Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাবওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ

প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঢাকা শহরে সাবওয়ে নির্মাণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে সেতু কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে বলে দৈনিক ইনকিলাবের খবরে বলা হয়েছে। বিদ্যমান বাস্তবতায় নতুন সড়ক নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণ, অবকাঠামো অপসারণ ও পুননির্মাণ, পুনর্বাসনের মত কাজের উচ্চ ব্যয় এড়ানোর জন্য ঢাকা শহরে মাটির নীচ দিয়ে চারটি সড়ক (সাবওয়ে) নির্মাণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। দেরিতে হলেও সময়োচিত ও বাস্তবভিত্তিক নির্দেশনা দেয়ার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। এতদসংক্রান্ত প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ঢাকা শহরে যানজট নিরসনকল্পে সাবওয়ে নির্মাণের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে পত্র প্রদান করা হয়েছে। আরএসটিপির সাথে সামঞ্জস্য রেখেই ৪টি লেইনের পরিকল্পনা প্রণীত হয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, দিনদিন শহরে জনসংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সে অনুপাতে জমি বাড়ছে না। অন্যদিকে রাজধানীসহ দেশের সর্বত্রই পরিবহনের চাপ বেড়ে চলছে। এটাই স্বাভাবিক। এ বাস্তবতা অনুধাবন করেই উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে গড়ে উঠেছে পরিকল্পিত পরিবহন ব্যবস্থা। আমাদের জমি সীমিত। তার উপর প্রতি বছর ১ শতাংশ হারে জমি কমছে। এ অবস্থায় অবকাঠামো ও যাতায়াত ব্যবস্থায় সড়ক নির্মাণের ফলে জমির পরিমাণ আরও কমছে। সে বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা সময়োপযোগী। যেসব জায়গায় সড়ক রয়েছে তার উপর-নীচ ব্যবহার করা গেলে একদিকে জমি বাঁচবে, অন্যদিকে সংকটের সমাধানও হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ ব্যবস্থা রয়েছে। মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ নানা পরিবহন ব্যবস্থার নজির আমাদের অনেক প্রতিবেশি দেশেও রয়েছে। বাস্তবতার আলোকেই ২০২১ সালের মধ্যে প্রাথমিকভাবে আরএসটিপি-এর এমআরটি-১ এবং এমআরটি-২ অ্যালাইনমেন্ট বরাবর দুটি সাবওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ সাবওয়ে লাইন-১ টঙ্গী হতে শুরু করে এয়ারপোর্ট-কাকলি-মহাখালী-মগবাজার-পল্টন-শাপলাচত্বর হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত যাবে যা পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে। সাবওয়ে লাইন-২ এর দৈর্ঘ হবে ১৬ কিলোমিটার। এটি আমিন বাজার থেকে শুরু করে গাবতলী-শ্যামলী-আসাদগেট-নিউমার্কেট-টিএসসি-ইত্তেফাক হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত হবে যা পরবর্তীতে উভয়দিকে সম্প্রসারিত হবার কথা রয়েছে। তৃতীয় রুটটি যাবে গাবতলী থেকে সদরঘাট পর্যন্ত এবং চতুর্থটি যাবে রামপুরা থেকে সদরঘাট পর্যন্ত। যেভাবে রুটগুলো বিন্যস্ত করা হয়েছে তাতে বলা যায় যানজট লাঘবের কার্যকর চিন্তা থেকেই এটা করা হয়েছে। বর্তমানে যে অবস্থা তাতে নগরীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে অফিস করতে যেতে আসতেই দিনের অর্ধেক সময় ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। ফলে সময় বাঁচানো, জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘবে সম্ভাব্য সব ধরনের চেষ্টা করাই উত্তম।
যে কোন উন্নয়ন পরিকল্পনাই সুপরিকল্পিত, সমন্বিত ও সুদুরপ্রসারি হওয়া বাঞ্ছনীয়। একটি আধুনিক নগর পরিকল্পনায় রাজধানীর সাথে দেশের অন্যান্য অংশের সংযোগ সাধনে সুসমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা অনেক দিন থেকেই অনুভব করা হচ্ছে। দেশের সচেতন মহলও এর উপর বারবার গুরুত্ব দিয়ে আসছে। অনেক অগেই এসব পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন ছিল। দেরি হলেও এখন এ উদ্যোগ যতদ্রুত বাস্তবায়ন করা যায়, ততই মঙ্গল। সময়মত সীমিত অর্থের মধ্যে প্রকল্প যাতে সমাপ্ত করা যায় সেদিকেও নজর দেয়া অত্যন্ত জরুরি। ইতোমধ্যেই এ ধরনের অনেক প্রকল্প শুরু করা হয়েছে, সেগুলো যাতে সময়মত শেষ হয় সে দিকেও নজর দেয়া জরুরি।



 

Show all comments
  • nur ullah ৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:৩০ এএম says : 0
    এই গুলো না করে ঢাকা থেকে কিছু কাজ বাহিরে নিলেই ঢাকার যানজন কমে যাবে একই সাথে হাজার কুটি টাকার প্রকল্প নিতে হবে না এই টাকায় অন্য কাজে ব্যয় করতে পারবে........সমগ্র ঢাকাকে যদি ফ্লাইওভার করা হয় তাতেও যানজন কমবে না ।কোন এক সময় আপসোস হবে কেন এইগুলা করলাম
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাবওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ
আরও পড়ুন