Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পূর্র্ব ঘৌতা-আফরিন পরিস্থিতি শোচনীয়

একক পদক্ষেপের হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের, মানব-ঢাল হতে চলেছে বেসামরিকরা, লাশ আর লাশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

হামলা জর্জরিত পূর্ব ঘৌতা ও আফরিন পরিস্থিতি শোচনীয় হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, তুর্কি বাহিনীর অব্যাহত হামলা থেকে আফরিন শহরকে রক্ষা করতে মানব-ঢাল হওয়ার পরিকল্পনা করছেন স্থানীয় বেসামরিক নাগরিকরা। কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা লড়াইয়ের পর তুর্কি বাহিনী ও ফ্রি সিরিয়ান আর্মি (এফএসএ) যোদ্ধারা এখন শহরটির বাইরে পৌঁছেছে। যেকোনো মুহূর্তে শহরে প্রবেশ করবে। তুর্কি সামরিক বাহিনী ও এর মিত্র বাহিনীর কাছে বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রাম হারায় কুর্দি মিলিশিয়ারা। আল-জাজিরা’র এলান ফিশার বলেন, আচমকা হামলার তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সবাই বিস্মিত। তিনি আরো বলেন, কুর্দি এলাকাগুলোর বাসিন্দাসহ তুর্কি থেকেও ওয়াইপিজি’র সমর্থকরা মানব-ঢাল হতে আফরিনে আসার পরিকল্পনা করছে। যাতে করে তুরস্ক আফরিনে হামলা চালাতে না পারে। এদিকে, হাসপাতালের হিমাগারের অভাবে সারি সারি লাশ ফেলে রাখা হয়েছে। সিরিয়ার পূর্ব ঘৌতায় সরকারি বাহিনীর অব্যাহত বোমা বর্ষণে নিহতদের লাশ দাফনেরও সুযোগ পাচ্ছেন না স্বেচ্ছাসেবীরা। বোমা বর্ষণ থামলে দাফন করা হবে বলে সারিবদ্ধভাবে লাশ রেখে দেয়া হচ্ছে। চারদিকে লাশ আর লাশ। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা লাশগুলো এক জায়গায় করতে পারলেও দাফন করা সম্ভব হচ্ছে না। পূর্ব ঘৌতায় সিরিয়ান স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। মিত্র রুশ বাহিনীর সহায়তায় ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ঘৌতায় অভিযান চালাচ্ছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বাহিনী। সংবাদ মাধ্যম জানায়, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যদি সিরিয়ার পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে পদক্ষেপ নেবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি নিকি হ্যালি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক খবরে জানিয়েছে, গত সোমবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানের কথা তুলে ধরেন নিকি হ্যালি। সিরিয়ার দামেস্ক ও পূর্ব ঘৌতায় ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ সতর্কবার্তা দিয়েছেন নিকি হ্যালি। তিনি জানান, গত বছরে রাসায়নিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় নিজ উদ্যোগেই সিরিয়ার বিমানঘাঁটিতে হামলা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। যদি একলাই চলতে হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এ রকম হামলা আবার করতে সক্ষম বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস জানান, রাশিয়ার সমর্থনে আসাদ বাহিনী বিদ্রোহী দমন অভিযানে সেখানকার অবস্থা শোচনীয়। এখনো দামেস্ক, ইদলিব, আফরিন ও পূর্ব ঘৌতায় চলছে সহিংসতা। এসব এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রমও ঠিকমতো চালানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতির খবর আমাদের জানা নেই। অপর এক খবরে বলা হয়, ইস্টার্ন ঘৌতায় সরকারি বাহিনী, রাশিয়া, ইরান ও অন্যান্য বাহিনীর সম্মিলিত হামলা ইতিমধ্যে কেড়ে নিয়েছে হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণ। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। বিদ্রোহীরা পিছু হটতে রাজি নয়। আর সরকারি ও জোট বাহিনীও হামলা থামাতে ইচ্ছুক নয়। দুই পক্ষের লড়াইয়ে প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছে নারী, শিশুসহ অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক। অন্যদিকে, আফরিন অঞ্চলে পিপল’স প্রটেকশন ইউনিটস (ওয়াইপিজি) নামে পরিচিত কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে তুরস্ক। বাহিনীটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দেখে তুরস্ক। যদিও, আইএস-বিরোধী লড়াইয়ে ওয়াইপিজি’কে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরিস্থিতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ