানীয় দোকানদাররা দীর্ঘদিন ধরে তাদের নিজেদের কাজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করছেন। ঢাকা শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা গুলিস্তানের ফুটপাত পুরোটাই হকারদের দখলে। গুলিস্তান এলাকায় যে ফুটপাত আছে তা দেখে যেন বোঝারই উপায় নেই! একথা সত্যি যে, মাঝে মধ্যে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযান চালানো হয়। কিছুক্ষণের জন্য হলেও ফুটপাতগুলি চলাচলের উপযোগী হয়। কিন্তু কিছু দিন না যেতেই ফের দখল হয়ে যায় উদ্ধারকৃত ফুটপাত। কেন এমনটি হয় তা সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারেন।
ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় পথচারীদের বাধ্য হয়েই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। এর ফলে পথচারীদের দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। এক তথ্য মতে, ঢাকার রাস্তায় বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষ মারা যায় তার ৫৮ শতাংশই পথচারী। ফুটপাতে আবার নতুন যন্ত্রণা দেখা দিয়েছে, আর তা হলো ফুটপাতে মোটরসাইকেল। রাস্তায় যানজট বা মোড়ের সিগন্যালে লালবাতি জ¦লার সঙ্গে সঙ্গেই পথচারীকে থামিয়ে উচ্চশব্দে হর্ন বাজিয়ে ফুটপাতের পাশ দিয়ে মোটরসাইকেল চালকরা উঠে পড়েন ফুটপাতের ওপর। ফলে এ অবস্থায় পথচারীদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়। যারা ফুটপাত দিয়ে হাঁটেন তাদের জন্য এটা এক চরম বিরক্তির কারণ। ২০১২ সালে হাইকোর্ট ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এসব চালকের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া মোটরযান অধ্যাদেশ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ অ্যাক্ট অনুযায়ী এ ব্যাপারে দায়ী ব্যক্তির জেল ও জরিমানার বিধান আছে। বাস্তবে আইন থাকলেও আইনের প্রয়োগ নেই। পুলিশ এসব ঘটনা যেন দেখেও দেখে না!
রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে ফুটপাত দখলমুক্ত করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। পরিচ্ছন্ন সবুজ ঢাকা গড়তে উভয় সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। ঢাকার ফুটপাত দখলমুক্ত রাখা গেলে অনেক দিক থেকে সুবিধা পাওয়া যাবে। যেমন- ১. যানজট কিছুটা হলেও কম হবে, মানুষ গণপরিবহন চড়ে স্বস্তি পাবে। ২. ঢাকা শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। ৩. মানুষ ফুটপাত দিয়ে পায়ে হেঁটে স্বল্প দূরত্বে পৌঁছাতে পারবে। ৪. যানজটে আটকা পড়লে মানুষ ইচ্ছে করলে গাড়ি থেকে নেমে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে পারবে। ৫. পথচারীদের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা কমে যাবে ইত্যাদি

সাধন সরকার
ছাত্র, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন