Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে মন্ত্রিপরিষদ কমিটি গঠনের প্রস্তাব ওআইসি’র

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০১৮, ১:০১ পিএম

রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে মন্ত্রিপরিষদ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছে ওআইসি। রবিবার (৬ মে) সকাল ৯টা থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ওআইসি’র সদস্যভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষ সেশনে এ প্রস্তাব করা হয়।

বিশেষ সেশনে গোয়েন্দা বিষয়ক গাম্বিয়ার প্রস্তাবিত একটি রেজ্যুলেশনের সংশোধন চেয়েছে বাংলাদেশ। রেজ্যুলেশনে বলা আছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের দায়বদ্ধতার জন্য ওআইসি’র অ্যাডহক মন্ত্রী পর্যায়ের একটি কমিটি কাজ করবে। বাংলাদেশের অপরাধের পরিবর্তে মানবাধিকার লঙ্ঘন শব্দটির প্রতিস্থাপিত করে সংশোধনী চেয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনি এই সংশোধনীর প্রস্তাব করেন।

মূল প্রস্তাবে বলা আছে, গত বছর ২৫ আগস্টের পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার দায়বদ্ধতার জন্য আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সমর্থন আদায় করা। এছাড়া মানবাধিকার পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে মিয়ানমারের ওপর রাজনৈতিক চাপ নিশ্চিত করা।

বিশেষ সেশনে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এবং সঞ্চালনার দায়িত্ব ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। অনুষ্ঠানে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষ দূত বব রে, জাতিসংঘের অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি জেনারেল রশিদ খালিকভ, ওআইসি’র ইন্ডিপেনডেন্ট হিউম্যান রাইটস কমিশনের সভাপতি, আরাকান ইউনিয়নের পক্ষে ড. ওয়াকার উদ্দিন বক্তব্য রাখেন। এরপর উন্মুক্ত আলোচনায় জিবুতি, ইরান, উগান্ডা, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ইরাক, মালয়েশিয়া, মিসর, তুরস্ক, কাজাকিস্তান ও সুদানের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত চুক্তি করেছি। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য আমরা তৈরি। তবে সমস্যা হচ্ছে ফেরত পাঠানোর জন্য তাদের যে বাড়িঘর তা এখনও তৈরি করা হয়নি।’

বব রে বলেন, ‘আমি যখন কক্সবাজার সফর করেছিলাম তখন রোহিঙ্গারা বিশেষভাবে অনুরোধ করেছিলেন যেন আমি বিশ্বকে বলি তারা মানুষ। কানাডা দায়বদ্ধতার নীতিতে বিশ্বাসী এবং আমরা জানি এটি জটিল একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু দায়বদ্ধতা থাকতে হবে।’

রশিদ খালিকভ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করছে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ। রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু এবং অনেকে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। জাতিসংঘের জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে ৯৫১ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।’

ওআইসি’র ইন্ডিপেনডেন্ট হিউম্যান রাইটস কমিশনের সভাপতি বলেন, ‘আমরা ২০১১ সালে থেকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইন্ডিপেনডেন্ট হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের আলোচনা করছি। আমাদের একটি সুপারিশ আছে, রোহিঙ্গা বিষয়ে একটি বিশেষ পাথ ফাইন্ডিং কমিশন গঠন করা।’

ওয়াকার উদ্দিন বলেন, ‘আমার জন্ম রাখাইনে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এ ধরনের অত্যাচার আমি জন্ম থেকে দেখে আসছি। জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার আহ্বান জানাই।’

জিবুতির প্রতিনিধি বলেন, ‘আমি ৪-৫ বছর আগে রাখাইনে গিয়েছিলাম। আমি তাদের দুঃখ-কষ্ট নিজ চোখে দেখে এসেছি।’

ইরানের প্রতিনিধি বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে টেকসই উপায়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর।

উগান্ডার প্রতিনিধি বলেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলতে চাই রোহিঙ্গাদের বেঁচে থাকার ও শান্তিপূর্ণ বসবাসের অধিকার আছে।’

ইন্দোনেশিয়ার প্রতিনিধি বলেন, ‘আমাদের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফর করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছেন।’

পাকিস্তানের প্রতিনিধি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বিষয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সম্পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছি।’

ইরাকের প্রতিনিধি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা মানুষ। মিয়ানমার সরকার প্রতি আহ্বান জানাই তাদের মানবাধিকারকে সম্মান করার।’

মালয়েশিয়া প্রতিনিধি বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের এ বিষয়ে বড় ভূমিকা আছে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওআইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ