Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে সরকার খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে কষ্ট দিচ্ছে : রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সরকার খালেদা জিয়াকে পছন্দানুযায়ী হাসপাতাল ও ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে তিলে তিলে কষ্ট দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে আরও অবনতি হয়েছে। শনিবার দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা তাঁর সঙ্গে দেখা করার পর বেগম জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে এখনও তাঁর পছন্দানুযায়ী হাসপাতাল ও ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দ্বারা চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না সরকার। এর মাধ্যমে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে সরকার প্রতিহিংসা বাস্তবায়নে চুড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে এগুচ্ছে কী না তা নিয়ে জনমনে এখন নানা প্রশ্ন ও শঙ্কা তৈরী হয়েছে। গতকাল (রোববার) বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার ক্রমাগত অবনতির খবরে গোটা জাতি এখন চরম উদ্বিগ্ন। দেশনেত্রীকে নিয়ে সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভৎস মূর্তি মানবজাতিকেই শিহরিত করছে। তিনি অতি দ্রæত বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার জোর দাবি জানান।
তারেক রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথাব্যথার যেন শেষ নেই। তাঁকে নিয়ে তাদের অন্তহীন ষড়যন্ত্র বারবার ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নানা অপপ্রচারের জন্য সেল খোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর একজন উপ-প্রেস সচিবের ফেইসবুক আইডিতে নানা মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প বানিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। এই ধরণের অপপ্রচার নি¤œরুচির পরিচায়ক। যারা কুরুচিসম্পন্ন এবং যারা অপরাজনীতি ও অসভ্যতার চর্চা করে তারাই কেবল অসত্য ও নোংরা রাজনীতির আশ্রয় নেয়। আওয়ামী লীগ কুৎসা সঞ্চারিত মনের বিকারে ভোগে। তাদের ঐতিহ্যে সভ্যতা ও সুরুচির কখনোই কোন নিদর্শন ছিল না। সেজন্য তাদের কোন কথাই জনগণ বিশ^াস করে না।
দুই সিটিতে এখনো নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি হয়নি অভিযোগ করে রিজভী বলেন, গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে দুই সিটিতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন। এখন পর্যন্ত দুই সিটিতে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি ইসি। নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলেও দুই সিটিতে ক্ষমতাসীনদের বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি। সন্ত্রাসীরা এলাকায় এলাকায় দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে দুই সিটিতে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে কালো টাকার ছড়ানোর অভিযোগ করলেও এবং প্রতিনিয়ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ইসিতে জমা দিলেও নির্বাচন কমিশন অন্ধের ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন,
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিপীড়ণ নির্যাতন চলছে দুই সিটিতে। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে, ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হচ্ছে, এমনকি নেতাকর্মীদের বিনা কারণে গ্রেফতার করছে পুলিশ। গত দু’দিন আগে গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ এস এম সানাউল্লাহসহ ৪৫ জন নেতাকর্মী ২০ দলীয় জোট প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণাকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গাজীপুর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশী হয়রানী ও হুমকি ধামকি দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। যাতে নেতাকর্মীরা ভয়ে দলীয় অফিসে না আসে।
গাজীপুরের পুলিশ এখন ভয়ঙ্কর আতঙ্কের নাম মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এই আতঙ্কের মহানায়ক হচ্ছে এসপি হারুন। যার হাতে বিরোধী দলের এমপি থেকে শুরু করে তৃণমূলের কর্মী পর্যন্ত নিপীড়ণ নির্যাতন ও আর্থিক শোষণের শিকার হয়েছে বারবার। তার দাপটে গাজীপুরে সাধারণ নিরীহ মানুষরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বিরোধী দলের তরুণ কর্মীরা কেউ গাজীপুরে অবস্থান করতে পারে না। গাজীপুরের এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম এসপি হারুন। তার লাগামছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহারে গাজীপুরবাসীর স্বপ্নে-দু:স্বপ্নে দিনরাত্রী এক হয়ে গেছে। আমরা শুরু থেকে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্বিকার। তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে অবিলম্বে গাজীপুরের এসপি হারুনের প্রত্যাহার দাবি জানান। একইসঙ্গে দুই সিটিতে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরী এবং কালো টাকার ছড়াছড়ি বন্ধের উদ্যোগ নিতে ইসি’র প্রতি দাবি জানান। এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, তৈমুর আলম খন্দকার, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ