Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাবনায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশাবাদ

একধাপ চাঙ্গা হবে কৃষি অর্থনীতি

মুরশাদ সুবহানী, পাবনা থেকে | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০১৮, ৯:৫৯ পিএম

বৈশাখী হাওয়ায় দোলা দিচ্ছে বোরো ধানে। ধানের শ্যামল রঙ মনে আশা জাগিয়ে তুলেছে । কৃষি নির্ভর অর্থনীতি সবল হচ্ছে। কৃষি অর্থনীতিকে সবল করতে উত্তরের জেলা সমূহের সমতল ভূমি-মাটি। নানা কারণে কৃষি জমি কমলেও এখনও যেটুকু টিকে আছে, তা টিকিয়ে রাখতে হবে কৃষি অর্থনীতি তেজীভাব এবং খাদ্যে দেশকে স্বয়ং সম্পূর্ণ রাখার স্বার্থে । পাবনার সমতল ভূমি-মাটি সহ আশপাশের জেলা সমূহের কৃষি মাঠ ভরে উঠেছে বোর ধানের কচি পাতার সবুজ রঙে। কৃষকের মনে ভরসা জাগলেও ধান ওঠার পর এক শ্রেণীর অধিক মুনাফা লোভী ব্যবসায়ী একত্রিত হয়ে ধানের দাম আবার কমিয়ে দিতে পারে । ধানের দাম কমলেও চালের দাম কমতে নাও পারে। ধানের দাম কমে গেলে কৃষক আশানুরূপ লাভ পায় না । কৃষকের ভাষায় এক সময় ছিল ধানের দাম এক হাটে পড়ে গেলে অন্য হাটে কিছু বেশী দামে বিক্রয় করা সম্ভব ছিল। এখন মোবাইলের কারণে সব হাট মোকামে, ফরিয়াদের ধান কেনার দাম জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে কৃষক কোন হাটেই ধানের নায্য মূল্য পান না। খুব একটা লাভের মুখ দেখেন না। অন্যদিকে, চাল নিয়ে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা চালের মূল্য সেই হারে কমায় না। কৃষক আক্কাস মিয়া জানান, ভাই কি বলবো , বাম্পার ফলন হলে ধানের দাম সামান্য কমে যেতে পারে । কিন্তু মন প্রতি গড়ে ২ শত টাকা এবং কোন কোন সময় এর চেয়েও বেশী দরপতন হয়। কৃষক তেমন লাভবান হন না। কোন মতে কৃষি খরচ বাদে সামান্য লাভ ঘরে তুলতে পারে।তার মতে , ধানের দাম কমে গেলে চালের দামও কম হওয়ার কথা কিন্তু তা হয় না। পাবনা কৃষি আঞ্চলিক অফিসের সহকারী তথ্য অফিসার এটিএম ফজলুল করিম ইনকিলাবের এই প্রতিবেদকে জানান, পাবনা জেলায় এবার ৫৬ হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে বোর ধান আবাদ করা হয়েছে। বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। ধানের পাতা এবং শীষ আসার পর কীট-পতঙ্গ বোর ধানের কোন ক্ষতি করতে না পারে সে জন্য কীট নাশক প্রয়োগের বদলে ধানের মাঠে বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল পোঁতার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোন কোন স্থানে কৃষক পরামর্শ মাফিক এই কাজটি করছেন। বোর ধানের ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতিতে পোঁতা বাঁশের কঞ্চি ও গাছের ডাল পোঁতা হয় পাখি বসার জন্য । এই সব কঞ্চি ও ডালে বসা পাখি ধানের জন্য ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ খেয়ে ফেলে। অপর দিকে, বোরোর জমিতে নিয়মিত জৈবসারের বা সবুজ সারের প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বিভূতি ভূষণ জানান, বোরোর জমিতে সঠিক মাত্রায় রাসায়নিক সারের সাথে জৈবসার ব্যবহার করলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায়।
সব ধরণের ধানের ক্ষেতে নানা রোগ বালাই দেখা দেয় এবং দেখা দিতে পারে। বোর ধানের রোগ খুব সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। জমিতে সুষম সার প্রয়োগ, রোগাক্রান্ত ধানে চারার উপরিভাগে এবং শীষে ইউরিয়া সারের প্রয়োগ না করা। জমিতে স্বভাবিক পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা নেওয়া । বীজ শোধন করে নিলে রোগের আক্রমণ অনেক কম হয়। এছাড়াও আক্রান্ত ক্ষেতে রোগ দমনের জন্য ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম পরিমান কপার অক্সিক্লোরাইড মিশিয়ে প্রতি আড়াই শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। স্থানীয় জাতের তুলনায় উচ্চ ফলনশীল বা হাইব্রিড বীজে রোগ-বালাই বেশি হয়। তবে এ সব রোগ প্রতিরোধের জন্য সুষম সার ব্যবহারের পাশাপাশি জৈব সার ব্যবহার করে, জমিতে বছরে যে কোন সময় স্বল্পকালের জন্য ধৈনচা চাষ করে রোগ বালাই’র আক্রমণ প্রতিহত করা যায় । কৃষি বিভাগের পরামর্শ মাফিক রোগ-বালাই নাশ করতে ধানে রাসায়নিক কীট নাশক প্রয়োগ করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বোরো ধান

৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২০ এপ্রিল, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ