Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতিসংঘের রাখাইন তদন্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ‘না’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৮, ৭:৫৫ পিএম

রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করার অনুমতি চেয়েছিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, বিষয়টি অভ্যন্তরীণ। মিয়ানামারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাং ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই কথা জানিয়েছেন। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানায়, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সফররত প্রতিনিধি দলের ওলোফ স্কুগ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে তিনি মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় নিরাপত্তা পরিষদের উদ্বেগের কথা জানান। জাতিসংঘ এসব ঘটনা তদন্ত করতে চায় জানিয়ে তিনি এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর মত জানতে চান। সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাং জাতিসংঘের কূটনীতিকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি জানান, বিষয়টি অভ্যন্তরীণ। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জড়ানোর জন্য বুথিয়াডং ও মংডু শহরসহ উত্তর রাখাইনে নিপীড়নের বিষয়টি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী দ্বারা অতিরঞ্জিত করা হয়েছে।মিয়ানমার সেনাপ্রধান জানান, সরকার ও সেনাবাহিনী ২০১২ ও ২০১৬ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করেছে এবং জড়িতদের শাস্তি দিয়েছে। মিন অং হ্লাং দাবি করেন, কয়েকটি সংস্থা মিয়ানমার আসে এবং তারা যা চায় তা করার চেষ্টা করে। দেশে এসবের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব রয়েছে। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, আমাদের দিক থেকে আমরা এরই মধ্যে যথেষ্ট তদন্ত করেছি। কিন্তু জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করতে দেয়ার সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনীর এখতিয়ার নয়। সরকারের শুধু এই ক্ষমতা রয়েছে।জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে চারদিনের সফর শেষে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এই অবস্থান জানালেন। প্রতিনিধি দলটি প্রথমে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে। গত বছর আগস্ট থেকে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতার মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সাত লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন।জাতিসংঘের তদন্তের অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে সংস্থাটির অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের কূটনীতিক কেলি কারি জানান, বাংলাদেশে সাত লাখ মানুষের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি মোটেই তা নয়। এমন পরিস্থিতির দাবি হচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পদক্ষেপ নেবে। কারণ এটা আন্তর্জাতিক বিষয়। প্রতিনিধি দলের আরেক সদস্য কাইরাত উমারভ জানান, অনেক রোহিঙ্গা তাদের কাছে ধর্ষণের ভয়াবহ ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন। মিয়ানমার তদন্তে সায় দিক চান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের জন্য এসব বিশ্বাস করাই কঠিন ছিল।মিয়ানমার সেনাপ্রধান বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন, দেশটি বৌদ্ধ প্রধান হওয়ার কারণে ধর্ষণের অভিযোগ অনেক মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। বিশেষ করে ধর্ষণে মিয়ানমারের সেনারা জড়িত। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে ১ হাজার ১১৬টি ধর্ষণের অভিযোগ ছিল। এর মধ্যে মাত্র ১৬টি ঘটনায় সেনারা জড়িত ছিল। সেনাবাহিনী তাদের সবাইকে শাস্তি দিয়েছে। এমনকি ২০১৭ সালে ১ হাজার ৪২২টি ধর্ষণের অভিযোগের মধ্যে সেনারা মাত্র ১৭টি ঘটনায় জড়িত ছিল। তাদেরকেও ২০ বছরের কারাদ-ের শাস্তি দেয়া হয়েছে। সেনাপ্রধান আরও দাবি করেন, রাখাইনের স্থানীয় জাতিগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সেনাবাহিনীর দায়িত্ব। সশস্ত্র ব্যক্তিরা যদি পুলিশ ও স্থানীয়দের উপর হামলা না চালাত তাহলে সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করত না। ২০১২-২০১৮ সাল পর্যন্ত বাঙালিদের হামলায় মোট ৭২ জন স্থানীয় মানুষ নিহত হয়েছেন। ইরাবতি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতিসংঘ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ