Inqilab Logo

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

লেনদেন ভারসাম্যে বড় ঘাটতি

| প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : আমদানির চাপে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে বড় ধরনের ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যালেন্স অব পেমেন্টের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের আট মাসেই (জুলাই-ফেব্রæয়ারি) এই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৩১ কোটি ৮০ লাখ ডলারে। আট মাসের এই ঘাটতি গত অর্থবছরের একই সময়ের (আট মাস) চেয়ে সাত গুণ বেশি। আর পুরো অর্থবছরের (জুলাই-জুন) ঘাটতির চেয়ে সাড়ে চার গুণ বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে লেনদেন ভারসাম্যে এত বড় ঘাটতি আগে কখনো হয়নি। তবে সরকারের আর্থিক হিসাবে বড় উদ্বৃত্ত থাকায় এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার মত কিছু দেখছেন না গবেষণা সংস্থা সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। সাধারণভাবে কোনো দেশের নিয়মিত বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতি বোঝা যায় চলতি হিসাবের মাধ্যমে। আমদানি-রফতানিসহ অন্যান্য নিয়মিত আয়-ব্যয় এতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এখানে উদ্বৃত্ত হলে চলতি লেনদেনের জন্য দেশকে কোনো ঋণ করতে হয় না। আর ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে ঋণ নিতে হয়।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রæয়ারি সময়ে তিন হাজার ৫৮২ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। একই সময়ে পণ্য রফতানি থেকে আয় হয়েছে দুই হাজার ৪০৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
এ হিসাবে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরে যা ৬০৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার ছিল। পণ্য বাণিজ্যের পাশাপাশি সেবা বাণিজ্যেও ঘাটতি বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রæয়ারি সময়ে সেবা বাণিজ্যে মোট ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৯৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২১১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। সেবা খাতের বাণিজ্যে মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে। অর্থনীতির গবেষক মোস্তাফিজুর রহমান মনে করছেন, লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা অর্থবছরের বাকি সময়েও অব্যাহত থাকবে আমদানি বাড়তে থাকার কারণে। তবে আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত অর্থ থাকায় বড় কোনো ঝুঁকির আশঙ্কা নেই। আমদানি যেটা বাড়ছে সেটা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রোরেলসহ বড় প্রকল্পের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানির জন্য বাড়ছে। এ সব আমদানির বিল ফরেন এইড যেটা আসছে সেটা থেকেই পরিশোধ করা হচ্ছে। সে কারণে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট এবং ওভারওল পেমেন্টে (সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্য) ঘাটতি দেখা দিলেও ফাইনানশিয়াল অ্যাকাউন্টে (আর্থিক হিসাবে) উদ্বৃত্ত রয়েছে বলে জানান মোস্তাফিজ। চলতি হিসাব ভারসাম্যে ঘাটতি নিয়ে এখনই বিচলিত হওয়ার মত কিছু না দেখলেও আমদানির আড়ালে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে (পণ্যের বেশি মূল্য দেখিয়ে) টাকা পাচার হচ্ছে কিনা- সে বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে, যাতে কোনো অবস্থাতেই কোনো আমদানিকারক দাম বেশি দেখিয়ে পণ্য আমদানি করতে না পারে বা এক পণ্যের নামে অন্য পণ্য বা খালি কনটেইন্টার না আসে। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে রফতানি আয় এবং রেমিটেন্স প্রবাহ আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, এবার রেমিটেন্স ১৭ শতাংশের মতো বেড়েছে। অর্থবছর শেষেও হয়তো প্রবৃদ্ধি এমনই হবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, গত অর্থবছর প্রায় ১৫ শতাংশ রেমিটেন্স কম এসেছিল। ওটা যেন পূরণ হয় সেটা বিবেচনায় রাখতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লেনদেন

২৬ জানুয়ারি, ২০২৩
৩ অক্টোবর, ২০২২
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ