Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিপদে বাংলাদেশের ক্রিকেটও! ক্ষতি করছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

একদিকে ৫ দিনের ‘ম্যাড়ম্যাড়ে’ টেস্ট, অন্যদিকে টি-২০’র রমরমা বানিজ্য- এই দুইয়ের টানাপোড়েনে দীর্ঘ দিন থেকেই বিমর্ষ বিশ্ব ক্রিকেটের আকাশ। একদিকে মেইনস্ট্রিম ক্রিকেটের সমালোচকরা কাঠখড় পুড়িয়ে যাচ্ছেন লঙগার ভার্সনকে বাঁচিয়ে তোলার অকুণ্ঠ লড়াইয়ে অন্যদিকে অর্থের ঝনঝনানিতে বিশ্বজোড়া চোখ ধাধাচ্ছে ধুমধাড়াক্কার ক্ষুদ্রতম সংস্করণটি। এই দুইয়ের চাপাচাপিতে চিড়েচ্যাপ্টা বর্তমানের ক্রিকেট, ক্রিকেটাররা। যা দিচ্ছে আগাম অশনি সংকেত! তেমনই এক শঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার্স অ্যাসসিয়েশন (ফিকা)। ক্রিকেটারদের অভিভাবক এই সংস্থাটির সদ্য প্রকাশিত এক রিপোর্টে দুঃখ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভবিষ্যতের জন্য বাজে সময় অপেক্ষা করছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে তরুন ক্রিকেটারদের মন।
ফিকার বর্তমান চেয়ারম্যান টনি আইরিশের বরাত দিয়ে ফিকার এই পরিসংখ্যানটি বলছে, যতই সময় গড়াচ্ছে ক্রিকেটের সবচেয়ে পুরনো ভার্সন টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা কমছে। সমান তালে বাড়ছে টি-টোয়েন্টির জনপ্রিয়তা। দেশের হয়ে কেন্দ্রীয় চুক্তির অধীনে ক্রিকেট খেলার চেয়ে স্বাধীনভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলে বেড়াতে চাইছে সিংহভাগ তরুণ ক্রিকেটার। ভারত এবং পাকিস্তান বাদে (এই দুটি দেশে ফিখার কোন কার্জক্রম নেই) বিশ্বজোড়া প্রায় ৩০০ ক্রিকেটারের মতামত নিয়ে বানানো এই অনুসন্ধান থেকে জানা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে প্রাপ্ত পারিশ্রমিকের স্বল্পতা তরুন ক্রিকেটারদের বিভিন্ন লিগে খেলে বেড়ানোর বড় কারন। একই সাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সময় সূচির অতিরিক্ত চাপ তরুন ক্রিকেটারদের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ক্যারিয়ার গড়তে উদ্বুদ্ধ করছে।
গত বছরের ১৬ জন থেকে নামিয়ে দু’দিন আগেই নতুন বছরের কেন্দ্রীয় চুক্তির ১০ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ফিকার দৃষ্টি এড়ায়নি এটিও। রিপোর্টে দেখা গেছে, বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় চুক্তি ও ঘরোয়া ক্রিকেটের চুক্তি আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় অনেক কম। অন্যান্য টেস্ট খেলুড়ে দেশের তুলনায় বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় চুক্তিভুক্ত ও ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা ক্রিকেটাররা বলতে গেলে কিছুই পায় না। অনেকটা দুই সহযোগী দেশ আফগানিস্থান ও আয়ারল্যান্ডের অবস্থা বাংলাদেশের মত। এছাড়া বাকী টেস্ট খেলুড়ে দেশের কেন্দ্রীয় চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক আন্তর্জাতিক মানের না হলেও কাছাকাছি। দেশে ক্রিকেটার্স অ্যাসসিয়েশনসের থাকার পরও বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা এত কম পারিশ্রমিক পাচ্ছে।
ঘরোয়া ক্রিকেটারদের চেয়ে ভালো আছেন দেশের তারকা ক্রিকেটাররা। ফিকার রিপোর্ট বলছে বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটাররা আন্তর্জাতিক মানের পারিশ্রমিক পাচ্ছে। কিন্তু সেটা গুটিকয়েক ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাই ফিকা বলছে, নিকট ভবিষ্যতে ক্রিকেটাররা কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে গিয়ে স্বাধীনভাবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে চাইবে। ডোয়াইন ব্রাভো, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, আদিল রাশিদ, অ্যালেক্স হেইলস, মিচেল ম্যাকক্লেনেগ্যানরা ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।
ফিকার নতুন সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, সামনে অনেক ক্রিকেটরই একই পথে অগ্রসর হবে। তাছাড়া ব্যস্ত সূচি ও ক্রিকেটারদের ওয়ার্ক লোড ৫৫ শতাংশের বেশি ক্রিকেটারকে ভাবাচ্ছে। এদের মধ্যে ৬৪ শতাংশ চাইছে একবছরের চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াতে। তবে দীর্ঘমেয়াদী কেন্দ্রীয় চুক্তিতে বিশ্বাসী প্রায় ৮৮ শতাংশ ক্রিকেটার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট

১০ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ