Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আকস্মিক বন্যার পদধ্বনি

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১০ এএম, ৬ মে, ২০১৮

আকস্মিক বন্যার পদধ্বনি দেখা দিয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বের হাওড় জনপদে। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিশেষ করে আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা প্রদেশে অসময়ে বৈশাখেই অতিবৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল (শনিবার)সহ আরও টানা ৪ দিন সেসব অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। অন্যদিকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তথা বৃহত্তর সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এ অবস্থায় এসব এলাকায় কয়েকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরমধ্যে সিলেট-ময়মনসিংহে গতকাল দুই নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। অপর এক নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে ‘সতর্কসীমায়’ প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে অকালে অতিবৃষ্টি, পানিবৃদ্ধি ও ভারতের উজানের পানি ভাটির দিকে নামা অব্যাহত থাকলে আগামী দুই সপ্তাহে আকস্মিক বন্যা কবলিত হতে পারে দেশের উত্তর-পূর্ব জনপদের বিভিন্ন এলাকা।
এরমধ্যে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় মৌলভীবাজার ও কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে (প্রধানত হাওড় অঞ্চল) স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যার মুখোমুখি হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় অবনতি ঘটতে পারে নেত্রকোনা ও হবিগঞ্জ জেলাসমূহের বিভিন্ন স্থানে বিরাজমান আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির। এদিকে গতকাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সুতং নদী সুতং রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে আরও বৃদ্ধি পেয়ে ৪৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল নতুন করে আরও পানিবৃদ্ধির ফলে নেত্রকোনার জারিয়াজঞ্জাইল পয়েন্টে কংস নদী ১১ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তাছাড়া কালনী নদী আজমিরিগঞ্জে বিপদসীমার ৩৯ সেমি নিচ দিয়ে সতর্কসীমায় প্রবাহিত হয়। এ অঞ্চলে আরও কয়েকটি নদীর পানি বৃদ্ধির দিকে রয়েছে।
বাংলাদেশ এবং ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য-উপাত্ত ও পূর্বাভাস সূত্রে জানা গেছে, উভয় দেশের আবহাওয়ার গাণিতিক মডেলে দেখা যায়, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলাসমূহের এবং এর সংলগ্ন উজানে ভারতের আসাম, মেঘালয় (বরাক), ত্রিপুরার অনেক স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলাসমূহের প্রধান নদীগুলোর পানির সমতল দ্রæত বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে এখনিই আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা নেই।
কিন্তু নেত্রকোনা ও হবিগঞ্জ জেলাসমূহের বিভিন্ন স্থানে বিরাজমান আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও অবনতি ঘটতে পারে। মৌলভীবাজার ও কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে তথা প্রধানত হাওড় অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মাঝারি বর্ষণ এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশসমূহে আবহাওয়ার একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এরফলে মে মাসেই বৃষ্টিপাতের আধিক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে এসব অঞ্চলে। যদিও বর্ষারোহী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন এখনও অনেক দেরি আছে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সর্বশেষ আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া এবং বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টির প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে। এর পরের ৫ দিনেতাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে কুমারখালীতে ৪৩ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় ২৪, চট্টগ্রামে ৩০, শ্রীমঙ্গলে ৩৬ মিলিমিটারসহ দেশের অনেক এলাকায় বৈশাখের অকাল বর্ষণ অব্যাহত থাকে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ