Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দু’মাস আগেই ভেঙে গেল পার্লামেন্ট

মালয়েশিয়ায় নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে নোংরা কৌশল অবলম্বনের অভিযোগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিজের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাসেরও বেশি সময় বাকি থাকতেই গতকাল শুক্রবার পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। নাজিব জানান, পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে তিনি মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান মোহাম্মদ ভি-এর কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন। আজ শনিবার থেকে এ ঘোষণা কার্যকর হবে। রাষ্ট্রীয় তহবিল আত্মসাতের অভিযোগ ওঠার পর ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে নাজিবের পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। গত বছরই নাজিব রাজাক নির্বাচনের ডাক দেবেন বলে আশা করা হয়েছিলো। তবে তা এড়িয়ে গেছেন নাজিব। অভিযোগ রয়েছে, নিম্ন আয়ের পরিবার ও গ্রাম্য ভোটারদের আকৃষ্ট করতে তাদের জন্য বাজেটে সংস্কার আনার জন্য সময় নিচ্ছিলেন মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী। তার বিএন জোটের জন্য নিম্ন আয়ের পরিবার ও গ্রাম্য ভোটারদেরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক বিশেষ ঘোষণায় নাজিব আবারও নির্বাচিত হলে দেশে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার অঙ্গীকার করেন এবং নাজিব রাজাক বলেন, ‘যদি বিএন জোট জয় পায়, তবে আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, দেশকে আরও বড় ও ব্যাপকতর রূপান্তরের মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাব।’ অপর এক খবরে বলা হয়, আর কয়েকদিন পরেই মালয়েশিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই নির্বাচনকে ঘিরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নজীব রাজাকের বিরুদ্ধে নোংরা কৌশল অবলম্বন ও প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, নিজের দলের সুবিধার জন্য তার সমালোচকদের টার্গেট করে কয়েকটি আইন পাস করিয়েছেন রাজাক। খবরে আরো বলা হয়, বেশ দ্রুতই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু তার আগে, গত সপ্তাহে অজস্র অভিযোগ অগ্রাহ্য করে তড়িঘড়ি করে পার্লামেন্ট থেকে দু’টি আইন পাস করিয়েছেন রাজাক। এর মধ্যে একটি হচ্ছে নির্বাচনী মানচিত্র পুনর্বিন্যস্ত বিষয়ক ও অপরটি হচ্ছে কথিত ভুয়া খবর বিষয়ক। বিশেষজ্ঞরা এই দুই আইনের প্রবর্তনকে নজীবের জন্য ‘মরিয়া পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। মালয়েশীয় রাজনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, জন ক্যাবট ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ব্রিজেট ওয়েলশ বলেন, ‘নজীব নিজের হাত শক্ত করার জন্য তার নির্বাহী ও আইন প্রণয়নের ক্ষমতার ব্যবহার করছেন। তিনি আরো জানান, অতিরিক্ত আইন, নির্বাচনে যাওয়ার আগে নিরাপত্তাহীনতা ও দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ। নজীব ২০০৯ সাল থেকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু সা¤প্রতিক বছরগুলোতে, ওয়ানএমডিবি দুর্নীতি কেলেঙ্কারি ও নিখোঁজ এমএইচ৩৭০ বিমানের বিষয়টি সামলানোতে ব্যর্থতার কারণে তার জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে। এর পাশাপাশি জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়াও তার জনপ্রিয়তা কমায় ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া, এবার নির্বাচনে তার প্রতিদ্ব›দ্বী হতে চলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ (৯২)। এতে করে নির্বাচনে নজীবের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আরো কমেছে। উল্লেখ্য, মাহাথির পূর্বে নজীবের পরামর্শদাতা ছিলেন। মালয়েশিয়ায় বরাবরই ক্ষমতাসীন সরকার নির্বাচনের আগে নির্বাচনী মানচিত্র পরিবর্তন করে থাকে। এটা বেশ পুরনো কৌশল। তবে নজীবের সামপ্রতিক পরিবর্তনগুলো ভিন্ন মাত্রায় পৌঁছেছে। পার্লামেন্টের মাধ্যমে সাংবিধানিক পরিবর্তন এসেছে ৪০ শতাংশের মতন। আর এই পরিবর্তন আনতে যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে তা অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগায়। দেশটির নির্বাচন কমিশন বর্তমানে নজীবের নিয়ন্ত্রণাধীন। কমিশনের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কমিশন সম্প্রতি, রাজনৈতিক ইউনিটগুলো বিভক্ত করে দিতে সহায়তা করেছে। এতে করে বিরোধীদল সমর্থন করে এমন দলগুলোকে ভেঙে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, নজীবের ভুয়া খবর বিষয়ক আইন পাস হয় মঙ্গলবার। এই আইন অনুসারে, ভুয়া খবর ছড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ছয় বছর পর্যন্ত কারাদন্ড দেয়া হতে পারে। তবে অনেকের ধারণা, এই আইন ব্যবহার করে নজীবের সমালোচকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। কেননা, কোনটা ভুয়া খবর তা ঠিক করবে সরকার। রয়টার্স, গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পার্লামেন্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ