Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে ভুয়া এসি ডিবি গ্রেফতার

আইজিপির নামে প্রতারণা!

| প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : ‘আমি গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার (এসি-ডিবি)। পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) পিএস আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এসআই পদে চাকরি দেওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব কিছু না।’ এভাবে নিজের গুরুত্ব তুলে ধরে দুই যুবককে এসআই পদে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
বিষয়টি আরও বিশ্বাসযোগ্য করতে চাকরিপ্রার্থী দুই যুবককে নিয়ে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরেও যান তিনি। জানান আইজিপির সাথে কথা হয়েছে চাকরি হবে। ওই দুইজন ঢাকা থাকাকালে চাকরি নিশ্চিত জানিয়ে নেন নগদ দেড় লাখ টাকা। আবার এসআই পদে নিয়োগের প্রাথমিক বাছাইয়ের দিন নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনে হাজির তিনি। চাকরিপ্রার্থী দুইজনকে আলাদা করে মাঠের একপাশে নিয়ে তাদের কাছ থেকে আরও দুই লাখ টাকা নেন। এরমধ্যে আইজিপির কথিত পিএস সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ঢাকার ঠিকানায় ওই দুই যুবকের মাধ্যমে পাঠানো হয় সাড়ে ১১ হাজার টাকার শুটকি। কিন্তু এতো ঘুষ উৎকোচের পরও নিয়োগপত্র না পাওয়ায় ওই দুই যুবকের অভিভাবক পুলিশের দ্বারস্ত হন।
তাদের মামলার ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করে ভূয়া এসি ডিবি মোঃ ফিরোজ আলম চৌধুরী ওরফে আলম সাহেবকে (৬০)। তাকে ধরতে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসআই পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে তার বিরুদ্ধে আরও অনেকের সাথে প্রতারণার অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। আলম সাহেবের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই থানাধীন সাহেরখালী গজারিয়ায়। তিনি ওই এলাকার বড় বাড়ির মরহুম গোলাম সামদানীর ছেলে। শনিবার রাতে সিএমপির (ডিবি-পশ্চিম) উপ-কমিশনার এ এ এম হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
হুমায়ুন কবির ইনকিলাবকে বলেন, ফিরোজ আলম চৌধুরী নিজেকে ডিবি পুলিশের এসি এবং তার সহযোগীকে আইজিপির পিএস পরিচয় দিয়ে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ করিয়ে দেবে বলে প্রতারণা করেছেন। নগরীর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী হাজী মোঃ সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন তার বন্ধুর ছেলে মোঃ মোরশেদ এবং তৌহিদুল ইসলামকে এসআই পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের নিয়ে ঢাকায় যান। পরে তাদের নিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ঘোরাফেরা করে আশ্বস্থ করেন, আইজিপির সাথে কথা হয়েছে, চাকুরী হবে।
গত ৬ ফেব্রæয়ারি ঢাকাস্থ ইমপেরিয়াল হোটেলে অবস্থানকালে চাকরি হয়েছে জানিয়ে তাদের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা গ্রহন করেন সিরাজুল ইসলাম। পরবর্তীতে ১৩ ফেব্রæয়ারি নির্ধারিত এসআই নিয়োগের প্রাথমিক বাছাইয়ের সময়ে তাদের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে কৌশলে একপাশে দাড় করিয়ে রেখে আরো দুই লাখ টাকা গ্রহণ করেন। আইজিপির পিএস পরিচয় দানকারী আবুল কাশেম চৌধুরীর ঠিকানায় সাড়ে ১১ হাজার টাকার শুটকি কুরিয়ারের মাধ্যমে গ্রহণ করেন। তিনি জানান এরপর পহেলা মার্চ থেকে তাকে আর ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে তিনি নগরীর কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন।
মামলার সূত্র ধরে প্রতারণার অভিযোগে ফিরোজ আলম চৌধুরীকে গ্রেফতার করার পর তিনি পুলিশের সাথেও প্রতারণা শুরু করেন বলে জানান অভিযানে অংশগ্রহণকারী এক কর্মকর্তা। পুলিশকে প্রতারণা করে পালানোর কৌশল হিসাবে তিনি নিজে নিজের জিহŸায় কামড় দিয়ে রক্তবমির ভান করে। এতে তার জিহবার অনেকটা কেটে যায়। তাকে পুলিশ পাহাড়ায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফিরোজ আলম অপকর্মের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন বলে জানায় পুলিশ। কৌশল হিসাবে প্রতারণার সময় পুলিশের ক্যাপ (পি-ক্যাপ) ব্যবহার করেন তিনি।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ