মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আসিফা বানু, আট বছরের ছোট্ট শিশু। কাশ্মীরি এই ফুলকে তুলে নিয়ে গিয়ে মন্দিরে আটকে রাখা হয়। সেখানেই মাদক দিয়ে অজ্ঞান করে গণধর্ষণ করা হয়। এখানেই থেমে থাকেনি পাষণ্ডরা। পরে তাকে হত্যা করে।
আসিফা বানুকে নৃশংসভাবে হত্যার এ ঘটনায় জম্মু ও কাশ্মীর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। হিন্দু ও মুসলিম বিভেদ প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে খবর দিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
ভারতের দ্য হিন্দুস্থান টাইমস, এনডিটিভি ও ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, আসিফা বানুকে অপহরণের পর মাদক দিয়ে অজ্ঞান করে একটি মন্দিরে আটকে রেখে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।
খবরে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে এই নৃশংস হত্যার পরিকল্পনা করেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা সাঞ্জি রাম।
এ ঘটনায় দায়ের মামলায় সাঞ্জি রাম, তার আত্মীয় ও চার পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট আটজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়া হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের চার্জশিটে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা ওই এলাকা থেকে মুসলিমদের ভয় দেখিয়ে তাড়ানোর জন্য এই নৃশংস হত্যার পরিকল্পনা করে।
আসিফা বানু মুসলিম যাযাবর বাকারওয়াল গোষ্ঠীর মেয়ে। বাড়ির কাছের জঙ্গলে ঘোড়া চরাতে গেলে জম্মু অঞ্চলের কাঠুয়া জেলা থেকে তাকে গত ১০ জানুয়ারি অপহরণ করে অভিযুক্তরা।
দেশটির রাজস্ব বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা সাঞ্জি রাম কাঠুয়ার রাসানা গ্রাম থেকে বাকারওয়ালদের তাড়ানোর জন্য জঘন্য ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে। আর ভাগ্নেকেও এই কাজে তিনি প্রলুব্ধ করেন।
মামলার চার্জশিটে সাঞ্জি রাম, ছেলে বিশাল জাঙ্গোত্র, সাঞ্জি রামের ভাগ্নে ও তার বন্ধু, এক সাব-ইন্সপেক্টর, এক হেড কনস্টেবল এবং দু’জন বিশেষ পুলিশ অফিসারকে অভিযুক্ত করা হয়।
সাঞ্জি রামের ভাগ্নেকে প্রথমে নাবালক মনে করা হলেও ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা যায় তার বয়স ১৯ বছর।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাঞ্জি রামের ভাগ্নে মীরাটে থাকা বিশাল জাঙ্গোত্রকে ফোনে আসিফাকে অপহরণের কথা জানান এবং ‘কামনা চরিতার্থ করতে চাইলে’ তাকে কাঠুয়ায় আসতে বলেন।
এত আরও বলা হয়, পুলিশ ঘুষ নিয়ে অপরাধের আলামত নষ্ট করার জন্য বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছে।
আসিফাকে সাঞ্জি রামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মন্দির ‘দেবস্থান’- এ নিয়ে রাখা হয়েছিল। সেখানে তাকে সর্বক্ষণ মাদক দিয়ে অচেতন করে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হত।
১০ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত আসিফাকে মন্দিরে আটকে রাখার পর সাঞ্জি রামের ভাগ্নে তাকে গলা টিপে হত্যা করেন। এরপর পাথর দিয়ে আঘাত করে তাকে ক্ষত-বিক্ষত করে।
এরপর ১৭ জানুয়ারি দেবস্থানের কাছাকাছি এলাকা থেকে আসিফা বানুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
মামলার চার্জশিটে বলা হয়, তদন্তের সময় পাওয়া সব তথ্যের ভিত্তিতে সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, অভিযুক্ত আটজন অপহরণ, জোরপূর্বক আটকে রাখা, গণধর্ষণ, খুন ও আলামত নষ্টের মত বিভিন্ন অপরাধ করেছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, অভিযুক্ত আটজনকে গ্রেফতারের তাদের লোকজন জম্মুতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। এমনকি আইনজীবীরা পুলিশকে চার্জ দাখিলের জন্য কোর্টে ঢুকতেও বাধা দেয়। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) দুই মন্ত্রীও অভিযুক্তদের সমর্থনে মিছিল করেন।
বিবিসি আরও জানিয়েছে, আসিফাকে নৃশংসভাবে হত্যার খবর জম্মুতে বেশি প্রচার না পেলেও কাশ্মীর উপত্যকার রাজধানী শ্রীনগরের সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় স্থান পায়।
আসিফাকে বাকারওয়ালরা পাঁচ বছর আগে কেনা একটি জমিতে দাফন করতে চেয়েছিল। সেখানে তারা আগেও পাঁচটি লাশ দাফন করেছিল। কিন্তু, আসিফার লাশ দাফন করতে গেলে চরম ডানপন্থী দলের কর্মীরা বাধা দেয়।
পরে পায়ে হেঁটে সাত মাইল দূরের আরেকটি গ্রামে আসিফাকে দাফন করা হয়।
চার্জশিটে অপহরণ, গণধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা প্রকাশের পর কাশ্মীরের বিভিন্ন স্তরের মানুষ নিন্দা জানান। হত্যার বিচার চেয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছাড়াও টুইটারে হ্যাশট্যাগ খুলে প্রচার চালানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।