Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে শপথ নিয়ে সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে : মির্জা ফখরুল

হাজার হাজার নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে রাজধানীতে বিএনপির বর্ণাঢ্য র‌্যালি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র‌্যালি করেছে বিএনপি। র‌্যালিতে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের হাতে হাতে জাতীয় পতাকা, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি। মুখে মুখে কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ¯েøাগান। ব্যানার, ফেস্টুন, ঘোড়ার গাড়ি, ব্যান্ড পার্টিসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নিয়েছিলেন র‌্যালিতে। র‌্যালি পূর্ব সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্র ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে শপথ নিয়ে সারাদেশে সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে নেতা-কর্মীদের শপথ নিয়ে সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। মানুষের মৌলিক অধিকার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য সোচ্চার দাবি তুলি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সারাদেশে আজ মানুষের কোনো অধিকার নেই। যে চেতনা নিয়ে আমরা গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম, সেই চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়ে সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। আজকে আমাদের শপথ নিতে হবে- আমরা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, মানুষের অধিকার রক্ষায় বিশ্বাস করি, তাহলে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্ত করতে সোচ্চার হব। নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করার দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করে সংসদ ভেঙে দিয়ে ‘দল নিরপেক্ষ সরকারে’র অধীনে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। একই সঙ্গে খালেদা জিয়াসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং অবাধ পরিবেশ নিশ্চিত করারও আহŸান জানান তিনি।
গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুর ২টায় নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এই শোভাযাত্রা শুরু হয়ে কাকরাইল পেরিয়ে আধা ঘণ্টা পর শান্তিনগর মোড়ে পৌঁছে পুলিশের বেষ্টনিতে আটকে যায়। তখন সেখানে বক্তব্য দিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি টানেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে র‌্যালিতে অংশ নিতে বেলা ১১টার পর থেকেই নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হতে থাকেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যানার, ফেস্টুন হাতে খÐ খÐ মিছিল নিয়ে তারা নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকেন। হাতে হাতে জাতীয় পতাকা, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি নিয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন তারা। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত হতে থাকে পুরো এলাকা। সময় বাড়ার সাথে সাথে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে নয়াপল্টন এলাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। এসময় বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, ছাত্রদল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (ড্যাব), ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (এ্যাব), এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন এই শোভাযাত্রায়। র‌্যালি শুরু হওয়ার পূর্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে একটি ট্রাকের উপর দাঁড়িয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বক্তব্য রাখেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, আমরা দেশের সকল মানুষ শান্তি চায়, গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে চায়। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে, মিথ্যা মামলায় আটক সকল রাজবন্দির মুক্তি দিতে হবে। নির্বাচনের আগে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতসহ বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়ে তিনি বলেন, একটি নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করেতে হবে। পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বর্তমান সময়ে মানুষের কোনো অধিকার নেই দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যে চেতনা নিয়ে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, সেই চেতনার মূল বিষয়টি ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। বর্তমানে সেই চেতনাকে ধ্বংস করে, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে, সারা দেশে খুন, গুম, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন করে সরকার একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এর একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে আওয়ামী লীগ। মির্জা ফখরুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যিনি পাক বাহিনী হাতে বন্দি হয়েছিলেন, ৯ মাস যিনি নিগৃহীত হয়েছিলেন, যিনি গণতন্ত্রের জন্য সারা জীবন ধরে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন সেই নেত্রী আজকে কারাগারে। আজকে এই স্বাধীনতার দিনে আমাদের শপথ নিতে হবে, আমরা যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করি, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাস করি, তাদের শপথ নিতে হবে গণতন্ত্রকে মুক্ত করবার জন্য, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবার জন্য, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাসনে আছেন, হাজার নেতাকর্মী যারা কারাগারে আছেন তাদের মুক্তির জন্য। মির্জা ফখরুল বলেন, এদেশের মানুষ শান্তি চায়, তাদের অধিকার ফিরে চায়, গণতন্ত্রকে ফিরে চায় এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে। শত শত রাজবন্দি আছে তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে।
এসময় র‌্যালিতে অংশ নেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভুইয়া, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শামা ওবায়েদ, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরফত আলী সপু, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ। অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, আনোয়ার হোসেন, আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মামুনুর রশীদ, আসাদুজ্জামান আসাদ, আবুল কালাম আজাদ, হাফেজ আব্দুল মালেক, আলমগীর হাসান সোহান, নাজমুল হাসান প্রমুখ।



 

Show all comments
  • Abdullah ২৮ মার্চ, ২০১৮, ২:৪৯ এএম says : 0
    BNP ke aro active hote hobe
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গণতন্ত্র

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ