Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সুপ্রর প্রতিবেদন- বাজেট বাস্তবায়নের হার কমছে

| প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : প্রতিবছরই বাজেটের আকার বাড়ছে। একই সঙ্গে তা বাস্তবায়নের হারও কমছে। গত পাঁচ অর্থবছরের পরিসংখ্যানে প্রতিবছরই বাজেট বাস্তবায়নের হার কমেছে। এর মধ্যে গত অর্থবছরেই (২০১৬-১৭) সবচেয়ে কম বাজেট বাস্তবায়িত হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আসন্ন বাজেটকে সামনে রেখে ‘অন্তর্ভূক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের জন্য সর্বস্তরে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে’ এ দাবিতে বেসরকারি নাগরিক সংগঠনের জোট সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযানের (সুপ্র) প্রাক বাজেট সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির ভাইস চেয়ারপারসন মঞ্জু রাণী প্রমাণিক। এসময় উপস্থিত ছিলেন সুপ্র’র সাধারণ সম্পাদক এম এ কাদের, সদস্য পারভিন আলী, ফিরোজা বেগম ও প্রকল্প সমন্বয়কারী জনাব মো. আজমল হোসেন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাজেট বাস্তবায়নের ঘাটতির মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে ৯৩ শতাংশ বাজেট বাস্তবায়িত হয়েছিল। ক্রমান্বয়ে তা কমতে কমতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নেমেছে সাড়ে ৭৮ শতাংশে এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের এই চিত্র ৭১ শতাংশ যা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। বাজেট শতভাগ বাস্তবায়িত না হলে কাঙ্খিত সুফল পাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’র (এসডিজি) কাঙ্খিত লক্ষ্য পূরণও ব্যাহত হবে। তাই কেবল বাজেট বরাদ্দ দিলেই হবে না, নাগরিক প্রদত্ত করের অর্থে প্রণীত বাজেটের সুষ্ঠু ও গুণগত বাস্তবায়নও নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ অত্যাবশ্যকীয় সকল সেবাখাতসমূহে নাগরিকদের গুণগত সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। এই সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের মাধ্যমেই নিশ্চিত হবে কর ন্যায্যতা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধিতে মৃত্যু এমনকি অপরিণত বয়সে অধিকাংশ মৃত্যুরই অন্যতম কারণ তামাক এবং তামাকজাত দ্রব্য। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী- বাংলাদেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে শতকরা ৪৩.৩ ভাগ মানুষ ধোঁয়াযুক্ত বা ধোঁয়াবিহীন তামাক গ্রহণ করে। তামাক ব্যবহারের কারণে ২০১৬ সালে দেশে এক লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। পুরুষদের মধ্যে এই মৃত্যুহার ২৬ শতাংশ, নারীদের মধ্যে ১০ শতাংশ। বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারে প্রতিবছর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১৫ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। তামাকের ব্যবহার কমানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে কর বাড়িয়ে তামাক পণ্যের মূল্য বাড়ানো। এতে করে সহজলভ্যতা হ্রাস পাবে।
এম এ কাদের এসডিজি বাস্তবায়ন সম্পর্কে বলেন, আমাদের দেশীয় উৎস থেকে অর্থায়ন করতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া জোর দেওয়ার পাশাপাশি মনিটরিংএ গুরুত্ব দিতে হবে। এসডিজি’র লক্ষ্যসমূহ অর্জনে খাতভিত্তিক বিশেষ বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
সুপ্র মনে করে, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশ হলে নানা ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বাংলাদেশ। স্বল্প সুদের যেমন ঋণ পাওয়া যাবে না, তেমন এলডিসি হিসেবে প্রাপ্ত বাণিজ্য সুবিধাও কমে যাবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য এখনই একটি সমন্বিত পরিকল্পনা সরকারের হাতে নেওয়া উচিৎ। এক্ষেত্রে আগামী ছয় বছর বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাজেট বরাদ্দ ও কর ন্যায্যতা সমন্ধে বলেন যে, কেবল বাজেট বরাদ্দ দিলেই হবে না, নাগরিক প্রদত্ত করের অর্থে প্রণীত বাজেটের সুষ্ঠু ও গুণগত বাস্তবায়নও নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ অত্যাবশ্যকীয় সকল সেবাখাতসমূহে নাগরিকদের গুণগত সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। এই সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের মাধ্যমেই নিশ্চিত হবে কর ন্যায্যতা। সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে ১৯টি সুপারিশ দেয় ‘সুপ্র’।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ