জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় পঞ্চগড়ে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের শীতবস্ত্র বিতরণ

দেশের মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের পেশাজীবী অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন পঞ্চগড় জেলা শাখার উদ্যোগে ইসলামের সেবায়
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের উত্তরপ্রদেশে দেওবন্দের ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলুম বিতর্কিত জাতীয়তাবাদী স্লোগান ‘ভারত মাতা কি জয়’-এর বিরুদ্ধে এক ফতোয়া জারি করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ইসলামে মাত্র এক আল্লাহর অস্তিত্ব বিরাজমান।
ফতোয়ায় বলা হয়েছে, ‘আমরা আমাদের দেশকে ভালোবাসি, কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এই দেশ আমাদের ঈশ্বর। ইসলামে আমরা এক আল্লাহতে বিশ্বাস করি এবং কাজেই ভারত মাতা কি জয় স্লোগান গাওয়া একজন মুসলমানের বিশ্বাসের পরিপন্থী।’ বিজেপি ও এর আদর্শিক পরামর্শদাতা আরএসএসের সাম্প্রতিক উগ্র কর্মকা-ের পরিপ্রেক্ষিতে দারুল ইফতার দুই দিনব্যাপী আলোচনার পর এই ফতোয়া দেয়া হয়। সারা ভারত থেকে আটজন ইসলামী বিশেষজ্ঞ নিয়ে দারুল ইফতা প্যানেল গঠিত।
ফতোয়ায় আরও বলা হয়, ‘অতীতেও স্কুলগুলোতে বন্দে মাতরম গান গাওয়া নিয়ে একই ধরনের বিতর্ক ওঠে। ওই গান গাওয়া ছাত্রদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়। আর এখন, ভারত মাতা কি জয় বলা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। দুটি প্রসঙ্গই একই ধরনের।’
দারুল ইফতা বিবৃতিতে বলেছে, ‘ভারত নিঃসন্দেহে আমাদের দেশ। আমাদের পূর্বপুরুষ ও আমরা এখানে জন্মেছি। আমরা আমাদের দেশকে ভালোবাসি। কিন্তু আমরা মনে করি না যে, এটি আমাদের ঈশ্বর।’
‘ইসলাম হিন্দু ধর্মের মতো নয়। এই ধর্ম একেশ্বরবাদী। ইসলাম বিশ্বাস করে এক আল্লাহর ধারণায়, যে আল্লাহর মূর্তি বা ছবি বানানো যায় না। হিন্দুদের একাংশের মতে ভারত মাতা হলো দেবী এবং তারা তার পূজা করে। আর সেই দেবীর আরাধনা করা মুসলমানদের জন্য হবে মুরতাদ হওয়ার শামিল এবং ইসলাম পরিপন্থী।’
ফতোয়ায় আরও বলা হয়, ভারতের সংবিধানে সকল নাগরিকের জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার দেওয়া হয়েছে। আর তাই কোনো বিষয় নাগরিকদের ধর্মীয় চেতনার পরিপন্থী হলে তা কোনো সরকার বা সংগঠন জোর করে চাপিয়ে দিতে পারে না। দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়ায় মুফতি হাবিবুর রহমান, মুফতি মাহমুদ হাসান বুলন্দশাহরি, মুফতি জইনুল ইসলাম কাশেমি, মুফতি ফখরুল ইসলাম কাশেমি, মুফতি ওয়াকার আলী, মুফতি আসাদুল্লাহ, মুফতি নো’মান সীতাপুরি ও মুফতি মুসআব সই করেছেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এআইএমআইএম এমপি আসাদ উদ্দিন ওয়াইসি বলেন, আমার গলায় ছুরি ধরলেও ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলব না। এরপর তাকে মহারাষ্ট্রের রাজ্যসভা অধিবেশন থেকে বহিষ্কার করা হয়। ভারতের যুবক-যুবতীদের ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দেয়া শিখতে হবেÑআরএসএস প্রধান মোহন ভগত এমন বিবৃতি দেয়ায় তার কড়া সমালোচনা করেন আসাদ উদ্দিন।
এ নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হলে আসাদ উদ্দিন ওয়াইসির জিভ কেটে আনলে এক কোটি টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা করেন বিজেপির যুব নেতা ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা নামে সংগঠনের কাশী এলাকার আঞ্চলিক ভাইস-প্রেসিডেন্ট শ্যাম প্রকাশ দ্বিবেদী।
কয়েকদিন আগে এ সংক্রান্ত এক বিবাদের জেরে দিল্লিতে তিন মাদ্রাসা ছাত্রকে বেধড়ক মারধর করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। এদিকে মুসলিমদের পাশাপাশি শিখদের শিরোমণি অকালি দল (অমৃতসর) নেতা সিমরণজিৎ সিং মান বলেছেন, শিখরা ভারত মাতা কি জয় স্লোাগান দিতে পারবে না। তিনি বলেন, শিখরা নারীদের কোনোভাবেই পুজো করে না, এজন্য তারা ভারত মাতা কি জয় বলবে না। সিমরণজিৎ সিং মান বলেন, শিখরা ¯্রফে ওয়াহে গুরুজি কী খালসা এবং ওয়াহে গুরুজি কী ফতেহ বলতে পারে। তারা মায়ের সম্মান করেন, কিন্তু পুজো করেন না। যদি শিখরা ভারত মাতা কি জয় বলে তাহলে তারা হিন্দুদের মধ্যে শামিল হবে। শিখ নেতা মান অবশ্য এখানেই থেমে থাকেননি। তিনি একধাপ এগিয়ে বলেন, বিজেপির জানা উচিত, শিখরা বন্দেমাতরমও বলতে পারে না।
প্রসঙ্গত, ভারত মাতা মা দেবী হিসাবে ভারতের জাতীয় প্রকৃতি বিবেচিত। এই দেবী সকল ভারতীয় সংস্কৃতি এবং বিশেষ করে দুর্গা দেবীর সংমিশ্রণ। ভারতের জাতীয় পতাকা হাতে জাফরানি শাড়ি পরা অবস্থায় একটি সিংহের পাশে তাকে সাধারণত চিত্রায়ন করা হয়। সূত্র : ইনডিয়া টুডে ও ওয়েবসাইট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।