Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘এটা পেনাল্টি ছিল না’

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নাটকীয় এক ম্যাচ জিতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে উঠেছে রিয়াল মাদ্রিদ। দিন শেষে এটাই শেষ কথা। কিন্তু তাই বলে এমন ম্যাচ নিয়ে আলোচনা,সমালোচনা আর চুল চেরা বিশ্লেষণ কি থেমে থাকে? সবচেয়ে বেশি ঘুরে ফিরে আসছে ইংলিশ রেফিারি মিচেল অলিভারের দেয়া সেই পেনাল্টির সিদ্ধান্তের কথা।
অলিভারের ঐ সিদ্ধান্তে পুরো ফুটবল বিশ্বই এখন দ্বিধা বিভক্ত। এই যেমন স্পেনের সাবেক রেফারি এডওয়ার্ড ইতুরালতে বলেছেন, ‘পেছন থেকে ধাক্কাটা যথেষ্ঠ (পেনাল্টির জন্য) ছিল না। পেনাল্টির বাঁশি বাঁজানো উচিত হয়নি।’
৯৩তম মিনিটে রোনালদোর হেডে নেয়া ক্রস পাস নাগালে নেয়ার চেষ্টায় ছিলেন ভাসকুয়েজ। কিন্তু পেছন থেকে ডিফেন্ডার মেধি বেনাশিয়া বাম পা বাড়িয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে ভাসকুয়েজের পিঠে ধাক্ক দেন। সেই ধাক্কা পেনাল্টির বাঁশি বাজানোর মত যথেষ্ঠ ছিল না বলেই ইতুরালতের অভিমত।
ম্যাচ শেষে বুফন তো রেফারিকে ‘হৃদয়হীনা’ বলে মন্তব্য করেন। ৪০ বছর বয়সী চিরসবুজ ইতালিয়ান গোলকিপারের মতে, ‘এটা দশ ভাগের এক ভাগও পেনাল্টি ছিল না। আমি জানি রেফারি দেখেছে কি হয়েছে। এটা নিশ্চিতভাবেই একটা সন্দেহজনক ঘটনা।’ রেফারির উদ্দেশ্যে বুফন বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আপনার বুকে হৃদয় নেই। সেটা আবর্জানায় পরিপূর্ণ। আপনার যদি এমন একটা স্টেডিয়ামের মাঠে হাঁটার যোগ্যতা না থাকে তাহলে বউ-বাচ্চার সঙ্গে গ্যালারিতে বসে থাকতে পারেন।’
আর বুফনের সতীর্থ কিয়েল্লিনি তো বলেছেন, রেফারিকে টাকা খাইয়ের নাকি সুবিধা নিয়েছেন স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ইতালিয়ান সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ডাকাতি। এটা নিশ্চিত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদ সব সময় সুবিধা পায়। গত বছর এখানে কি ঘটেছে তা মনে আছে বায়ার্ন মিউনিখের।’
কিন্তু রোনালদো বলছেন ভিন্ন কথা। তার মতে, ‘ভাসকেজকে ধাক্কা না দিলে সে গোলই করত।’ আসরে ১৫তম গোল করা রোনালদো স্বীকার করেন, ‘ম্যাচটা আমাদের জন্য কঠিন ছিল। এই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নেয়ার অনেক কিছুই আছে। শিক্ষা দেয়, সাফল্য পেতে শেষ অবধি লড়াই চালিয়ে যেতে হয়।’
রেফারির সিদ্ধান্তকে প্রশ্নের মুখে ফেললেও প্রতিপক্ষকে সম্মান জানাতে ভোলেননি বুফন, ‘দুই লেগ মিলিয়ে রিয়ালের পরের পর্বে যাওয়াটা প্রাপ্য। আমি তাদের সর্বোচ্চ ভালো কামনা করি। এই ক্লাবের মুখোমুখি হওয়া সব সময়ই সম্মানের। তবে বস্তুনিষ্ঠভাবে বললে, ম্যাচ অন্তত অতিরিক্ত সময়ে যাওয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল।’
বুফন আগেই বলেছেন, এটা হতে পারে তার ক্যারিয়ারের শেষ ইউরোপিয়ান ম্যাচ। তবে শেষটা এমন হবে নিশ্চয় তিনি চাননি। এজন্য মন পুড়ছে প্রতিপক্ষ কোচ জিদানেরও। মাদ্রিদ গুরুর মতে, ‘আমি মনে করি না এভাবে বেরিযে যাওয়াটা তার প্রাপ্য ছিল। কিন্তু ব্যাপারটা তো আর শোধরানো যাবে না।’ একই সঙ্গে ফরাসি কোচ কামনা করেন, ‘সে দুর্দান্ত খেলোয়াড় এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সম্ভবত এটি তার শেষ ম্যাচ নয়।’ বুফনের সঙ্গে জিদানের একটা মিলও আছে। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে মাতোরাজ্জিকে ঢুসো দিয়ে লাল কার্ড দেখে ক্যারিয়ার শেষ করেছিলেন ফরাসি তারকা। এজন্য তিনি বলেন, ‘ম্যাচের শেষে যা ঘটেছে তা খেলাটির প্রতি বুফনের অবদানকে কোনভাবেই কেড়ে নেবে না।’
বুফনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে একই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রোনালদোও। তাকে কিংবদন্তি আখ্যা দিয়ে পর্তুগিজ তারকা বলেন, ‘বুফনকে আমি শ্রদ্ধা করি। আশা করি, এটা যেন তার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ম্যাচ না হয়।’ এসময় বুফনকে জড়িয়ে ধরে রোনালদো এটাও প্রামান করেন, ফুটবল বিভক্তি নয়, দিন শেষে তা সম্প্রিতির খেলা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পেনাল্টি ছিল না’

১৩ এপ্রিল, ২০১৮
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ