Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘প্রধান বিচারপতির বদলে স্পিকার কীভাবে প্রেসিডেন্টকে শপথ করান’

ময়মনসিংহে জনসভায় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম

মো. শামসুল আলম খান, ময়মনসিংহ | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৮, ১০:০১ পিএম | আপডেট : ১০:০২ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০১৮

টানা দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়ে ইতিহাস গড়েছেন প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ। তবে প্রধান বিচারপতির স্থলে স্পিকার তাঁর শপথ বাক্য পাঠ করানোয় প্রশ্ন রেখেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। তিনি বলেছেন, ‘সারা জীবন দেখলাম দেশের প্রেসিডেন্টকে প্রধান বিচারপতি শপথ করান।
অথচ কাল দেখলাম স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাকে শপথ করিয়েছেন। তাহলে এতোদিন কেন প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতিকে শপথ করালো? ভারতেও প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতিকে শপথ করায়।’
বুধবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হল মাঠে জেলা ও মহানগর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলায় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী’র বরখাস্তের দাবি জানান বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীসভা থেকে তাকে বরখাস্ত না করলে আল্লাহ শেখ হাসিনাকেই বরখাস্ত করে দিবেন।’
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর কঠোর সমালোচনা করে বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেন, মতিয়া চৌধুরী যখন শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলেছিল তখনই তাকে গলাটিপে মারা দরকার ছিল। কিন্তু আমার বোন (প্রধানমন্ত্রী) তাকে এখনো বরখাস্ত করেনি।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, মতিয়া চৌধুরী জনপ্রিয় কোন নেত্রী নন। একবার তাকে ছেড়ে দিন। নকলা-নালিতাবাড়িতে নির্বাচন করুন। জামানত ফিরে পেলে আমি রাজনীতি করবো না, চুরি পড়বো। নৌকা ছাড়া যে কোন মার্কায় ইলেকশন করলে মতিয়া চৌধুরী জামানত হারাবেন। একজন রিকশা ওয়ালা’র সঙ্গেও তিনি ভোটে জিততে পারবেন না।
বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় তাকে গালি দিতে দিতে এই মতিয়া চৌধুরী কলিজা পর্যন্ত জ্বালিয়ে ফেলেছিল। আমি ভাবি, আমাদের নেত্রী যদি সত্যিই বঙ্গবন্ধুর কন্যা হন তাহলে কীভাবে এখনো মতিয়ার মতো মানুষকে কেবিনেটে রাখে। মতিয়া কেবিনেটে থাকায় প্রত্যেক দিন বঙ্গবন্ধুর আতœা ধিক্কার দিচ্ছে, গালি দিচ্ছে।
জাতির পিতাকে গালি দিলে জাতির কন্যার মন্ত্রীসভায় সদস্য হওয়া যায় এমনটি উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা বোকারা যাকে পিতার মতো মেনেছি এজন্য আমরা দূরে আছি, আর যারা গালাগালি করেছেন তারা আজকে শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভায় আছে। শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভায় মন্ত্রী হওয়ার চেয়ে আনন্দমোহন কলেজের পিয়ন, চাপরাশি হওয়া অনেক সম্মানের কাজ।’
প্রধানমন্ত্রী সুখে নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমার বোনের (প্রধানমন্ত্রী) ডানে-বামে যারা আছে তাঁর বিপদে একজনও থাকবে না। দারোগা পুলিশ বিপদের মধ্যে থাকে না।
ময়মনসিংহ বিভাগের বিষয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেন, সরকার ময়মনসিংহকে বিভাগ করেছে। কিন্তু এখানে কয়েকটি দালান কোঠা হবে আর কিছু হবে না। আব্দুল হামিদ হচ্ছেন জায়নামাজের প্রেসিডেন্ট। একজন পিয়নকেও বদলী করার ক্ষমতা নেই তাঁর। সৈয়দ আশরাফ কী করে আল্লাহই জানে।’
ময়মনসিংহ না থাকলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না বলেও মন্তব্য করেন কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় চার ভাগের তিনভাগ যুদ্ধ হয়েছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ। যে আশা ভরসা, চিন্তা-চেতনা নিয়ে বাংলাদেশের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছি সেই আশা-প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।’
পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্য হয় এমনটি উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেন, পুলিশ ঘুষ খাওয়া নিয়ে ধরা পড়লে আমি তার পক্ষে মামলা লড়বো। আমাদের টাঙ্গাইলের এক এসপি নদী ভরাট করে পার্ক বানিয়েছে। এই যে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা খরচ করে পার্ক বানানো হলো, এই টাকা কোথায় পেলো? নদী ভরাটের জন্য এ এসপি’র ফাঁসি হলে আর কোন সরকারি অফিসার মাতব্বরি করবে না।’
ময়মনসিংহ জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি প্রিন্সিপাল আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান খোকা বীর প্রতীক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক হাবিব উন নবী সোহেল, জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, ময়মনসিংহ মহানগর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি এ.কে.এম.উজ্জ্বল খান প্রমুখ। পরে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম নগরীর টাউন হল মাঠ থেকে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেন। মিছিলটি নগরীর নতুন বাজার এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।



 

Show all comments
  • Mohammed Kowaj Ali khan ২৫ এপ্রিল, ২০১৮, ১০:১৮ পিএম says : 0
    শফত করার পরে ও কয়জন শফত রক্ষা করিতে পারেন? কথায় বলেন ঈমান নাই ধরে আর কার নামাজ পড়ে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাদের সিদ্দিকী

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ