Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে শান্তি আসবে না -স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৮, ৩:১৫ পিএম

রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলেও তা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

জাতিসংঘে মঙ্গলবার ‘শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসেবে এ বক্তব্য দেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বিশাল এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এর সমাধান না হলে আমাদের অঞ্চল ও এর বাইরে এই রোহিঙ্গা সমস্যা শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তীব্র প্রভাব ফেলবে।”

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রদত্ত ভাষণের পাঁচ দফা সুপারিশের কথা এবং কফি আনান কমিশনের রিপোর্টের শর্তহীন পূর্ণ বাস্তবায়নের উপর জোর দেন আসাদুজ্জামান।

টেকসই শান্তি বিনির্মাণে বাংলাদেশ গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “স্থায়ী শান্তি বিনির্মাণে আমাদের সরকার দারিদ্র্য বিমোচন, মানব উন্নয়ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। যুদ্ধ ও সহিংসতার পরিবর্তে মানুষের মনে শান্তির সংস্কৃতি প্রোথিত করতে আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ অনুসৃত ‘কালচার অব পিস’ পদক্ষেপের পাশাপাশি আমরা টেকসই শান্তি এজেন্ডাকেও এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

সন্ত্রাস দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “প্রতিবেশী কোনো দেশের বিরুদ্ধে যাতে কেউ আমাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। মৌলবাদ ও সহিংস চরমপন্থা দমনে আমরা সবসময়ই স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নিবিড় অংশগ্রহণকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছি।”

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ বিশ্বস্ত অংশীদার বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বেসামরিক জনগণের সুরক্ষা প্রদানসহ সমস্যা সংকুল জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গত তিন দশক ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আমরা আমাদের সামর্থ্য ও পেশাদারিত্বের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে যাচ্ছি। সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ সবসময়ই উচ্চকন্ঠ।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিবিড় ও গতিশীল রাজনৈতিক প্রক্রিয়া অত্যাবশ্যক বলে অভিমত দেন। উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা খাতের অর্থবরাদ্দ না কমিয়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের জন্য বর্ধিত এবং সুনিশ্চিত অর্থায়ন নিশ্চিত করার উপরও জোর দেন তিনি।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিরোস্লাভ লাইচ্যাকের ডাকে উচ্চপর্যায়ের এই সভায় বেলজিয়ামের রাজা; কলম্বিয়া, আয়ারল্যান্ড, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট; এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী; জর্জিয়া ও ক্রোশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী, ৪০টিরও বেশি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, অন্যান্য দেশের মন্ত্রী, উপমন্ত্রীসহ ১৩১টি দেশ ও সংস্থার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

এছাড়া যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথ স্টেট বিষয়কমন্ত্রী লর্ড আহমাদ, নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়ে এরিখসেন সরিডি, এস্তোনিয়ার ডেপুটি ফরেন মিনিস্টার ভায়নো রেইনআর্ট, সশস্ত্র সংঘাতের সময় যৌন সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি প্রমীলা প্যাটেনের সাথে আলাদা বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও রোহিঙ্গা সঙ্কট ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

অন্যদের মধ্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ