Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কোটা নিয়ে ভাবনা

মহিউদ্দিন খান মোহন | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশী তরুণ-তরুণীদের আন্দোলন আপাতত থেমেছে। কোটা নিয়ে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে। প্রথমদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল, সমাবেশ, মানববন্ধন করলেও গত ৮ এপ্রিল তারা শাহবাগে রাস্তা অবরোধ করে বসে। এতে রাজধানীতে সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট, সাধারণ মানুষ হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার। সারাদিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান চললেও রাতে শাহবাগ মোড় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর মুহুর্মুহু টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে, রাবার বুলেট ছোড়ে। গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা হল থেকে বেরিয়ে এসে আন্দোলনে শরীক হয়। এরই মধ্যে একদল যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের বাসভবনে আক্রমণ করে। পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আহত হয় বেশ কয়েকজন। পরদিন বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকাসহ সারাদেশে। রাজধানীতে বেসরকারি বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন সড়কগুলো অবরোধ করে বসে। ফলে গোটা রাজধানী অচল হয়ে পড়ে। একইভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা রাজপথ অবরোধ করায় এক ভয়ানক অবস্থার সৃষ্টি হয়।
এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা সরকারকে আল্টিমেটাম দেয় দাবি মেনে নেয়ার জন্য। এ সময় আন্দোলনকারীদের মধ্যে কিছুটা মতপার্থক্য দেখা দেয়। একদল দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়, অপর দল সরকারকে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়। এরই মধ্যে সরকারের মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে একটি গ্রæপের বৈঠক হয়। সরকারের পক্ষে মন্ত্রী দাবিগুলো নিয়ে পর্যালোচনার আশ্বাস দিলেও আন্দোলনকারীরা তা না মেনে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়। অবশেষে ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে ভাষণ দিতে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি চাকরিতে আর কোনো কোটাই থাকবে না। তা তুলে দেয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি এও ঘোষণা করেন, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী ও পশ্চাৎবর্তী গোষ্ঠীসমূহের জন্য ভিন্নভাবে চাকরির ব্যবস্থা করবে সরকার। এর জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠনের ঘোষণাও আসে সরকারের পক্ষ থেকে।
সংসদে প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বক্তব্য নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে মানুষের মধ্যে। কেননা, আন্দোলনকারীরা কোটা ব্যবস্থার সংস্কার চেয়েছিল, তা বাতিল বা বিলুপ্তি চায়নি। কেউ কেউ মনে করেন, এক ধরনের গোস্বা থেকে প্রধানমন্ত্রী ওই কথা বলেছেন। রাগ-গোস্বা মানুষের থাকতেই পারে। তবে, দেশের প্রধানমন্ত্রীর তা কতটুকু থাকা উচিত বা থাকলেও তার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো সঙ্গত কীনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কেননা, প্রধানমন্ত্রী দেশের অভিভাবক। তো দেশের যে কেউ তার কাছে কিছু চাইতে পারে। সে চাওয়া আইনানুগ হলে তিনি তা পূরণের নির্দেশ দেবেন, না হলে বলবেন কোন কারণে তা পূরণ সম্ভব নয়। কোটা সংস্কারের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিলোপ সাধনের ঘোষণা ‘মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলা’র সমতুল্য বলেও মনে করছেন অনেকে।
তবে, সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা যে চলমান আন্দোলনে পানি ঢেলে দিয়েছে সেটা অস্বীকার করা যাবে না। আন্দোলন যেভাবে সারা দেশে বিস্তার লাভ করতে শুরু করেছিল, আর দু’একদিন চললে তা ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারতো এবং তা সরকারের জন্য বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করতে পারতো। সেদিক থেকে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন বলা যায়। সমস্যার পরিপূর্ণ সমাধানের আগে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং ফুঁসে ওঠা আন্দোলনকে স্তিমিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী যে কৌশল অবলম্বন করেছেন সেটা যে শতভাগ কার্যকর হয়েছে তা নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ আছে বলে মনে হয় না। বলা বাহুল্য, তিনিও জানেন পুরো কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দিলে দেশবাসী তা মেনে নেবে না। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পদক্ষেপ কেউই সমর্থন করবে না, এমন কি আন্দোলকারীরাও না। ইতোমেধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খুব শিগগিরই কোটা বাতিলের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। আন্দোলনকারীরা প্রজ্ঞাপন জারি হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচী স্থগিত করেছে। তবে, প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। কারণ, তখন যদি কেউ একজন সরকারের ওই প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে আদালতে রিট আবেদন করেন, তাহলে আদালত প্রজ্ঞাপন কেন বাতিল করা হবে না, এ মর্মে সরকারকে শো কজ এবং রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিষয়টির ওপর স্থিতাবস্থা (স্ট্যাটাসকো) জারি করতে পারেন। সে রকম কিছু ঘটলে কোটা সং¯কার আন্দোলন ‘সকলই গরল ভেল’তে পরিণত হতে পারে।
যাক, সেটা সময়ে দেখা যাবে। আগাম বলা যাবে না। তবে, কোটা আন্দোলন চলার সময় সরকারের মন্ত্রী এবং শাসক দলের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের কর্মীদের কথাবার্তা ও আচরণ ছিল অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। এরমধ্যে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতদেরকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দেয়া দেশের সর্বস্তরের মানুষের তীব্র নিন্দা কুড়িয়েছে। মতিয়া চৌধুরীর মতো একজন প্রবীণ ও সিজনড্ পলিটিশিয়ান এমন কটুক্তি করতে পারেন, তা কারো ধারণায় ছিল না। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে বহু মুক্তিযোদ্ধার সন্তান-সন্তুতিও যে রয়েছে, মাননীয় মন্ত্রী বোধকরি তা ভুলে গিয়েছিলেন। সেদিন এক মুক্তিযোদ্ধা আফসোস করে এই নিবন্ধের লেখককে বলছিলেন, স্বাধীনতার সাতচল্লিশ বছর পরে আমি রাজাকার হয়ে গেলাম! তিনি জানালেন, তার সন্তানও কোটা সংস্কার আন্দোলনে সম্পৃক্ত। এখানে বিএনপি বেশ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরাসরি সমর্থন না দিয়ে। সে রকম কিছু করলে এ আন্দোলন দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিএনপির ষড়যন্ত্র- এমন প্রচার-প্রপাগান্ডা সরকারি দলের নেতা-মন্ত্রীরা শুরু করে দিতেন। তবে, আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র-ভাইস চেয়ারম্যন তারেক রহমানের সাথে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষক ড. মামুন আহমেদের টেলি কথোপকথন সরকারের মন্ত্রীদের বক্তৃতা-ভাষণের নয়া উপাদান হিসেবে যুক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যেই সড়ক ও সেতুমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোটা আন্দোলন নিয়ে তারেক রহমান লন্ডনে বসে যে ষড়যন্ত্র করেছিলেন, তা ব্যর্থ হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বা ইউটিউবে যারা ওই টেলি কথোপকথোন শুনেছেন, তারা নিশ্চয়ই এটা স্বীকার করবেন যে, তাতে আন্দোলন উস্কে দেয়া বা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার কোনো পরিকল্পনার কথা ছিল না। তারেক রহমান মামুন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানানোর কথাই বলেছিলেন। এটা দোষের কিছু হয়েছে বলে মনে হয় না। কারণ, তারেক রহমান দেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের অন্যতম শীর্ষনেতা। যদিও তিনি উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিদেশে অবস্থান করছেন, তবে, দেশে সংঘটিত যে কোনো ভালো-মন্দ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা বা দলের নেতা-কর্মীদের দিকনির্দেশনা দেয়ার এখতিয়ার তিনি রাখেন। তাই কোটা আন্দোলন নিয়ে তারেক রহমানের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে- সেতুমন্ত্রীর এ বক্তব্যকে সুবিবেচনাপ্রসূত বলা যায় না।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল ছাত্রী হলে। ৯ এপ্রিল রাতে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, আন্দোলনে অংশ নেয়ার অপরাধে(!) এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দিয়েছে ছাত্রলীগের ওই হল শাখার সভানেত্রী এশা। এ নিয়ে তুলকালাম কান্ড ঘটে যায়। বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা এশাকে লাঞ্ছিত করে এবং জুতার মালা পরিয়ে প্রতিশোধ গ্রহণ করে। ছাত্রলীগ নেত্রীর এ বর্বরোচিত কাজের ফলে দেশব্যাপী নিন্দা প্রতিবাদের ঝড় উঠলে ওই ছাত্রনেত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় ও সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। যদিও ইতোমধ্যে তার বহিষ্কারাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বলা হচ্ছে, ঘটনাটি ছিল এশার বিরুদ্ধে তারই সংগঠনের একটি গ্রুপের ষড়যন্ত্র। এশা ওই ছাত্রীর ওপর কোনো নির্যাতন করেনি, সে নিজেই কাঁচের দরজায় লাথি মেরে পা কেটে ফেলেছিল। ১৭ এপ্রিলের পত্রিকার খবরে জানা যায়, ওই ‘ষড়যন্ত্রে’ সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে একজন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাসহ কবি সুফিয়া কামাল হল শাখার ২৪ নেতাকর্মীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এখন দেখা যাক, প্রধানমন্ত্রীর এক ঘোষণায় বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার বিলুপ্তি ঘটতে পারে কীনা বা তা কতটুকু সম্ভব। আমাদের দেশের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন শেণির মানুষের জন্য বিশেষ কোটা ব্যবস্থা শুরু থেকেই চালু রয়েছে। সংবিধানও বিষয়টিকে অনুমোদন করে। সংবিধানের ১৯(১) অনুচ্ছেদে সব নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। ২৯(১) ধারায় বলা হয়েছে- প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে। ২৯(২) ধারায় বলা হয়েছে- কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে বা পদ-লাভে অযোগ্য হইবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না। ২৯(৩) ধারায় বলা হয়েছে- এই অনুচ্ছেদের কোনো কিছুই (ক) নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশ যাহাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে তাহাদের অনুকূলে বিশেষ বিধান প্রণয়ন করা হইতে- (খ) কোন ধর্মীয় বা উপ-সম্প্রদায়গত প্রতিষ্ঠানে উক্ত ধর্মবালম্বী বা উপ-সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নিয়োগ সংরক্ষণের বিধান-সংবলিত যে কোন আইন কার্যকর করা হইতে- (গ) যে শ্রেণীর কর্মের বিশেষ প্রকৃতির জন্য তাহা নারী বা পুরুষের পক্ষে অনুপযোগী বিবেচিত হয়, সেইরূপ যে কোন শ্রেণীর নিয়োগ বা পদ যথাক্রমে পুরুষ বা নারীর জন্য সংরক্ষণ করা হইতে রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।
সংবিধানের এসব ধারা উপ-ধারা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এতে সরকারি চাকরিপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সব নাগরিকের সমান সুযোগের যেমন নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে, তেমনি অনগ্রসর শ্রেণি বা জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিশেষ কোটা ব্যবস্থা প্রবর্তনের ক্ষমতাও রাষ্ট্রকে দেয়া হয়েছে। ফলে বর্তমানে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার বিলোপ ঘটাতে হলে একটি ঘোষণা বা প্রজ্ঞাপনই যথেষ্ট নয়। যেহেতু এ বিষয়ে সংবিধানে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, তাই এর বিলোপ সাধন করতে হলে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে।
একটি বিষয় অনেকেরই বোধগম্য হচ্ছে না, আন্দোলনকারীরা কোটা ব্যবস্থার সংস্কার চেয়েছিল, বাতিল নয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কেন হঠাৎ সরাসরি কোটা ব্যবস্থা বাতিল করার ঘোষণা দিলেন? জনমনে উত্থিত এ প্রশ্নের জবাব হয়তো প্রধানমন্ত্রীর কাছেই আছে। তবে, দেশের সচেতন নাগরিকরা মনে করেন, বাতিল নয়, সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থার যুগোপযোগী সংস্কার দরকার। পঁয়তাল্লিশ বছর আগে যারা অনগ্রসর ছিল এখন তারা কতটা অনগ্রসর তা বিবেকচনায় আনতে হবে। বিশেষ কারণে কোনো একটি বিষয়ে এক সময় বিশেষ সুবিধা দেয়া হলে তা চিরদিন একইভাবে বহাল রাখার পেছনে তেমন কোনো জোরালো যুক্তি আছে বলে মনে হয় না। ফলে কোটা নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে সরকারকে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোটা


আরও
আরও পড়ুন