Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী ব্যাংকের সব শেয়ার বিক্রি করলো ইবনে সিনা

| প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

 অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ইসলামী ব্যাংকের সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে ইবনে সিনা ট্রাস্ট। ফলে ব্যাংকটির সঙ্গে জামায়াতপন্থী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির আর কোনো সম্পর্ক রইল না। ইবনে সিনার কাছে ব্যাংকটির তিন কোটি ৬০ লাখ ৭৭ হাজার ৩৯১টি শেয়ার ছিল। 

গত ২৬ এপ্রিল পুঁজিবাজারে ইসলামী ব্যাংকের সব শেয়ার ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেয় ইবনে সিনা। সেদিন ৩০ কার্যদিবসে এই শেয়ার বিক্রির ঘোষণা এসেছিল। তবে ছয় কার্যদিবসেই বিক্রি হয়ে গেছে সব শেয়ার। ফলে ৫ মে থেকে ইসলামী ব্যাংকে ইবনে সিনা ট্রাস্টের মালিকানার ইতি ঘটেছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের বøক মার্কেটে এই শেয়ার কেনাবেচা চলেছে। বড় বিনিয়োগকারী এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাই বøক মার্কেটে লেনদেন করেন। ১৯৮৩ সালে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ১৩টি প্রতিষ্ঠানের ৭০ শতাংশ নিয়ে প্রতিষ্ঠা হয় ইসলামী ব্যাংক। বাকি অর্থের জোগান দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার এবং কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। তবে এটি সব সময় জামায়াত প্রভাবিত ব্যাংক হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে গত দুই বছর ধরে জামায়াতের প্রভাব কমতে থাকে ব্যাংকটিতে। জামায়াতপন্থী বড় কর্মকর্তারা সরে যেতে থাকেন। অবশেষে জামায়াতপন্থী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ইবনে সিনাও আর রইল না এর মালিকানায়।
এর আগে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্যোক্তা বাহরাইন ইসলামিক ব্যাংক তাদের হাতে থাকা পুরো শেয়ার বিক্রি করে চলে যায়। ২০১৫ সালে আরেক উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান দুবাই ইসলামিক ব্যাংকও সব শেয়ার বিক্রি করে দেয়।
২০১৬ সালে দেশীয় ইউনাইটেড গ্রæপের প্রতিষ্ঠান হজরত শাহজালাল (রহ.) ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি লিমিটেড ব্যাংকটির তিন কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৫টি শেয়ার কেনে। ওই বছরই ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) তাদের পক্ষে পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর ২১ জুলাই ব্যাংকটির পরিষদ সভায় গ্রæপটির পক্ষে পরিচালক প্রত্যাহার করা হলে তাদের সব শেয়ার কিনে নেয় গ্র্যান্ড বিজনেস নামের চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্প গ্রæপ এস আলম। মূলত এটাই ছিল ব্যাংকটির মালিকানা বদলের শুরু। ওই বছরই বিভিন্ন খাতের আরও আটজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, যারা ব্যাংকটি পরিচালনায় মূল ভূমিকা রাখতে শুরু করেন।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আরমাডা স্পিনিং মিলস নামের একটি প্রতিষ্ঠান ব্যাংকটির শেয়ার কেনে এবং সাবেক সচিব আরাস্তু খানকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। এরপর ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ব্যাংকটির পরিষদ ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসে। আরাস্তু খান নতুন চেয়ারম্যান হন।
তবে আরাস্তু খানও দেড় বছরের আগেই পদত্যাগ করেন গত ১৭ এপ্রিল। এরপর ব্যাংকের পরিষদ পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও ব্যাংকটির আরেক পরিচালক নাজমুল হাসানকে চেয়ারম্যান পদে স্থলাভিষিক্ত করে। আরমাডা স্পিনিং মিলসের প্রতিনিধি হিসেবে তাকে চেয়ারম্যান করা হয়। এর আগে আরাস্তু খান প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি ছিলেন।
আরাস্তু খান ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হওয়ার পরই ইসলামী ব্যাংকের আট কোটি ৬৯ লাখ শেয়ার বিক্রি করে দেয় উদ্যোক্তা পরিচালক আইডিবি। গত বছর মে মাসে প্রতিটি শেয়ার ৩১ টাকা ৫০ পয়সা দামে ২৭৪ কোটি টাকায় এসব শেয়ার কেনে বাংলাদেশের চার প্রতিষ্ঠান। আইডিবির ছেড়ে দেওয়া সিংহভাগ শেয়ার কিনেছে এক্সেল ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং।
এরপর গত বছর ২৪ সেপ্টেম্বর কুয়েতের সরকারি ব্যাংক কুয়েত ফাইন্যান্স হাউস চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকায় সব শেয়ার বিক্রি করে দেয়। প্রতিষ্ঠানটির কাছে ইসলামী ব্যাংকের সোয়া পাঁচ শতাংশ শেয়ার ছিল। তবে এখনো কুয়েত সরকারের আরেক প্রতিষ্ঠান দ্য পাবলিক ইনস্টিটিউট ফর সোশ্যাল সিকিউরিটির নামে ১০ কোটি ৪০ লাখ ৪৪ হাজার ৯৪১ শেয়ার রয়েছে, যা ব্যাংকটির মোট শেয়ারের প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ। ব্যাংকটিতে কুয়েতের তিন প্রতিষ্ঠানের ১৫ শতাংশ শেয়ার ছিল।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলামী ব্যাংক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ