Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নতুন সঙ্কটে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক

| প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ‘দন্ড সুদ’ নিয়ে নতুন সংকটে পড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ইসলামী ব্যাংকিং নিয়মে গ্রাহকের ওপর আরোপিত ‘দন্ড সুদ’ দরিদ্রদের মাঝে ব্যয় করতে হয়। কিন্তু ব্যাংকটি দন্ড সুদের ৮৫ কোটি টাকা আয় খাতে নিয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ অর্থ আয় খাত থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু চরম অর্থ সংকটে থাকা ব্যাংকটি গত আট বছরে ৭৬৬ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। এ অবস্থায় নতুন করে ৮৫ কোটি টাকা আয় থেকে বাদ দেওয়ার মতো সক্ষমতা ব্যাংকের নেই। বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ ক্ষেত্রে শিথিলতা দেখাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তারা অনুরোধ জানিয়েছে।
নির্ধারিত মেয়াদে ঋণের টাকা ফেরত না এলে ব্যাংকগুলো আরোপিত মুনাফা বা সুদের বাইরে জরিমানা হিসেবে গ্রাহকের ওপর ‘দন্ড সুদ’ আরোপ করে। প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর এ অর্থ আয় খাতে নেওয়ার সুযোগ থাকলেও ইসলামী ব্যাংকগুলো দান করে থাকে। সাধারণত ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো আলাদা ফাউন্ডেশন করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির (সিএসআর) আওতায় দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করে। তবে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক নিয়ম লঙ্ঘন করে ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোট ৮৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা আয় খাতে নিয়েছে। ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে এ অনিয়মের তথ্য ধরা পড়ার পর তা আয় খাত থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির ৯৩৬ কোটি টাকা আমানতের বিপরীতে ঋণ রয়েছে ৮৮৪ কোটি টাকা। সর্বশেষ হিসাবে গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির মোট ঋণের প্রায় ৭৯ শতাংশ তথা ৭০৯ কোটি টাকা খেলাপি। এ সময়ে ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা।
বড় ধরনের অনিয়মের কারণে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে ২০০৬ সালে ওরিয়েন্টাল ব্যাংক অধিগ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০০৭ সালে ব্যাংকটি পুনর্গঠন করে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক করা হয়। এর মালিকানা কিনে নেয় মালয়েশিয়াভিত্তিক আইসিবি গ্রুপ। মালিকানা পরিবর্তনের প্রধান শর্ত ছিল, পাঁচ বছরের মধ্যে আমানতকারীর সব পাওনা মিটিয়ে দিতে হবে। ধাপে ধাপে আমানতকারীর অর্থ ফেরত দেওয়ার একটি স্কিমও করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। স্কিমটি ২০০৮ সালের ৫ মে থেকে কার্যকর হয়েছে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময় শেষ হয় ২০১৩ সালের ৪ মে। তবে মুনাফা করতে না পারায় যথাসময়ে পাওনা পরিশোধ করতে পারেনি ব্যাংকটি। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে ২০২১ সাল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ